কচুয়ায় সপ্রাবিতে খোলা আকাশের নিচে পাঠদান

কচুয়ার দারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনটি পরিত্যাক্ত ঘোষণা করার পরও টানা ৭ বছর ধরে খোলা আকাশের নিচে চলছে পাঠদানক্রম। বুধবার ( ৯ নভেম্বর) দুপুরে সরজমিনে গিয়ে এ দৃশ্য দেখা যায়।

শ্রেণি কক্ষের অভাবে কখনো খোলা আকাশের নিচে, কখনো ঝূঁকিপূর্ণ ভবনের বারান্দায় ও খোলা মাঠে চলছে শিক্ষাকার্যক্রম।

ক’বছর আগে বিদ্যালয়টিতে প্রায় ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী থাকলেও বর্তমানে অনেক শিক্ষার্থী কমে গেছে। অধিকাংশ শিক্ষার্থী প্রাণহানি ও বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কায় বিদ্যালয়ে আসা ছেড়ে দিয়েছে।

একাডেমিক ভবন, সৌচাগার, দরজা-জানালা ও আসবাব পত্রের অভাবে চরম সমস্যার মধ্যেই খুঁড়িয়ে চলছে চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার সম্প্রতি জাতীয়করণকৃত দারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি।

অভিভাবক ও এলাকাবাসীরা চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ১৯৭২ সালের তৎকালীন কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা বিস্তারের চাহিদা মেটাতে ৩৩ শতাংশ ভূমির ওপর ওই বিদ্যালয়টি স্থাপন করা হয়। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বারবার অবহিত করার পর জেলা শিক্ষা অফিসার ২০১৫ সালে বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করে পরিত্যাক্ত ঘোষণা করেন ও অধিক ঝুঁকিপূর্ণ এ বিদ্যালয়ে ক্লাশ না নেয়ার নির্দেশ দেন।

অথচ শিক্ষকরা শ্রেণি কক্ষের অভাবে বাধ্য হয়ে ভবনের বারান্দায় ও মাঠে খোলা আকাশের নিচে বছরের পর বছর পাঠদান চালিয়ে আসছেন। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার ফলাফল শতভাগই সন্তোষজনক। বিদ্যালয়ে বর্তমানে শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ১’শ ৮২ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষক রয়েছে ৫ জন।

উপজেলা যুব লীগের সদস্য মো. বেলায়েত হোসেন জানান, ১৯৯৩-১৯৯৪ অর্থ বছরে এলজিইডির অর্থায়নে বিদ্যালয়টি পুনঃনির্মাণ করা হয়। তৎকালীন সময়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার নাম মাত্র সিমেন্ট,বালু ব্যবহার করে নিম্মমানের রড দিয়ে বিদ্যালয়টির নির্মাণ কাজ শেষ করেন। ফলে বছর যেতে না যেতেই ছাদ ও দেয়ালের পলেস্তারা ভীম খসে পড়াসহ বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দেয় এবং তা’ খসে পড়ে বিভিন্ন সময় বেশ কিছু শিক্ষার্থী আহত হয়। বিষয়টি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড.মহীউদ্দীন খান আলমগীর এমপিকে জানানো হয়েছে।

বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক মো. কামরুজ্জামান চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘শুরু থেকে বিদ্যালয়ে অনেক শিক্ষার্থী ছিল বর্তমানে বিদ্যালয়টি অধিক ঝুকিপূর্ণ হওয়ায় অনেক অভিভাবক তাদের শিক্ষার্থীদের এ বিদ্যালয়ে পাঠাতে চান না।’

শিক্ষকদের নিজ অর্থায়নে ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় বিদ্যালয়ের পাশে ৩ কক্ষ বিশিষ্ট একটি টিনসেট ঘর নির্মাণ করে ২ সিফটে শিক্ষার্থীর বিকল্প পাঠদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি দীলিপ চন্দ্র চক্রবর্তী জানান, বিদ্যালয়টি স্থানীয় প্রশাসন অনেক আগেই ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা দিয়েছেন। বারবার চেষ্টা তদবির করেও কোনো সুফল পাওয়া যায়নি। ২০০৯ সালের ২৯ মার্চ কচুয়া উপজেলার মাসিক শিক্ষা কমিটির সভায় বিদ্যালয়টি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে তালিকা তৈরি করা হয়।

এ ব্যাপারে কচুয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার হেমায়েতুল ভুঁইয়া জানান, কচুয়ায় ১৯ টি ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয়ের তালিকা করে ভবন নির্মাণের জন্য জেলায় প্রেরণ করেছি।

।। আপডটে, বাংলাদশে সময় ৭ : ৩৭ পিএম, ৯ নভেম্বর ২০১৬, বুধবার
এইউ

About The Author

প্রতিবেদক- জিসান আহমেদ নান্নু, কচুয়া
Share