গাজীপুর করেসপন্ডেন্ট :
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বেলতৈল গ্রামের এক কিশোরীকে ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে রাতভর পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছে দু’যুবক।
অভিযুক্ত যুবকেরা শ্রীপুর উপজেলার একই গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে মোজাম্মেল হক (২৮) ও আব্দুল হামিদের ছেলে আলম (৩৫) ও পাশের বারতোপা গ্রামের সবুজ। এ ঘটনার পর তারা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। ওই ছাত্রীকে গুরুতর অবস্থায় ধর্ষকের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। ছাত্রীসহ তার পরিবারকে ওই বখাটেরা থানায় যেতেও বাধা দেয়। মামলা করলে ওই স্কুলছাত্রীকে ফের তুলে নিয়ে হত্যা করা হবে বলে প্রকাশ্য হুমকি দেয় সন্ত্রাসীরা।
শনিবার রাতে শ্রীপুর উপজেলার বেলতলী গ্রামে ওই গণধর্ষণের ঘটনা ঘটলেও তা সোমবার প্রকাশ পায়। অভিযুক্তরা এলাকায় মাদকসেবী ও সন্ত্রাসী বলে জানা গেছে।
গণধর্ষিত ওই গ্রামের দিনমজুরের মেয়েও পার্শ্ববর্তী কালিয়াকৈর উপজেলার আক্কেল আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী।
ঘটনা জেনে গত রোববার রাতে স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ কয়েকজন সচেতন তরুণ নির্যাতিত স্কুলছাত্রীসহ পরিবারটিকে থানায় পৌঁছে দেন।
শ্রীপুর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) ধর্ষকদের পক্ষ নিয়ে মামলা করতে নিষেধ করেন। ওই সময় ওসি (তদন্ত) নির্যাতিত মেয়েটিকে ভয়-ভীতিও দেখান বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে স্থানীয় সাংবাদিকরা ঘটনা জেনে ফেলায় রাতেই তড়িঘড়ি মামলা নেন পুলিশ। তবে মামলায় ধর্ষক একজনকে ধর্ষকের সহযোগী হিসেবে উল্লেখ করে পুলিশ তাদের রক্ষার চেষ্টা করছেন বলে নির্যাতিত স্কুলছাত্রীর বাবা অভিযোগ করেছেন।
গণধর্ষণের ঘটনায় সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত একজনকেও গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ।
নির্যাতিতার বাবা ইছব আলী সাংবাদিকদের জানান, শনিবার ইফতারের পর অভিযুক্ত মোজাম্মেল হক ও আলম আমার মেয়েকে কথা আছে বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। বাড়ির পাশেই গভীর বনের ভেতর নিয়ে আমার মেয়েকে ট্যাবলেট খাইয়ে অচেতন করে। অভিযুক্তরা সারারাত আমার মেয়ের ওপর পাশবিক নির্যাতন করে। এদিকে রাতেই বিভিন্ন স্থানে মেয়েকে খোঁজাখুঁজি করে ব্যর্থ হই। রোববার সকালে এলাকাবাসীর মাধ্যমে অসুস্থ্ অবস্থায় আমার মেয়েকে অভিযুক্ত মোজাম্মেলের বাড়ি থেকে উদ্ধার করি।
নির্যাতিত মেয়েটির স্বজনরা জানায়, গত শনিবার রাত নয়টার দিকে রাতের খাবার খেয়ে ওই স্কুলছাত্রী ঘুমিয়ে পড়ে। পাশের কক্ষে ঘুমান তার মা। ওই সময় তার বাবা বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে সড়কের পাশে দোকানে চা পান করতে যান। রাত সাড়ে দশটার দিকে তার বাবা বাড়ি ফিরে মেয়ের শোবার ঘরের দরজা খোলা দেখতে পান।
নির্যাতিত মেয়ের দিনমজুর বাবা আরো জানান, ঘরে ঢুকে তিনি বিছানায় মেয়েকে না পেয়ে বাড়ির আঙিনায় খোঁজ করেন। মেয়েকে না পেয়ে তিনি চিৎকার করলে তাঁর স্ত্রীসহ স্বজনরা ছুটে আসেন। তারা রাতভর ব্যাপক খোঁজাখুঁজির পরও মেয়ের কোন হদিস পাননি।
মেয়ের বাবা আরো জানান, ব্যাপক খোঁজাখুঁজির পর পরদিন সকাল সাতটার দিকে টের পেয়ে তারা প্রতিবেশী ধর্ষক মোজাম্মেল হকের বাড়ি থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় তার মেয়েকে উদ্ধার করেন।
নির্যাতিত মেয়েটি জানায়, ঘুমন্ত অবস্থায় তার গলায় ধারালো অস্ত্র ধরে শোবার ঘর থেকে তাকে তুলে নিয়ে যায় মোজাম্মেল হক ও আলম। বাড়ি থেকে ২’শ গজ বেলতলি এলাকার জনৈক খালেকের প্রজেক্টের পশ্চিম পাশের গহিন বনের ভেতর নিয়ে তার হাত-পা ও মুখ বেঁধে তারা তাকে রাতভর ধর্ষণ করে। ধর্ষণের এক পর্যায়ে সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। জ্ঞান ফেরার পর নিজেকে প্রতিবেশী মোজাম্মেলের ঘরে দেখতে পায় সে।
আপডেট : বাংলাদেশ সময় : ১২:৫০ পূর্বাহ্ন, ২৯ আষাঢ় ১৪২২ বঙ্গাব্দ, মঙ্গলবার ১৪ জুলাই ২০১৫ খ্রিস্টাব্দ
চাঁদপুর টাইমস : প্রতিনিধি/এমআরআর/২০১৫
চাঁদপুর টাইমস ডট কম–এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি