শীর্ষ সংবাদ

আধুনিকতার ছোঁয়ায় চাঁদপুরে বিলুপ্তির পথে গরু-লাঙ্গলের হাল চাষ

চঁদপুর সদর ও মতলব উত্তর উপজেলার চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় আগের মতো এখন আর লাঙ্গল দিয়ে গরু টানা হাল চাষ দেখা যায় না। আধুনিকতার সঙ্গে সঙ্গে হাল চাষের পরিবর্তনে এখন ট্রাক্টর অথবা পাওয়ার টিলার দিয়ে জমি চাষ করা হয়।

এক সময় উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে কৃষক গরু পালন করতো হাল চাষ করার জন্য। আবার কিছু মানুষ গবাদিপশু দিয়ে হাল চাষকে পেশা হিসেবেও নিত। নিজের সামান্য জমির পাশাপাশি অন্যের জমিতে হাল চাষ করে তাদের সংসারের ব্যয়ভার বহন করত। হালের গরু দিয়ে দরিদ্র মানুষ জমি চাষ করে ফিরে পেত তাদের পরিবারের সচ্ছলতা।

আগে দেখা যেত কাকডাকা ভোরে কৃষক গরু, লাঙ্গল, জোয়াল নিয়ে মাঠে বেরিয়ে পড়তো। এখন আর চোখে পড়ে না গরুর লাঙল দিয়ে চাষাবাদ। জমি চাষের প্রয়োজন হলেই অল্প সময়ের মধ্যেই পাওয়ার টিলারসহ আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে চলাচ্ছে চাষাবাদ। তাই কৃষকরা এখন পেশা বদলি করে অন্য পেশায় ঝুঁকছেন। ফলে দিন দিন কমে যাচ্ছে গরু দিয়ে হাল চাষ।

গরু দিয়ে হাল চাষ করে আশা চরকাশিম বোরচরের পঞ্চাশোর্ধ আব্দুর রশিদ বাদশা চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘ছোটবেলায় হাল চাষের কাজ করতাম। বাড়িতে হাল চাষের বলদ গরু ছিল ৩-৪ জোড়া। চাষের জন্য দরকার হতো ১ জোড়া বলদ, কাঠ লোহার তৈরি লাঙল, জোয়াল, মই, লরি (বাঁশের তৈরি গরু তাড়ানোর লাঠি), গরুর মুখে টোনা ইত্যাদি। আগে গরু দিয়ে হাল চাষ করলে জমিতে ঘাস কম হতো।

তিনি আরো জানানা, ‘অনেক সময় গরুর গোবর জমিতে পড়ত, এতে করে জমিতে অনেক জৈব সার হতো ক্ষেতে ফলন ভালো হতো। এখন নতুন নতুন মেশিন অ্যাইছে, মেশিন দিয়ে এখানকার লোকজন চাষাবাদ করে। মোগো তো ট্যাকা নাই মেশিন কিনে জমি চাষ করার, তাই এহন সংসার চালাইতে অনেক কষ্ট হইতেছে’।

মতলব উত্তর উপজেলারঘনিয়ারপাড় গ্রামের কৃষক আব্দুর রহমান চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘গরুর লাঙল দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৫০ শতাংশ জমি চাষ করা সম্ভব। আধুনিক যন্ত্রপাতির থেকে গরুর লাঙলের চাষ গভীর হয়। জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি ও ফসলের চাষাবাদ করতে সার কীটনাশক সাশ্রয় পায়। তাই কষ্ট হলেও প্রায় ৪০ বছর ধরে গরুর লাঙল দিয়ে চাষাবাদ করে আসছি’।

খান মোহাম্মদ কামাল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১১:৫০ পিএম, ১২ ডিসেম্বর ২০১৭, মঙ্গলবার
ডিএইচ

Share