প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দক্ষিণ এশিয়াতে এই দেশ হবে শান্তিপূর্ণ, উন্নত এবং সমৃদ্ধ। আমাদের এই মাতৃভূমি বিশ্ব দরবারে যেন মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়, সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা কাজ করব।’
শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) ঈদের সকালে গণভবনে সর্বস্তরের নাগরিকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করে বাংলাদেশকে একটি শান্তির দেশ হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী প্রথমে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা, তারপর বিচারপতি, কূটনীতিক, ব্যবসায়ীসহ সর্বস্তরের নাগরিকদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। আগত অতিথিদের আপ্যায়ন করা হয় সেমাই, সন্দেশ আর ফল দিয়ে।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা ফুলের তোড়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে আসেন। এ সময় মূল মঞ্চে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সঙ্গে ছিলেন তার ছোট বোন শেখ রেহানা, প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে সায়মা হোসেন পুতুল এবং পুতুলের ছেলে জারিফ।
সমাজের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ একে একে এসে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। সরকারপ্রধানকে কাছে পেয়ে অনেকেই এ সময় তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী মনোযোগ দিয়ে তাদের কথা শোনেন এবং সমাধানের জন্য ব্যক্তিগত কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেন।
অনুষ্ঠানে পুলিশ মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হকসহ পুলিশ বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। পরে সমবেতদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী।
দেশবাসীকে ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা এবং যারা এবার হজ করতে গেছেন, তাদের মোবারকবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা সকলে দোয়া করবেন, উন্নয়নের পথে আমরা যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছি; তা যেন অব্যাহত থাকে।’
ঈদের তাৎপর্য তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা পবিত্র ঈদুল আজহার মাধ্যমে এটাই শিখি; কিভাবে আত্মত্যাগ করা যায়।’
সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কিছুদিন আগে বন্যা হয়েছে। সে বন্যা আমরা মোকাবিলা করেছি। নদী ভাঙায় যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের ঘরবাড়ি তৈরি করে দেয়া থেকে শুরু করে সব ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। ইনশাল্লাহ, এই বাংলাদেশে একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না।’
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশের মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছে এবং তার ফল দেশবাসী পাচ্ছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজ বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে ইনশাল্লাহ।’
জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদক থেকে সমাজকে রক্ষা করতে সবাইকে এগিয়ে আসারও আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা সকলেই লক্ষ্য রাখবেন, যেন আমাদের এই দেশে আমাদের যুব সমাজ যেন বিপথে না যায়। মাদকাসক্তি বা জঙ্গিবাদের সঙ্গে যেন জড়িত না হয়।’
শুভেচ্ছা বিনিময় পর্বে বেলা সোয়া ১১টার দিকে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহা গণভবনে যান।
কূটনীতিকসহ অন্যদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর প্রধানমন্ত্রী তার নির্ধারিত আসনে যাওয়ার সময় প্রধান বিচারপতির সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। প্রধানমন্ত্রীর ডান দিকে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং বাঁ দিকে প্রধান বিচারপতির বসার জায়গা নির্ধারিত ছিল।
প্রধানমন্ত্রী তার আসনে বসার পর বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সদস্য সাকিব আল হাসান তার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। বাংলাদেশের এই তারকা ক্রিকেটার এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সোফার পাশে হাঁটু মুড়ে বসেন।
সরকারপ্রধান এ সময় সাকিবের মাথায় হাত বুলিয়ে দেন এবং নিজের প্লেট থেকে কাঁটা চামচে তুলে ফল ও মিষ্টি খাইয়ে দেন। পরে প্রধানমন্ত্রী প্রধান বিচারপতির সঙ্গে কথা বলেন এবং একসঙ্গে সবার ছবি তোলা হয়।