গ্রামে পাওনা টাকা আদায় করার নামে এক মহিলাকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করা হয়েছে। নির্যাতনের দৃশ্য দেখতে শত শত পুরুষ-মহিলা ভিড় জমালেও কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি।
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতিতা সেলিনার বড় ভাই আসান আলী শুক্রবার সকাল ১০টায় দামুড়হুদা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
এতে নির্যাতনকারী সোনাহার খাতুন ও তার স্বামী শহিদুল ইসলামের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৪/৫ জনকে আসামি করা হয়।
পুলিশ এর পর বেলা ১১টার দিকে সোনাহার খাতুনকে গ্রেফতার করে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে নিজ বাড়ি থেকে ধরে এনে সেলিনা বেগম নামের ঐ মহিলাকে নারিকেল গাছের সাথে রশি দিয়ে বেঁধে রেখে অমানুসিকভাবে নির্যাতন করেছে পাওনাদার রাবেয়া বেগম ও তার লোকজন।
জানা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা কলোনিপাড়ার নঈম উদ্দীনের স্ত্রী রাবেয়া বেগম (৬০) একই পাড়ার আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী দুই সন্তানের জননী সেলিনা বেগম (২৮) এর নিকট ৯০ হাজার টাকা সুদে ঋণ দেয়। ৫-৬ বছর হয়ে গেলেও টাকা ফেরৎ দিতে না পারায় গ্রাম্য সালিশ ডাকেন রাবেয়া বেগম। সালিশে সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৬৫ হাজার টাকায় রফা হয়।
নির্যাতিতা সেলিনা বেগম বলেন, ‘৬৫ হাজার টাকার মধ্য থেকে ৪০ হাজার টাকা এনজিওর মাধ্যমে লোন নিয়ে তাকে পরিশোধ করেছি। যার কিস্তি চালিয়েছি এবং নগদ ২৫ হাজার টাকা দিয়েছি। এখন আবার নতুন করে ২৫ হাজার টাকা দাবি করছে। এ টাকা দিতে না পারায় গতকাল সকাল ৯টার দিকে বাড়ি থেকে জোর পুর্বক রাবেয়া বেগম ও তার মেয়ে সোনাহার খাতুন ধরে এনে নিজ বাড়ির উঠানে নারিকেল গাছের সঙ্গে মোটা রশি দিয়ে বেঁধে রেখে নির্যাতন চালায়।
এ সময় সেলিনার দুই সন্তান মায়ের সামনে কান্নাকাটি করতে থাকে। অমানুসিক এ নির্যাতনে দেখতে শত শত পুরুষ ও মহিলারা উপস্থিত হলেও বেপরোয়া রাবেয়া বেগম ও তার লোকজনেরর ভয়ে কেউ তাকে রক্ষা করতে সাহস পায়নি।
দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু জিহাদ জানান, এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। এক আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিরা পলাতক রয়েছে। তাদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের প্রত্যেককে ধরে আইনের আওতায় আনা হবে বলেও জানান ওসি।