ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাড়ে ৩ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ গত ২৬ মে ভারতের উপকূলে আঘাত হানে। এর প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় জলোচ্ছ্বাস ও ভারি বৃষ্টির সঙ্গে ঝড়োহাওয়া বয়ে যায়। এতে দেশের ১৮৭ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মোট ৩ কোটি ৫৯ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। এছাড়া জলোচ্ছ্বাসে পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বরিশাল ও খুলনা বিভাগের ছয়টি জেলার ১২৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলাগুলো হলো—ঝালকাঠি, ভোলা, পটুয়াখালী, খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগেরহাটে; ৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। পটুয়াখালীতে ২৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগ চরাঞ্চলের। প্রাথমিক হিসাবে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় ২ কোটি ৯৭ লাখ ৩২ হাজার টাকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

পটুয়াখালীর ২৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে

মাউশির পরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক শাহেদুল খবির বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে যেখানে যে ধরনের ক্ষতি হয়েছে সেসব তথ্য মাঠ থেকে পাওয়া গেছে। আমরা সেগুলো যাচাই-বাছাই করছি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ও অর্থ নিরূপণ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এরপর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন দেয়া হলে তা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের মাধ্যমে সংস্কারকাজ করা হয়।

তিনি বলেন, প্রতি বছর বিশেষ দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য আমাদের একটি নির্ধারিত আর্থিক ফান্ড রয়েছে। সেখানে সংস্কারকাজের জন্য পর্যান্ত অর্থও রয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন দিলে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংস্কারকাজ শুরু করা হয়।

ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংস্কার কাজ জুলাই মাসে শুরু হবে

এদিকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের (ডিপিই) কর্মকর্তারা বলছেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কবলে চট্টগ্রাম, বরিশাল ও খুলনা বিভাগে মোট ৬২টি বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এসব তথ্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরে পাঠিয়েছেন থানা, উপজেলা ও জেলার মাঠ কর্মকর্তারা।

তারা আরও বলেন, ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ অনুযায়ী প্রায় ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। তার মধ্যে খুলনা বিভাগে বেশি সংখ্যক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ বিভাগে ৪০টির বেশি বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাকিগুলো চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এগুলোর মধ্যে কোনোটির মেঝে ভেঙে যাওয়া, দেয়ালে ফাটল ধরা, ওয়াশরুম ও টিউবওয়েল নষ্ট হয়ে যাওয়া ও চেয়ার-টেবিল আসবাবপত্র নষ্ট হওয়াসহ বিভিন্ন ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

ইয়াসের প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় জলোচ্ছ্বাস সৃষ্টি হয়

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিপিইর পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের উপ-পরিচালক নুরুল আমিন হক বলেন, আমরা ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ৬২টি বিদ্যালয়ের তালিকা পেয়েছি। বর্তমানে সেগুলোর যাচাই-বাছাই কার্যক্রম চলছে। বাংলাদেশে ইয়াসের প্রভাব তেমন না হওয়ায় কোথাও বড় ধরনের ক্ষতি হয়নি।

তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত সরকারি বিদ্যালয়গুলোর সংস্কারের জন্য আমাদের তহবিলে পর্যাপ্ত অর্থ রয়েছে। চূড়ান্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর আগামী অর্থবছর, অর্থাৎ জুলাইয়ের শুরুতে অর্থছাড় দেয়া হবে। এরপর সংস্কারকাজ শুরু করা যাবে বলে জানান নুরুল আমিন।

অনলাইন ডেস্ক,১৫ জুন ২০২১

Share