অনলাইন পত্রিকা নিবন্ধন করার জন্য প্রকাশকদের দেয়া কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে যাচ্ছে তথ্য অধিদফতর। যাচাই-বাছাই শেষে নিবন্ধনের জন্য পরবর্তী ধাপ অনুসরণ করা হবে।
তথ্য অধিদপতর সুত্রে জানা যায়, প্রায় দুই হাজার অনলাইন পত্রিকা নিবন্ধনের জন্য কাগজ পত্র জমা দিয়েছে সংশ্লিষ্ট পত্রিকার প্রকাশকরা। এসব কাগজ-পত্র ঠিক আছে কি না তা যাচাই-বাছাই চলছে।
তবে যদি কোনো প্রকাশক তার অনলাইন পত্রিকার কাগজপত্র ভুলে কম দিয়ে থাকেন তাহলে তথ্য অধিদফতর বিষয়টি অবগত করবে এবং ভুল করে না দেয়া কাগজ-পত্র জমা দেয়ার জন্য বলা হবে। এ জন্য ওই অনলাইন পত্রিকার প্রকাশক কয়েকদিন সময় পাবেন।
এ বিষয়ে তথ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত প্রধান তথ্য অফিসার মোহাম্মদ ইসহাক হোসেন বলেন, ‘আমরা যে কাগজ-পত্রগুলো হাতে পেয়েছি বর্তমানে তা যাচাই-বাছাই চলছে। কেউ যদি ভুল করে কাগজ-পত্র কম দিয়ে থাকেন তাহলে তাদেরকে ওই কাগজ-পত্রগুলো জমা দিতে বলা হবে এবং কিছুদিন সময় দিব আমরা।’
অন্যদিকে তথ্য অধিদফতরের সিনিয়র তথ্য অফিসার মিজানুর রহমান বলেন, ‘জমাকৃত কাগজ-পত্র যাচাই-বাছাই চলছে। প্রকাশকদের জমা দেয়া কাগজ-পত্র ঠিক আছে কি না তা দেখা হচ্ছে।’
জানা যায়, অনলাইন পত্রিকা নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন হতে আরও অনেক সময় লাগবে। কতদিন লাগতে পারে তা নিশ্চিত নয় তথ্য অধিদফতর। তবে অনলাইন পত্রিকার নীতিমালা করার পরই অনলাইন পত্রিকাগুলোকে নিবন্ধন করা হবে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে মোহাম্মদ ইসহাক হোসেন বলেন, ‘এটা বলা মুশকিল। ৬ মাসও লাগতে পারে আবার ১ বছরও লাগতে পারে। তবে অনলাইন পত্রিকার নীতিমালা হওয়ার পরই অনলাইন পত্রিকাগুলোকে নিবন্ধন করার সম্ভাবনা বেশী।’
তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে কয়েকবার মিটিং হয়েছে। আরও ২-১ বার হবার পরে হয়তোবা নীতিমালা চূড়ান্ত করা হবে। তবে এ বিষয়টিও নিশ্চিত নয় যে, কখন নীতিমালা করা হবে।’
তিনি জানান, যাচাই-বাছাই এবং সংশোধন শেষে সংশ্লিষ্ট অনলাইন পত্রিকা সম্পর্কে খোঁজ নেয়ার জন্য পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চকে (এসবি) দায়িত্ব দিবে তথ্য অধিদফতর। এসবি ওই পত্রিকা সম্পর্কে তথ্য অধিদফতরকে প্রতিবেদন দিবে।
একটি সূত্রে জানা যায়, এসবির প্রতিবেদন শেষে ওই পত্রিকা যদি নিবন্ধিত হবার যোগ্য হয় তাহলে নিবন্ধিত করা হবে। এক্ষেত্রে যেসব অনলাইন পত্রিকার অফিস নেই এবং সাংবাদিক নেই তাদেরকে নিবন্ধন দিবে না তথ্য অধিদফতর।
তথ্য অধিদফতর বলছে, বর্তমানে দেশে অনলাইন পত্রিকার সঠিক সংখ্যা জানা না থাকলেও নিবন্ধনের মাধ্যমে অনেকটাই পরিস্কার হওয়া যাবে সে সংখ্যা সম্পর্কে। এছাড়া যারা নিবন্ধিত হবেন তারা সরকারি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাবেন। আর নিবন্ধনের মাধ্যমে সরকারিভাবে একটি স্বীকৃতিও পাওয়া যাবে। এতে করে অনলাইন পত্রিকাগুলোরই লাভ।
এ নিবন্ধন করার ফলে সরকারি বিজ্ঞাপনের সুযোগ পেতে পারে অনলাইন পত্রিকাগুলো। এছাড়া যাদের এক্রিডিটেশন কার্ড নেই আবেদন করলে তারা এক্রিডিটেশন কার্ড পাবে। সেক্ষেত্রে কোন পত্রিকা কয়টা এক্রিডিটেশন কার্ড পাবে তা ওই পত্রিকার অ্যালেক্সা র্যাংকিং, গুগল অ্যানালাইটিক্স(গুগল তথ্যে পাঠক সংখ্যা) , নিজস্ব কনটেন্টের পরিমাণ ও সাংবাদিকের সংখ্যার উপর ভিত্তি করে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে বলেও জানা যায়।
তথ্য অধিদফতরের দাবি, এ নিবন্ধনের মাধ্যমে সরকার অনলাইন মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ নয় বরং শৃঙ্খলে আনার চেষ্টা করছে। যারা ঘরে বসে কপি-পেস্ট করে পত্রিকা চালায় নিবন্ধনের মাধ্যমে তাদেরকেও চিহ্নিত করা যাবে।
এছাড়া যেসব পত্রিকার প্রতিবেদক নেই তারাও চিহ্নিত হবে। (সূত্র-বিডিটোয়েন্টিফোর লাইভ ডট কম)