খেজুর রস সংগ্রহে ব্যস্ত চাঁদপুরের গাছিরা

শীতের শুরুতেই কিছুটা অতিরিক্ত উপার্জনের আশায় রস সংগ্রহের তোড়জোড়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাঁদপুরের মৌসুমি খেজুর গাছিরা। সারা বছর নানা কাজে জীবিকা নির্বাহ করলেও বছরের এ ৩-৪ মাস তারা খেজুরের রস বিক্রি করে কিছুটা ভালো লাভবান হওয়ার চেষ্টা করেন। জেলায় কেজি প্রতি ১০০ টাকা ধরে দিনে ১-২ হাজার টাকা রস বিক্রির টার্গেট রাখেন অনেকে।

সকালে মতলব উত্তরের খেজুর গাছিদের সঙ্গে আলাপকালে তারা রস সংগ্রহের প্রস্তুতির কথা জানান।

স্থানীয় ষাটনলের খেজুর গাছি মনিরুল ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে খেজুর গাছ পরিষ্কার শুরু করে দিয়েছি। এক সপ্তাহ পর গাছে কলস বাঁধব। শীতের প্রকোপ যত বাড়বে, তত বেশি রস বের হবে। আগামী সপ্তাহ থেকে পুরোদমে রস সংগ্রহ শুরু করব। এখন পর্যন্ত আমি ১৪টি গাছ পরিষ্কারের কাজ শেষ করেছি। এ মৌসুমে আশা করছি এক একটি গাছ থেকে দিনে ১-২ হাজার টাকার রস বিক্রি করতে পারব।

অন্য এক প্রশ্নে গাছি নাছির উদ্দীন বলেন, এবার খেজুরের রসের চাহিদা ব্যাপক এবং আবহাওয়াও অনুকূলে। কিন্তু এখনো গাছ প্রস্তুত না হওয়ায় রসের জোগান দিতে পারছি না। দুই কলস রস থেকে ১ কেজি গুড় হয় এবং ১ গ্লাস রস ২০ টাকা করে বিক্রি করা যায়। এ ছাড়াও কেজি প্রতি রসের দাম কমপক্ষে ১০০ টাকা নির্ধারণ করেছি। আর গুড়ের দাম ২৫০ থেকে ২৭০ টাকা কেজি দরে নির্ধারণ করেছি।

মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফয়সাল মোহাম্মদ আলী বলেন, খেজুরের রস সংগ্রহে খরচ নেই শুধু গাছ প্রস্তুতে গাছিদের পরিশ্রমী ও সতর্ক থাকতে হয়। খেজুর গাছের চারা রোপণে কেউ আগ্রহী হলে আমরা পরামর্শ সহায়তা দিয়ে থাকি।

এ বিষয়ে চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ শাহাদাৎ হোসেন বলেন, চাঁদপুরে যেহেতু অনেক খেজুর গাছ রয়েছে। কাজেই এখানে বাঁদুড়ের মাধ্যমে নিপাহ ভাইরাস হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। তাই রস সংগ্রহকারী গাছি ভাইদের পরিষ্কার পরিছন্ন হয়ে খেজুরের রস সংগ্রহ করতে হবে। কোনোভাবেই কাঁচা খেজুরের রস খাওয়া যাবে না। গাছে রস পড়ার সময় এটি ঢেকে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। বাঁদুড় যাতে রসের ওপর বসতে না পারে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। বিষয়টি নিয়ে সতর্ক থাকতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

স্টাফ করেসপন্ডেট, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩

Share