মতলবে স্ত্রীকে হত্যার পর নিজে আত্মহত্যার চেষ্টা, ঘাতক স্বামী আটক

চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় স্ত্রী লাকি আক্তারকে (৩০) গলায় ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে তার স্বামী গোলাম মোস্তফা (৫০)। ওই ছুরি দিয়ে নিজের পেটে আঘাত করে স্ত্রীর নিথর দেহের উপর পড়ে থাকে স্বামী গোলাম মোস্তফা। সোমবার ( ১৩ জানুয়ারি) সকাল আনুমানিক ৮ টায় নারায়ণপুর পৌরসভার সারপাড় গ্রামের ঠাকুর বাড়ীতে এ ঘটনাটি ঘটে।

নিহত লাকি আক্তার ওই গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের মেয়ে এবং স্বামী গোলাম মোস্তফা কুমিল্লার তিতাস থানার জগৎপুর গ্রামের চরু মিয়ার ছেলে। লাকি আক্তারের ৬ বছর বয়সের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। তার নাম জুনায়েদ।

খবর পেয়ে মতলব দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সালেহ আহমেদ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে রক্ত মাখা ছুরি এবং ঘাতক মোস্তফাকে আটক করেছে।

আহত মোস্তফার সাথে কথা বলে জানা যায়, সে চট্টগ্রামে ট্রাকের ড্রাইভারের চাকরি করে। সোমবার সকালে এসেছে তার সন্তানকে নেয়ার জন্যে।

লাকী বেগমের মামা সারপাড় গ্রামের মৃত আলী আর্শ্বাদের ছেলে টুকু প্রধান জানান, লাকী বেগম গার্মেন্টের কাজের জন্যে প্রায় ৮ বছর আগে চট্টগ্রাম চলে যায়। সেখানে মোস্তফার সাথে পরিচয়ের সূত্র ধরে পরিবারের অগোচরে তাদের বিয়ে হয়। কয়েক বছর পর তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এরপর লাকী বেগমের গৌরীপুরে আবার বিয়ে হয়। কয়েক মাস আগে সেই বিয়ে ভেঙ্গে গেলে প্রায় এক মাস পূর্বে সারপাড় গ্রামের মামুন প্রধানের বাড়িতে ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করে। অভাব অনটনের কারণে ঠিক মতো ভাগ্নির খোঁজ খবর নিতে পারেন না বলেও তিনি জানান।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী লাকী বেগমের ছেলে জুনায়েদ (৬) বলেন, মোস্তফা তার মাকে ছুরি দিয়ে মুখে ও গলায় আঘাত করে হত্যা করেছে।

আরেক প্রত্যক্ষদর্শী লাকী বেগমের ফুফাতো বোন প্রতিবেশী জেসমিন আক্তার বলেন, সকাল ৮ টার সময় লাকী বেগম চিৎকার দিয়ে ঘর থেকে বের হলে আমি আওয়াজ শুনে আমার ঘর থেকে বের হয়ে দেখি, তার গলা ও মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। তখন ডাকচিৎকার দিলে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। এই অবস্থায় মোস্তফা ঘর থেকে ছুরি হাতে বের হয়ে লাকী বেগমের ওপর এসে বেহুঁশ হবার ভান ধরে পড়ে যায়।

এদিকে লাকী বেগমের ফুফাতো বোন জেসমিন আক্তার আরও বলেন, জুনায়েদ নামে ছেলেটি মোস্তফার ঔরসজাত সন্তান নয়। ৬ বছরের জুনায়েদের সাথে কথা বলে অনেকটা এমনই মনে হয়েছে।

এদিকে এলাকাবাসী জানান, আজ ভোরে ফজরের নামাজের সময় ঘাতক মোস্তফাকে সারপাড় গ্রামে দেখা গেছে। এর আগে তাকে কখনো পরিবারের সদস্য বা এলাকার কেউ দেখেনি বলে জানান। ফলে মোস্তফা সুস্থ হলে ঘটনার প্রকৃত রহস্য জানা যাবে। ঘাতকের ফাঁসি দাবি করেন পরিবার ও এলাকাবাসী।

মতলব দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) মো. সালেহ আহমেদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাকি আক্তারের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় । এদিকে ঘাতক মোস্তফাকে আহত অবস্থায় আটক করে চিকিৎসার জন্যে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এ ব্যাপারে মামলার পক্রিয়া চলছে।

প্রতিবেদক: মাহ্ফুজ মল্লিক, ১৩ জানুয়ারি ২০২৪

Share