আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ভরা মজলিসে বিচারপতি এক শিক্ষকের যোগ্যতা যাচাই করার জন্য গরুর রচনা লিখতে দিলে তিনি তা লিখতে ব্যর্থ হন! ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর আদালতে।
জানা যায়, দক্ষিণ কাশ্মীরের একটি বিদ্যালয়ে রেহবার-এ-তালিম (শিক্ষা সহায়ক) হিসেবে কর্মরত মহম্মদ ইমরান খানের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এক আবেদনকারী জম্মু ও কাশ্মীর উচ্চ আদালতে মামলা করেন। দিল্লির উচ্চ-মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদের থেকে প্রাপ্ত প্রশংসাপত্রে উর্দু, ইংরেজি ও অঙ্কে ইমরানের প্রাপ্ত নম্বর যথাক্রমে ৭৪, ৭৩ ও ৬৬ শতাংশ দেখানো হয়ছে। তবে মামলাকারীর দাবি, শিক্ষকের শিক্ষা-প্রশংসাপত্রগুলির কোনো স্বীকৃতি নেই।
গত শুক্রবার এর শুনানিতে বিচারপতি মুজফ্ফর হোসেন আত্তার ওই শিক্ষকের যোগ্যতা যাচাই করার জন্য প্রথমে ইংরেজি থেকে উর্দু এবং উর্দু থেকে ইংরেজি ভাষায় একটি লেখার লাইন অনুবাদ করার নির্দেশ দেন। শিক্ষক তা করতে ব্যর্থ হন। এরপর তাকে কক্ষে বসেই একটি গরুর রচনা লেখার নির্দেশ দেন বিচারপতি। তা লিখতে গিয়ে প্রায় হতভম্ভ হয়ে যান সেই শিক্ষক। তিনি দাবি করেন যাতে আদালত-কক্ষের বাইরে এই পরীক্ষা নেওয়া হয়। তার কথামতো কক্ষের বাইরে আবারও তাকে রচনা লেখার সুযোগ দেওয়া হলে সেখানেও তিনি ব্যর্থ হন।
মহম্মদ ইমরান খান দাবি করেন, তিনি অঙ্কে ভাল। এ কথা শুনে বিচারপতি তাকে একটি চতুর্থ শ্রেণির অঙ্ক সমাধান করতে বললে, সেটাও করতে ব্যর্থ হন তিনি। এরপরই বিচারপতি জানান, রাজ্যে শিক্ষাব্যবস্থা কোন পর্যায় রয়েছে, তা এই পরীক্ষাতেই পরিষ্কার।
আদালতের মতে, এই পরিস্থিতিতে ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুল থেকে পাশ করে বের হলে তাদের মাথায় কোনো শিক্ষাই থাকবে না।
এই পর্যবেক্ষণের সঙ্গে আদালত জম্মু ও কাশ্মীর সরকারকে নির্দেশ দেয়, অবিলম্বে একটি প্যানেল গঠন করতে, যাদের কাজ হবে অস্বীকৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির প্রদেয় প্রশংসাপত্রের খতিয়ে দেখা। পাশাপাশি, রাজ্য শিক্ষা দফতরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে চাকরি দেওয়ার সময় প্রার্থীর সঠিক শিক্ষাগত যোগ্যতা মূল্যায়ন করা হয়।
আদালত আরো জানিয়েছে, অর্থের বিনিময়ে ডিগ্রি প্রশংসাপত্র দেওয়ার জন্য বিভিন্ন ভুয়া প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। সেগুলোর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে নির্দেশও দিয়েছে উচ্চ আদালত। একইসঙ্গে ইমরানের বিরুদ্ধেও এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছে কোর্ট।
চাঁদপুর টাইমস : এমআরআর/২০১৫
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur