ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি হামলায় অন্তত ৪৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার এ ঘটনা ঘটেছে। নিহতদের অধিকাংশই উত্তরাঞ্চলের। সেখানে একটি হাসপাতালে ইসরাইলি হামলায় চিকিৎসা সরবরাহে আগুন লেগেছে। ব্যাহত হয়েছে অপারেশন। গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের বরাতে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছেন।
ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের ওপর বেইত লাহিয়ার কামাল আদওয়ান হাসপাতালকে সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করার অভিযোগ করেছে ইসরাইলের সামরিক বাহিনী। তারা বলছে, সেখানে ‘ডজন ডজন সন্ত্রাসী’ লুকিয়ে আছে।
তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা ও হামাস।
ক্যাম্পের আল-আওদা হাসপাতালের চিকিৎসকরা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সেন্ট্রাল গাজার নুসিরাত ক্যাম্পের দুটি বাড়িতে ইসরাইলি বিমান হামলায় অন্তত ১৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন প্যারামেডিক ও দুইজন স্থানীয় সাংবাদিক।
জানুয়ারিতে ইসরাইল উত্তর গাজার যে স্থানে হামাসের কমান্ড কাঠামো ভেঙে দেওয়ার দাবি করেছিল, সে স্থানটি এখন সামরিক বাহিনীর আক্রমণের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু। চলতি মাসের শুরুতে তারা জাবালিয়া, বেইত হানুন ও বিত লাহিয়াতে ট্যাংক পাঠিয়ে যোদ্ধাদের নির্মূল করার নিদের্শ দিয়েছিল। সেসব স্থানে সশস্ত্র যোদ্ধারা আবারও সংগঠিত হয়েছে বলে দাবি করেছিল তারা।
কামাল আদওয়ানের নার্সিং পরিচালক ইদ সাব্বাহ বেইত লাহিয়া থেকে রয়টার্সকে বলেছেন, হাসপাতালের তৃতীয় তলায় ইসরাইলি হামলার পর কিছু কর্মী সামান্য দগ্ধ হয়েছেন।
গত সপ্তাহে ইসরাইলি বাহিনী আক্রমণ করে সংক্ষিপ্তভাবে দখল করে নেওয়া হাসপাতালে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। ইসরাইল বলেছে, তারা সেই অভিযানে প্রায় শতাধিক সন্দেহভাজন হামাস যোদ্ধাকে আটক করেছে।
হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ‘ইসরাইলি দখলদারিত্বের বর্বরতা থেকে হাসপাতাল ও চিকিৎসা কর্মীদের রক্ষার জন্য’ সব আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে আহ্বান জানিয়েছে।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনী বলেছে, তাদের বাহিনী হাসপাতাল এলাকায় সন্ত্রাসীদের উপস্থিতি ও আশেপাশে সন্ত্রাসী অবকাঠামো সম্পর্কে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে কাজ করছে।
বৃহস্পতিবারের হামলার পরে এক বিবৃতিতে সেনাবাহিনী বলেছে, অভিযান চলাকালীন কয়েক ডজন সন্ত্রাসীকে হাসপাতালে লুকানো অব্স্থায় পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে কয়েকজন নিজেদেরকে হাসপাতালের কর্মী হিসেবেও পরিচয় দিয়েছিল।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের নেতৃত্বাধীন সশস্ত্র যোদ্ধাদের হামলার পর গাজা যুদ্ধ শুরু হয়। ইসরাইলের সংখ্যা অনুসারে, এ হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ ইসরাইলি নিহত হন। এ সময় ২৫০ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় সশস্ত্র যোদ্ধারা।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বলছে, গাজায় ইসরাইলের পরবর্তী আক্রমণে ৪৩ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
১ নভেম্বর ২০২৪
এজি