খেলাপি ঋণ আদায়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে জনতা ব্যাংক

যে সব খেলাপি গ্রাহক দীর্ঘদিন ঋণ পরিশোধে সময়ক্ষেপণ করে আসছে তাদের নিকট থেকে ঋণ আদায়ে জিরো টলারেন্সে অবস্থান গ্রহণ করেছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন জনতা ব্যাংক লিমিটেড। খেলাপি ঋণ আদায়ে ব্যাংকের পক্ষ থেকে আইনি প্রক্রিয়া জোরদার করা হয়েছে।

এ পদক্ষেপের প্রেক্ষিতে সম্প্রতি ব্যাংকের বৈদেশিক বাণিজ্য কর্পোরেট শাখার ৩ জন খেলাপি গ্রাহককে গ্রেপ্তার করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। আত্মগোপনে থাকা শাখাটির খেলাপি গ্রাহক মেসার্স আব্দুস সামাদ প্যাকেজিংয়ের তিন কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে তাদের খেলাপি ঋণ ২ কোটি ৫৬ লাখ টাকার মধ্যে ২৫ শতাংশ হারে ৬৪ লাখ টাকা পে-অর্ডারের মাধ্যমে আদায় করা হয়।

অবশিষ্ট অর্থ আগামি তিন মাসের মধ্যে ব্যাংকে পরিশোধ করবেন মর্মে অর্থ ঋণ আদালতে বন্ড প্রদান করলে তাাদের জামিন মঞ্জুর হয়।

এছাড়া চট্টগ্রামের লালদীঘি ইস্ট কর্পোরেট শাখার খেলাপি গ্রাহক নুরজাহান সুপার অয়েল লিমিটেডের চেয়ারম্যানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ৮৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা অনাদায়ী থাকায় অর্থঋণ আদালত গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেছে।

একই শাখার অপর গ্রাহক জেড এন্ড জে ইন্টারন্যাশনালের মালিকের বিরুদ্ধে ৩৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকা অনাদায়ী থাকায় গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।

এ ব্যাপারে জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুছ ছালাম আজাদ বাসসকে বলেন,‘খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনার ব্যাপারে আমরা অত্যন্ত আন্তরিক।এজন্য যেসব খেলাপি গ্রাহক দীর্ঘ সময় ধরে ঋণ পরিশোধে সময় ক্ষেপন করছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনী তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তার বেশ কয়েকটি দৃষ্টান্ত সবাই দেখতে পেয়েছে।’

এছাড়া সারাদেশে বৃহৎ যেসব ঋণ খেলাপি আছে,তাদের বিরুদ্ধে জোরালো আইনি পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।

তিনি আরো বলেন,‘ দেশে শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক কার্যক্রম আরও বেগবান করতে হলে বেশিসংখ্যক মানুষকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনা জরুরি। খেলাপি ঋণ কমানো গেলে বেশিসংখ্যক মানুষকে ঋণ সেবা দেয়া যাবে।এর ফলে দেশে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। সরকারের এ নীতির সঙ্গে মিল রেখে জনতা ব্যাংক কাজ করছে।’(জাতীয় দৈনিক থেকে )

চাঁদপুরে মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণের পরিমাণ ৬৬ কোটি টাকা

প্রতীকী ছবি

এদিকে চাঁদপুরের ব্যাংকগুলোতে ২০২০-২০২১ অর্থবছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ক কৃষি ও দারিদ্রবিমোচন খাতে মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণের পরিমাণ ৬৬ কোটি টাকা ৮৭ লাখ ২২ হাজার টাকা।

জেলার জনতা,সোনালী,অগ্রণী,কৃষি,কর্মসংস্থান,রূপালী ও বেসিক ব্যাংকে ওই টাকা মেয়াদোত্তীর্ণ হিসেবে পড়ে রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে। এর মধ্যে জেলার সব উপজেলায় ৮শ’৮৯টি অনিষ্পন্ন সার্টিফিকেট মামলার বিপরীতে ২ কোটি ৪২ লাখ ৪৩ হাজার টাকা রয়েছে।

প্রাপ্ত তথ্য মতে, কৃষি ও দারিদ্রবিমোচন মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণের পরিমাণ তথ্য কৃষিঋণ কমিটির এক প্রতিবেদনে জানা গেছে ।

সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের আঞ্চলিক কার্যালয়ের সূত্র মতে, জনতা ব্যাংকের ১৫ শাখায় মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ৫ কোটি ৬ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ২৮ শাখায় মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ২০ কোটি ২৮ লাখ টাকা। সোনালী ব্যাংকের ২০ শাখায় মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ১৮ কোটি ৭ লাখ টাকা । অগ্রণী ব্যাংকের ২১ শাখায় মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ১৭ কোটি ৫৪ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। কর্মসংস্থান ব্যাংকের ৪ শাখায় মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ৪ কোটি ২০ লাখ ২৯ হাজার টাকা।

রূপালী ব্যাংকের মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ২১ লাখ ৫১ হাজার টাকা এবং বেসিক ব্যাংকের মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ৯১ লাখ ২৫ হাজার টাকা ।

এ ছাড়াও জেলায় অবস্থিত ২৪টি বেসরকারি ব্যাংকে কম-বেশি হারে ৫৩ লাখ ২৭ হাজার টাকা মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণের খাতে পড়ে আছে।।

আবদুল গনি, ৯ নভেম্বর ২০২১

বার্তা কক্ষ , ৯ নভেম্বর ২০-২১

Share