খুলনা থেকে চুরি হওয়া বাইক মিললো চাঁদপুরে, পুলিশসহ আটক ৫

খুলনা নগরীর দৌলতপুরের আকাঙ্ক্ষা টাওয়ারের গ্যারেজ থেকে চুরি হওয়া বাইক চাঁদপুর জেলা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ আন্ত:জেলা মোটরসাইকেল চোর সিন্ডিকেটের সন্ধান পেয়েছে।

আটক করা হয়েছে মাদারীপুরের পুলিশ সদস্যসহ ৫ জনকে। বিষয়টি নিয়ে খুলনায় ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

গত ১০ দিনের ব্যবধানে খুলনা থেকে চুরি হওয়ায় ৩টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ। এর মধ্যে দুটি বাইক মাদারীপুর এবং ১টি বাইক চাঁদপুর জেলা থেকে উদ্ধার করা হয়।

খুলনার তেরখাদা উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী জেলার নড়াইল এবং মাগুরা থেকে বাইক চোর সিন্ডিকেটের সদস্যরা নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে বাইক চুরি করে মাদারীপুর, কুমিল্লা, চাঁদপুর এসব জেলায় বিক্রি করে। এক জেলা থেকে অন্য জেলায় চোরাই মোটরবাইক পাঠানোর জন্য কুরিয়ার সার্ভিসকে ব্যবহার করে সিন্ডিকেট সদস্যরা।

এদিকে চোরাই মোটরসাইকেল বিকিকিনির সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে মাদারীপুর জেলার সদর মডেল থানাধীন ২নং পুলিশ ফাঁড়ির কনস্টেবল মো. সোহেল রানাকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া মোটরসাইকেলের মাস্টার চাবিসহ আটক করা হয়েছে খুলনার তেরখাদা উপজেলার মো. কদর আলী, নড়াইল জেলার সুমন ওরফে কিসলু মোল্লা, লোহাগড়া থানার মো. আশিকুর রহমান মোল্লা, মাগুরার মো. লিটন মিয়া। উদ্ধার হয়েছে ৩টি মোটরসাইকেল।

দৌলতপুর থানা পুলিশ জানায়, গত ১৬ এপ্রিল আকাঙ্ক্ষা টাওয়ারের গ্যারেজ থেকে দেয়ানা এলাকার মাহাবুবুর রহমানের একটি এফজেডএস ভার্সন-৩ মোটরসাইকেল চুরি হয়। এ ঘটনায় গত ২০ এপ্রিল তিনি বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় সূত্র ধরে তেরখাদা এলাকা থেকে কদর আলীকে আটক করা হয়। এ সময় কদর আলীর কাছ থেকে তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও মাস্টার চাবি উদ্ধার করা হয়। সে পুলিশের কাছে মোটরসাইকেল চুরির সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। তার দেওয়া তথ্যমতে পুলিশ নড়াইল থেকে সুমনকে, লোহাগড়া থেকে আশিকুর এবং মাগুরা থেকে লিটনকে আটক করে।

পুলিশের কাছে লিটন মোটরসাইকেল সিন্ডিকেটের কথা স্বীকার করে। পাশাপাশি খালিশপুর এবং সোনাডাঙ্গা থেকে ২টি বাইক চুরির কথা স্বীকার করে। তার সূত্র ধরে মাদারীপুর থেকে কনস্টেবল সোহেল রানাকে আটক করা হয়। তার কাছ থেকে ১টি এফজেডএস ও ১টি পালসার গাড়ি উদ্ধার করা হয়।

দৌলতপুর থানার বাইক চুরির মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই হায়দার জানান, আসামিদের আটকের পর সোনাডাঙ্গা ও খালিশপুরের চুরি হওয়া মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। তবে দৌলতপুরের চুরি হওয়া বাইকের সন্ধান মিলছিল না। তারা তাদের সোর্স ও আসামিদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী কুমিল্লা ও চাঁদপুর জেলা অভিযান করেন। পরবর্তীতে গত ২৮ এপ্রিল ভোররাতে চাঁদপুর জেলার সদর থানাধীন লঞ্চঘাট এলাকা হইতে চোরাই মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার সঙ্গে কুমিল্লা জেলার একজনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।

দৌলতপুর থানার ওসি মো. নজরুল ইসলাম জানান, দৌলতপুর থেকে চুরি হওয়া মোটরসাইকেলটি নড়াইলে নিয়ে যায় সিন্ডিকেট। এরপর সেখান থেকে মাগুরা জেলায় পাঠানো হয়। মাগুরা থেকে ইউএসবি কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে চাঁদপুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত মামলায় ৫ জন আসামি এবং ৩টি চুরি হওয়া মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। এই চক্রের মাধ্যমে আরও কয়েকটি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করা সম্ভব হবে তিনি জানান।

Share