শান্তিলতা মানবতার শিক্ষা দিয়েছেন: শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষা বিস্তারে নিজের সব সম্পত্তি দান করা যশোরের অভয়নগর উপজেলার মাগুরা গ্রামের শান্তিলতা ঘোষকে সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যশোর জিলা স্কুল অডিটরিয়ামে শান্তিলতার হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি যশোর জেলা শাখা এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠান থেকে শান্তিলতার হাতে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেয়া হয়। এছাড়া শান্তিলতাকে ক্রেস্ট, মানপত্র ও শাড়ি দেয়া হয়। পরিয়ে দেয়া হয় উত্তরীয়।

এ সময় ডা. দীপু মনি বলেন, শান্তিলতা আমাদের মানবতার শিক্ষা দিয়েছেন। আমাদের উচিত তার কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে সমাজ ও দেশের জন্য কাজ করা। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য, যে স্কুলের জন্য তিনি সর্বস্ব দান করেছেন সেই স্কুল তার দায়িত্ব নেয়নি। এই সমাজকেই শান্তিলতার দায়িত্ব নিতে হবে। কারণ তিনি প্রতিদানের জন্য সর্বস্ব দান করেননি। কিন্তু আমাদের দায় আছে। সেই দায় আমাদের পালন করতে হবে। আমি মনে করি, এখানে যারা উপস্থিত আছেন তারা শান্তিলতার জন্য কিছু করবেন।

এ সময় ডা. দীপু মনি মাগুরা বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে শান্তিলতা ঘোষের নামে এবং একটি বহুতল ভবন করে শান্তিলতার ঘোষের বাবার নামে নামকরণের ঘোষণা দেন। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সহ-সভাপতি বঙ্গবন্ধু অধ্যাপক মুনতাসীর মামুনের সভাপতিত্ব অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, যশোর জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক একেএম গোলাম আযম, প্রবীণ শিক্ষক তারাপদ দাস, অভয়নগরের প্রেমবাগের ইউপি চেয়ারম্যান মফিজ উদ্দিন প্রমুখ।

এতে স্বাগত বক্তব্য দেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি যশোর জেলা কমিটির সভাপতি হারুন অর রশিদ।

এর আগে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা, রক্তাক্ত একাত্তরে যশোরের প্রথম শহীদ চারুবালা করসহ ৭২ জন শহীদের স্মরণে জিলা স্কুল চত্বরে ৭২টি গাছ লাগানো হয়।

শান্তিলতা ঘোষ শিক্ষা বিস্তারে নিজ গ্রামের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে তার সমুদয় সম্পত্তি দান করেন। এর আগে তার বাবা ইন্দুভূষণ বিশ্বাস মাগুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য ৩৩ শতক ও বাজার স্থাপনের জন্য ৫০ শতক জমি দান করেন। বাবার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে শান্তিলতা তার সব জমি (৬ দশমিক ৮৬ একর) মাগুরা বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নামে দান করেন। তখন তিনি স্কুলটি বাবা ইন্দুভূষণ বিশ্বাসের নামে করার আবেদন করেন। কিন্তু স্থানীয় উদ্যোক্তারা গ্রামের নামেই স্কুলটির নামকরণ করেন।

বার্তা কক্ষ
৫ এপ্রিল,২০১৯