নতুন করে দায়ের করা ‘গায়েবি’ মামলাগুলো প্রত্যাহারে ব্যবস্থা নিতে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের কাছে চিঠি দিয়েছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত চিঠিটি আইজিপিকে হস্তান্তর করেন।
ওই চিঠির সঙ্গে ১৬৯টি গায়েবি মামলার তালিকা দেওয়া হয়। গত ২২ আগস্ট থেকে ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত এসব মামলায় এজাহারভুক্ত আসামির সংখ্যা ৬ হাজার ৭২৩ জন, অজ্ঞাত আসামির সংখ্যা ১৫ হাজার ৫০ জন এবং ইতোমধ্যে এসব মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৫৫৯ জনকে।
গায়েবি মামলার চিত্র তুলে ধরে চিঠিতে আইজিপির প্রতি বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় পুলিশের সাংবিধানিক দায়িত্ব সম্পর্কে আপনি অবগত আছেন। সংবিধানের ৩১ অনুচ্ছেদে বলা আছে- আইনের আশ্রয়লাভ এবং আইনানুযায়ী ও কেবল আইনানুযায়ী ব্যবহারলাভ যে কোনো স্থানে অবস্থানরত প্রত্যেক নাগরিকের এবং সাময়িকভাবে বাংলাদেশে অবস্থানরত অপরাপর ব্যক্তির অবিচ্ছেদ্য অধিকার। বিশেষত আইনানুযায়ী ব্যতীত এমন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে না যাতে কোনো ব্যক্তির জীবন, স্বাধীনতা, দেহ, সুনাম বা সম্পত্তির হানি ঘটে।
চিঠিতে মির্জা ফখরুল বলেন, সম্প্রতি পুলিশ কর্তৃক গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবি মিথ্যা মামলা দায়ের এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। গত কয়েকদিন ধরে পুলিশ কর্তৃক বিএনপিসহ বিরোধী মতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পুনরায় নতুন করে গায়েবি ও কাল্পনিক মামলা দেওয়া নিয়ে কয়েকটি জাতীয় পত্রিকায় বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এসব মামলার সব আসামি বিএনপির নেতাকর্মী। একই ঘটনায় দুই থানায় মামলা হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। বাদী নিজেও জানেন না আসামির সংখ্যা কত। সাক্ষীরাও বিস্ফোরণের শব্দ শোনেনি এবং ঘটনাস্থলের বাসিন্দারাও কিছু জানেন না। মামলার বাদী পুলিশ, কিংবা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অধিকাংশ মামলার অভিযোগ হুবহুব এক।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, পুরো পুলিশ বাহিনীর প্রিন্সিপ্যাল অফিসার হিসেবে আমরা প্রত্যাশা করি, আপনি অবিলম্বে সব গায়েবি, মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দায়ের বন্ধে বিশেষ নির্দেশনা দেবেন। একইসঙ্গে এসব মামলা দায়েরের কারণে তদন্ত করে দোষী কর্মকর্তা ও সদস্যদের বিরেুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবেন।
বার্তা কক্ষ, ১ ডিসেম্বর ২০২২