খুপড়ি ঘর থেকে প্রতিবন্ধীর কন্যা মেডিকেলে

পিতা আব্দুল মান্নান প্রতিবন্ধী হলেও সংসার চালাতে পরের বাড়িতে দিনমজুর খেটে। আর মা খালেদা বেগম অন্যের বাড়িতে করেন ঝি-এর কাজ। তাদের নেই নিজস্ব কোনো জমি ও ঘরবাড়ি।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বৈডাঙ্গা গ্রামের রাস্তার পাশেই রয়েছে খুপড়ি আকারে জরাজীর্ণ ঘর। এটি আয়নাল হোসেন নামে এক ব্যক্তির বাড়ি। সেখানেই বাবা-মায়ের সঙ্গে বসবাস করেন মাহফুজা।

হতদরিদ্র পরিবারের একমাত্র কন্যা সেই মাহফুজা খাতুনই এবার মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। মাহফুজার গন্তব্য এখন সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।

মেডিকেলে ভর্তির টাকাটাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে দিয়েছেন গ্রামের মানুষ।

অদম্য মেধাবী মাহফুজার জীবন কাহিনী আর ১০টি শিক্ষার্থীর মতো নয়। সোনার চামচ মুখে দিয়েও তিনি জন্মগ্রহণ করেননি। পিতার অসামর্থ্যটাকে মাহফুজা কোনো দিন অনুভব করেননি।

তার একটাই লক্ষ্য ছিল দারিদ্রতাকে জয় করে দিনমজুর পিতার মুখে হাসি ফোটানো।

কোটচাঁদপুরের দোড়া ইউনিয়নের পাঁচলিয়া গ্রামে মাহফুজার নানা বাড়ি। নানা মঙ্গল মণ্ডলের বাড়িতেই মাহফুজার শিক্ষা জীবনের হাতেখড়ি। উপজেলার পাঁচলিয়া হাই স্কুল থেকে এসএসসি পাস করে ভর্তি হন ঝিনাইদহ সরকারি কেসি কলেজে।

এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে যুদ্ধ শুরু করেন মেডিকেলে ভর্তির জন্য। ধরা দেয় সাফল্য। মেধা তালিকায় তার স্থান হয় ৩৮১৬। এখন চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্নে বিভোর সে।

মাহফুজা খাতুন জানান, এই সাফল্যের জন্য তিনি প্রথমেই তার পিতা মাতা ও শিক্ষকদের অনুপ্রেরণাকে প্রাধান্য দিয়েছেন।

মেধাবী মাহফুজা বলেন, আমি দরিদ্র ঘরের সন্তান। দারিদ্রতা কী সেটা আমি বুঝি। কাজেই চিকিৎসক হয়ে আমি সমাজের হতদরিদ্র মানুষকে বিনামূল্যে চিকিৎসা দেব। সমাজের কিছু মানুষের সাহায্য ও প্রেরণায় আমি এতদূর এসেছি। আমি সবার কাছে দোয়া চাই।

Share