Home / বিশেষ সংবাদ / গরুর মাংস খাওয়ায় অভিযোগে পিটিয়ে হত্যা
গরুর মাংস খাওয়ায় অভিযোগে পিটিয়ে হত্যা

গরুর মাংস খাওয়ায় অভিযোগে পিটিয়ে হত্যা

পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গরুর মাংস খাওয়ার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গত সোমবার রাতে দেশটির রাজধানী থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে একটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

মোহাম্মদ আখলাক (৫০) ও তাঁর ২২ বছর বয়সী ছেলেকে টেনেহিঁচড়ে ঘরের বাইরে নিয়ে আসে ভারতের উত্তরপ্রদেশের দারদি গ্রামের কিছু বাসিন্দা। এর পর ইট দিয়ে পেটানো হয় তাঁদের। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান আখলাক। তাঁর ছেলের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।

স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা এনপি সিংয়ের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, মোহাম্মদ আখলাকের বাড়িতে গরুর মাংস আছে এবং তিনি গরু জবাইয়ের সঙ্গে জড়িত বলে গুজব ওঠে ওই গ্রামে। এই গুজবকে ভিত্তি করে তাঁর বাড়িতে হামলা চালানো হয়।

আখলাক ও তাঁর ছেলেকে মারধরের আগে তাঁদের ঘরের দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে হামলাকারীরা। তাঁরা ওই বাড়িতে ভাঙচুর চালায় এবং বাড়ির নারীদের মারধর করে।

মোহাম্মদ আখলাকের স্ত্রী এনডিটিভিকে বলেন, ‘আমার স্বামীর শরীর থেকে রক্ত বের হচ্ছিল। তাঁর মাথা থেঁতলে ফেলা হয়েছিল। তারা আমার পুরো পরিবারকেই পিটিয়েছে। অথচ আমার স্বামীর কোনো শত্রু ছিল না।’

এমনকি ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছার পরও ওই দুই ব্যক্তিকে পেটানো হচ্ছিল। পরে সেখান থেকে ছয় ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ।
আখলাকের মেয়ে সানজিদা (১৮) জানান, হঠাৎ করে সোমবার রাতে একশরও বেশি গ্রামবাসী এসে হামলা চালায় তাঁদের বাড়িতে। ফ্রিজে গরুর মাংস আছে এমন অভিযোগ তুলে তারা ভাঙচুর ও মারধর শুরু করে।

সানজিদা বলেন, ‘তারা আমার বাবা ও ভাইকে মারতে মারতে বাড়ির বাইরে নিয়ে যায়। সেখানে আমার বাবাকে ইট দিয়ে বারবার আঘাত করে রক্তাক্ত করে। পরে আমরা জানতে পারি, স্থানীয় মন্দির থেকে ঘোষণা করা হয়েছে যে আমাদের ফ্রিজে গরুর মাংস আছে। অথচ আমাদের ফ্রিজে শুধু খাসির মাংস ছিল। ফ্রিজের সেই মাংস আলামত হিসেবে সংগ্রহ করে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য নিয়ে গেছে পুলিশ।’

তিন দশকের বেশি সময় ধরে পরিবারটি ওই গ্রামে বাস করত। কীভাবে গরুর মাংস খাওয়া সম্পর্কিত গুজবটি ছড়াল, সে বিষয়ে তদন্ত করছে পুলিশ।

এস কিরান নামের এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘গরুর মাংস খাওয়ায় ওই দুই ব্যক্তিকে মারধর করা হয় বলে আমরা জানতে পারি। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছয় ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। আরো অপরাধীকে খুঁজে আটক করা হবে।’

এদিকে, ছয় ব্যক্তিকে আটকের পর স্থানীয়দের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ফাঁকা গুলি ছোড়ে পুলিশ। গ্রামবাসীর দাবি, পুলিশের গুলিতে এক কিশোর আহত হয়েছে।

|| আপডেট: ০৩:১২ অপরাহ্ন, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫, বুধবারচাঁদপুর টাইমস-ডিএইচ/২০১৫।