গ্রন্থাগারিক তানিয়ার খুটির জোর অধ্যক্ষ নেপাল!

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজের গ্রন্থাগারিক তানিয়া খাতুনের অনিয়মের বিরুদ্ধে অদ্যাবধি কোন শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেননি অধ্যক্ষ নেপাল চন্দ্র দেবনাথ। ১ অক্টোবর মঙ্গলবারও তানিয়া খাতুন কলেজে অনুপস্থিত ছিলেন। এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে অধ্যক্ষ নেপাল চন্দ্র দেবনাথ কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

জানা গেছে, কলেজের গ্রন্থাগারিক তানিয়া খাতুন ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সদ্য পদচ্যুত পৌর মেয়র আবুল খায়ের পাটওয়ারীর স্ত্রী। তিনি আওয়ামীলীগ সরকারের সময়ে ৭/৮ বছর কলেজে না এসেও বেতন ভাতা নিয়েছেন নিয়মিত। কলেজ অধ্যক্ষগণ (সাবেক ও বর্তমান অধ্যক্ষ) তার বাড়িতে হাজিরা খাতা পাঠিয়ে একসাথে একাধিক মাসের বকেয়া স্বাক্ষর সংগ্রহ করে আনতেন। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পরও দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে বেরিয়ে আসতে পারেননি অধ্যক্ষ নেপাল চন্দ্র দেবনাথ। সরকার পতনের পর গ্রন্থাগারিক তানিয়া খাতুন যথারীতি কলেজে অনুপস্থিত থাকলেও পূর্বের ন্যায় হাজিরা খাতা বাড়িতে পাঠিয়ে আগস্ট মাসের বকেয়া স্বাক্ষর আদায় এবং বিল করে দেন অধ্যক্ষ।

সাংবাদিকরা এ বিষয় জানতে চাইলে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন অধ্যক্ষ। কিন্তু তানিয়ার অনিয়ম ঢাকতে চাকুরী বিধিমালা নিয়ে মিথ্যাচার করে তিনি বলেন, তানিয়া পিআরএলে আছে। তিনি কলেজে আসুক কিংবা না আসুক, হাজিরায় স্বাক্ষর করুক কিংবা না করুক তাতে কোন সমস্যা নেই। একজন এমপিও ভুক্ত শিক্ষকের পিআরএল কিভাবে হয়? এ প্রশ্নের সঠিক জবাব তিনি দেননি। গত ২২ সেপ্টেম্বর তানিয়া খাতুনের অনিয়মের বিষয়ে বিভন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে ২৩ সেপ্টেম্বর কলেজে আসেন তিনি। তারপর থেকে পুনরায় কলেজে অনুপস্থিত তানিয়া খাতুন।

১ অক্টোবর মঙ্গলবারও কলেজে অনুপস্থিত ছিলেন তিনি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোন মন্তব্য করবেন না বলে জানান অধ্যক্ষ নেপাল চন্দ্র দেবনাথ। তানিয়ার বিরুদ্ধে বিধি অনুসারে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা? প্রশ্নের বিপরীতে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব না বলে সাফ জানিয়ে দেন তিনি। বাড়িতে হাজিরা খাতা পাঠিয়ে স্বাক্ষর সংগ্রহ, বেতন বিলে স্বাক্ষরসহ অনিয়মে সহযোগিতার দায় এড়াতে পারেন কিনা? তানিয়া খাতুনের পিআরএল নিয়ে মিথ্যাচার করে সাংবাদিকদের বিভ্রান্ত করার কারন কি? এ সকল প্রশ্নের জবাবেও তিনি কোন মন্তব্য করেননি।

এ বিষয়ে জানতে জানতে চাইলে মাউশি কুমিল্লা কার্যালয়ের আঞ্চলিক পরিচালক অধ্যাপক সোমেশ কর চৌধুরী বলেন, বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে কেবলই জানতে পারলাম। আপনারা যাবতীয় তথ্য উপাত্ত দিয়ে সহযোগিতা করলে অবশ্যই তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রতিবেদক: শিমুল হাছান, ৩ অক্টোবর ২০২৪

Share