১০ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে গ্রাম আদালত সম্পর্কে ব্যাপক সতেচনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে স্থানীয় সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে সভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর জেলা প্রশাসক প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক ও স্থানীয় বিভাগীয় উপ-পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান সভায স্বাগত বক্তব্য দেন ও পরিচালনা করেন।
এ গ্রাম আদালত সর্ম্পকে ব্যাপক জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে স্থানীয় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সমূহের অংশগ্রহণে সমন্বিত পরিকল্পনা প্রণয়ন সভার প্রধান অতিথি অঞ্জনা খান মজলি বলেন,‘ গ্রামীণ জনগণের দোরগড়ায় বিচারিক সেবা পৌঁছে দিতে এবং উচ্চ আদালতের মামলার জট কমাতে কাজ করছে গ্রাম আদালত। আইনজীবি নিয়োগের বিধান না থাকায়, সহজে, কম সময়ে ও সমঝোতার ভিত্তিতে এখতিয়ারভুক্ত ছোটো-খাটো মামলাগুলো নিষ্পত্তি হওয়ার স্থানীয় পর্যায়ে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে গ্রাম আদালত গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখছে।’
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর সদরের উপজেলা নির্বাহী অফিসার সানজিদা শাহনাজ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবিদা সিফাত,ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ মনজুর হোসেনসহ চাঁদপুরের ২৫ জন সরকারি-বেসরকারি বিভাগের ঊধর্তন কর্মকর্তাগণ মতামত পেশ করেন।
এছাড়াও ডিজিটাল কনটেইনের মাধ্যমে গ্রাম আদালতের নানা দিকসহ অগ্রগতি উপস্থাপনা করেন এএইচএম আকরাম হোসেন ।
চাঁদপুরে ২০১৭ সাল থেকে ২০২১ জানুয়ারি পর্যন্ত ২৪ ইউনিয়নে নিস্পত্তি মামলার সংখ্যার ৯,৪৫৫ টি,সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয় ৬,৭৫৯টি , চলমান মামলার সংখ্যা ১১৩টি, ৫ কোটি ২১ লাখ ৫১ হাজার টাকা এবং ভিডিও ক্লিপের মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ আদায় করা হয়েছে বলে জানানো হয় ।
প্রসঙ্গত,চাঁদপুর জেলা প্রশাসন নারী-পুরুষ,দরিদ্র, প্রতিবন্ধী ওপ্রান্তিক জনগোষ্ঠীসবার জন্য কম সময়ে,কম খরচে গ্রাম আদালতের সেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে চাঁদপুর জেলার‘গ্রাম আদালত সর্ম্পকে ব্যাপক জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে স্থানীয়সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সমূহের অংশগ্রহণে সমন্বিত পরিকল্পনা প্রণয়ন সভা’জেলাপ্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে আয়োজন করে। বাংলাদেশ সরকার,ইউরোপীয়ান ইউনিয়নএবং ইউএনডিপি এর আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত বাংলাদেশে গ্রামআদালত সক্রিয়করণ (২য়পর্যায়) প্রকল্প এর সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত এসভায় স্থানীয় সরকারী, বেসরকার প্রতিষ্ঠ্নের ও বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার ১৫ জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণকারী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
তিনি উপস্থিত সরকারী প্রতিষ্ঠান প্রতিনিধিবৃন্দকে বিভিন্ন সভা,দিবস উদযাপন,কৃষকমাঠস্কুল,টিকাদান কর্মসূচ ইত্যাতি কার্যক্রম পরিচালনার সময়ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠান প্রতিনিধিবৃন্দকে (এনজিও) তাদের শিক্ষা,স্বাস্থ্য,ক্ষুদ্র লোন,আইনি সহায়তা ইত্যাদি কার্যক্রম পরিচালনার সময় গ্রাম আদালতের এখতিয়ার,বিভিন্ন সেবা, সুযোগসুবিধা, আবেদনের প্রক্রিয়া,আপীল,মিথ্যা মামলার শাস্তি ইত্যাদি বিষয়ের সাধারণর গ্রামীণ জনগণকে সচেতন করে তোলার আহŸান জানান।
আজকের এ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে প্রত্যেক প্রতিষ্ঠান তাদের নিজেদের কাজের মধ্যে গ্রাম আদালতের প্রচারণার কাজ কিভাবে করবেন তার একটি সমন্বিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করার জন্য আহবান জানান।
পাশাপাশি গ্রাম আদালতে বিচার্য বিষয়গুলো নিয়ে যাতে গ্রামীণ জনগণ থানা বা জেলা আদালতে না আসে এবং থানাবা জেলা আদালত যাতে সংশ্লিষ্ট মামলাগুলো গ্রাম আদালতে প্রেরণ করে এজন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে এবং সংবাদ, ফিচার, সম্পাদকীয় ইত্যাদি প্রকাশের মাধ্যমে গণমাধ্যমপ্রতিনিধিবৃন্দকে আহŸানজানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে জেলা ম্যাজিট্রেট, চাঁদপুর বলেন, গ্রাম আদালত মাত্র ১০-২০ টাকায় ৯০ দিনের মধ্যে স্থানীয় ছোটো খাটো বিরোধ মীমাংসা করতে পারে। এ বিষয়ে ব্যাপক জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে উপস্থিত সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠান প্রতিনিধিবৃন্দ বলিষ্ঠ ভ‚মিকা পালন করবে।
তিনি সভায়উপস্থিত সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান প্রতিনিধিবৃন্দ বিভিন্নই উনিয়নে গ্রামআদালতের কার্যক্রম পরিদর্শন করার আহŸান জানান। চেয়ারম্যানবৃন্দের জবাবদিহিতা আরো বৃদ্ধি পাবে। তিনি এ বিচারিক সুবিধার কথা চাঁদপুর জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের দরিদ্র ও সুবিধা বঞ্চিত গ্রামীণ জনগণবিশেষত নারীদের মাঝে পৌঁঁছে দেবার জন্য সরকারি ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠান প্রতিনিধিবৃন্দ ও গণমাধ্যমের কর্মীদেরআহŸান জানান।
অনুষ্ঠানে গ্রাম আদালত পরিচালনার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন, মতলব দক্ষিণ উপজেলার খাদের গাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন, ডিস্ট্রিক্ট ফ্যাসিলিটেটর এ,এইচ,এম,আকরাম হোসেনবাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (২য় পর্যায়) প্রকল্প,অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায়‘গ্রাম আদালত সর্ম্পকে ব্যাপক জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে স্থানীয় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সমূহের অংশগ্রহণে সমন্বিত পরিকল্পনা প্রণয়ন সভায় উপস্থাপনা করেন।
আবদুল গনি, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২১