গুচ্ছ ভর্তি: বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কমেছে আবেদনের হার

২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছভুক্ত দেশের ২২টি সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বিভাগ পছন্দক্রম ও ভর্তি আবেদনের সময় ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে গত শিক্ষাবর্ষের চেয়ে এবার ২১ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ভর্তি আবেদনের হার কমেছে।

গুচ্ছ ভর্তি টেকনিক্যাল কমিটির দেয়া তথ্য মতে, গুচ্ছভুক্ত ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে মোট ৩ লাখ ৫ হাজার ৫৮৬ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: এবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৭৬৫টি আসনের বিপরীতে মোট ভর্তি আবেদন জমা পড়েছে ২৯ হাজার ৯৮৯টি। এর আগে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের আবেদন সংখ্যা ছিল ৪৩ হাজার ৫১১টি। এ বছর প্রতি আসনের বিপরীতে আবেদন জমা পড়েছে প্রায় ১১টি, যা গতবারের চেয়ে ৩১ শতাংশ কম।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে এবার আবেদন পড়েছে ২৭ হাজার ৩৪৩টি। গত শিক্ষাবর্ষে ছিল ৪২ হাজার ৪২৯টি। আবেদন কমেছে ৩৫ শতাংশ। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়: খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন সংখ্যা ১৯ হাজার ৬৯০টি। গত শিক্ষাবর্ষে ছিল ৫৩ হাজার ৪৯টি, আবেদন কমেছে ৬৩ শতাংশ। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়: এদিকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন সংখ্যা ২২ হাজার ৭৪টি। গত শিক্ষাবর্ষে ছিল ৩২ হাজার। আবেদন কমেছে ৩১ শতাংশ।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়: এখানে আবেদন করেছেন ১৮ হাজার ৩৯১ জন। গত শিক্ষাবর্ষে ছিল ২৩ হাজার ২৮৪ জন। আবেদন কমেছে ২১ শতাংশ। রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়: চলতি শিক্ষাবর্ষে আবেদন সংখ্যা ১৭ হাজার ৯৬৩টি। গত শিক্ষাবর্ষে ছিল ২৮ হাজার ২৩০টি। আবেদন কমেছে ৩৬ শতাংশ। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়: আবেদন সংখ্যা ১৯ হাজার ২৯৬টি। গত শিক্ষাবর্ষে ছিল ৩২ হাজার ৩১৩টি। আবেদন কমেছে ৪০ শতাংশ।

হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়: আবেদন সংখ্যা ১৫ হাজার ৮৫৪টি। গত শিক্ষাবর্ষে ছিল ২৩ হাজার ২৮৪টি। আবেদন কমেছে ৩২ শতাংশ। মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়: আবেদন ১৪ হাজার ৫৩৭টি। গত শিক্ষাবর্ষে ছিল ২৩ হাজার ৭১৩টি। আবেদন কমেছে ৩৯ শতাংশ।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়: আবেদন সংখ্যা ১৯ হাজার ৯৫টি। গত শিক্ষাবর্ষে ছিল ২৯ হাজার ৩১৬টি। আবেদন কমেছে ৩৫ শতাংশ। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়: আবেদন সংখ্যা ১৩ হাজার ৫৫৩টি। গত শিক্ষাবর্ষে ছিল ১৯ হাজার। আবেদন কমেছে ২৯ শতাংশ।

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়: আবেদন সংখ্যা ১৫ হাজার ৫০৮টি। গত শিক্ষাবর্ষে ছিল ২৩ হাজার ৪১১টি। আবেদন কমেছে ৩৪ শতাংশ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়: আবেদন সংখ্যা ২১ হাজার ১২৩টি। গত শিক্ষাবর্ষে ছিল ২৮ হাজার ৪৬টি। আবেদন কমেছে ২৫ শতাংশ।

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়: আবেদন সংখ্যা ২০ হাজার ৮০টি, গত শিক্ষাবর্ষে ছিল ৬৮ হাজার ১৪২টি। আবেদন কমেছে ৭০ শতাংশ। নতুন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আবেদনের হার বেশি: বিগত ১০ বছরে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবেদন পড়েছে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২২৫টি আসনের বিপরীতে মোট আবেদন করেছেন ৬৪৭১ ভর্তি-ইচ্ছুক। গড়ে প্রতি আসনের বিপরীতে আবেদন করেছেন ২৯ জন।

এবার আসনপ্রতি সবচেয়ে বেশি আবেদন পড়েছে নেত্রকোনার শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১২০ সিটের বিপরীতে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন পড়েছে ৪৭০৬টি। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫০ সিটের বিপরীতে আবেদন করেছেন ৫৬৭১ জন। রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪০ সিটের বিপরীতে আবেদন করেছেন ৮৫৫ জন। চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯০ সিটের বিপরীতে আবেদন করেছেন ১৮১১ জন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০ সিটের বিপরীতে আবেদন করেছেন ১২৪২ জন।

গুচ্ছের আবেদনের হার কমে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে গুচ্ছ ভর্তি টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক এবং চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাছিম আখতার দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘এটা কোনো সমস্যা নয় বলেই আমি মনে করি। গুচ্ছের পাস নম্বর রাখা হয়েছে ৩০। সে জন্য গত দুই শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থীরা অনেকেই আবেদন করত। কিন্তু তারা এখন বুঝতে পেরেছে কত নম্বরে কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে তারা ভর্তির সুযোগ পেতে পারে। সেখান থেকে তারা সচেতন হয়েই এবার কম আবেদন করেছে।’

১১ জুলাই ২০২৩
এজি

Share