চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার গৃদকালিন্দিয়া হাজেরা হাসমত ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ মোহেবউল্লা খানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম , দূর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
প্রতিকার চেয়ে এবার শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনিকে লিখিত আবেদন দিয়েছেন একই কলেজের প্রভাষক মফিজুল ইসলাম ভুঁইয়া। শিক্ষামন্ত্রী এ আবেদন পেয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিতে শিক্ষা অধিদপ্তরকে নির্দেশনা দিয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার সর্তে ওই কলেজের কয়জন শিক্ষার্থী, শিক্ষক সহ এলাকার লোকজন জানিয়েছে , কলেজটিতে বলতে গেলে অধ্যক্ষ মোহেবউল্লার একনায়কতন্ত্র শাসন চলছে। হয়রানী হওয়ার ভয়ে প্রকাশ্যে কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খুৃলতে সাহস পায় না।
জানা গেছে, অধ্যক্ষ মোহেবউল্লা খাঁনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় শিক্ষা মন্ত্রননালয় ও শিক্ষাবোর্ডে প্রতিকারে চেয়ে ইতিপূর্বে একাধিক অভিযোগ দিয়েছেন একই কলেজের প্রভাষক মফিজুল ইসলাম ভুঁইয়া। গুরুতর অভিযোগের মধ্যে রয়েছে অধ্যক্ষ মোহেবউল্লা খাঁন তার অবৈধ ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে বিভিন্ন সময় নানা অজুহাতে প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অবৈধ ভাবে টাকা আত্বসাৎ করে নিচ্ছে। বিভিন্ন তদন্তে উক্ত অভিযোগের সতত্যর প্রমান পেলেও ক্ষমতার দাপটে কেউই ওই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে পারেনি বলে নিশ্চিত হওয়া গেছ্ ে। ওই অধ্যক্ষের বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতির বিরুদ্ধে ভয়ে কেউই প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, সাবেক এমপি ডঃ মোহাম্মদ শামছুল হক ভুইয়ার মা বাবার নামে প্রতিষ্ঠিত হাজেরা হাসমত ডিগ্রী কলেজে বর্তমানে প্রায় দুই সহস্রাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। সরকার কোচিং বন্ধ করার ঘোষণা করলেও অধ্যক্ষ অতিরিক্ত ক্লাশ ফি আদায়ের নামে প্রতি বছরই এইচ এস সি পরীক্ষাথীর কাছ থেকে প্রতিমাসের জন্য ১ হাজার ৫০ টাকা আদায় করে নিচ্ছেন। এ ছাড়াও প্রতি শিক্ষার্থীর কাছে থেকে মাসিক বেতন নেয়ার পাশাপশি আবার টিউশন ফি ও নিচ্ছেন ৩শ টাকা করে। কোন শিক্ষার্থী একদিন ক্লাশে অনুপস্থিত থাকলেই তাকে ওই একদিনের জন্য জরিমানা দিতে হয় তিন শ’ টাকা। শুধু তাই নয় শিক্ষাথীদের নামে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাষ্ট কর্তৃক পাওয়া উপবৃত্তির টাকা আত্বসাতের অভিযোগের তদন্তে তা প্রমানিত হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে । এতো অনিয়ম ও দুর্নীতি করা সত্বেয়ও গৃদকালিন্দিয়া হাজেরা হাসমত ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মহিবউল্লা খানের বিরুদ্ধে কেউ প্রকাশ্যে কথা বলার সাহস পায় না।
ওই অধ্যক্ষের অনিয়ম ও দূনীর্তির বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকায় ইতিপূর্বে এই কলেজেরই দুই শিক্ষককে ইতিপূর্বে সাসপেন্ড করা হয়েছে। সাসপেন্ড হওয়া শিক্ষকরা হচ্ছেন অভিযোগকারী মফিজুল ইসলাম ভুঁইয়া ও শীব প্রসাত।
অভিযোগকারী উক্ত কলেজের শিক্ষক মফিজউল্লা ভুইয়া বলেন, ওই অধ্যক্ষের সীমাহীন দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অনেক তথ্য প্রমান থাকলেও ক্ষমতার দাপটে তার বিরুদ্ধে কেউই ব্যবস্থা নিচ্ছে না। নিরুপায় হয়ে আমি শিক্ষামন্ত্রীর সাথে সরাসরি সাক্ষাত করেই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শিক্ষামন্ত্রীর হাতে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এ অভিযোগের তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিতে শিক্ষামন্ত্রণালয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন।
এ নিয়ে উক্ত কলেজের অধ্যক্ষ মোহেবউল্লা খাঁন বলেন, ২০১৪ সালে এই কলেজে আমি প্রেষণে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদানের পর কলেজের শিক্ষার্থীদের শিক্ষার উন্নয়নের স্বার্থে আমাকে অনেক কষ্ট করতে হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে আমি কঠোর সিদ্ধান্ত নিলেই আমি খারাপ বলে কেউ কেউ প্রচার করে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যক্ষ আরো বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ বা মামলা যাই হউক সব কিছুই আইনগত ভাবে মোকাবেলা করা হচ্ছে ও হবে।
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ৫ মার্চ ২০২০