১৫ আগস্ট নিজের‘জন্মদিনের’ প্রথম প্রহরে কেক কাটছেন না খালেদা । তার প্রেস উইং কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান রোববার (১৪ আগস্ট) বিকেলে এমন তথ্য জানান।
প্রতিদিনের মতো গুলশানের কার্যালয়ে যাবেন তিনি (খালেদা)। তবে সেখানে কেক কাটার কোনো আনুষ্ঠানিকতা থাকছে না।
গত বছরও (২০১৫ সাল) ১৫ আগস্ট প্রথম প্রহরে গুলশান কার্যালয়ে কেক কাটেননি খালেদা জিয়া। তবে দিনের শেষ প্রহরে বিএনপি, ঢাকা মহানগর বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের আনা কেক কাটেন তিনি।
এবারও এমনটি ঘটার সম্ভবনা আছে কি-না- জানতে চাইলে শায়রুল কবির খান বলেন, ‘প্রথম প্রহরে কাটছেন না। এটাই আপাতত আমাদের কাছে খবর’।
খবর নিয়ে জানা গেছে, নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়েও ১৫ আগস্টের প্রথম প্রহরে খালেদা জিয়ার ‘জন্মদিনের’ কেক কাটার কোনো কর্মসূচি নেই। অতি উৎসাহী কেউ এ ব্যাপারে বাড়াবাড়ি না করলে নয়াপল্টনেও কেক কাটা হবে না।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক বন্যায় মানুষের দুর্দশা, দলের নেতাকর্মীদের ওপর গ্রেফতার-নিপীড়ন-নির্যাতন বিবেচনা করেই খালেদা জিয়া এবার নিজের ‘জন্মদিনে’ কেক কাটছেন না।
এছাড়া গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় সন্ত্রাসী হামলা এবং এরই প্রেক্ষিতে জাতীয় ঐক্য গড়ার প্রক্রিয়া চলমান থাকায় জাতীয় শোক দিবসের দিন কেক কাটার অনুষ্ঠান না করার নির্দেশ দিয়েছেন খালেদা জিয়া নিজেই। তার এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে বিএনপিসহ সহযোগী সংগঠনগুলোকে মৌখিকভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার দিন ১৫ আগস্ট ঘটা করে খালেদা জিয়ার ‘জন্মদিন’ পালন নিয়ে রাজনীতিতে ব্যাপক সমালোচনা রয়েছে। খালেদা জিয়া যতোবার জোট ও ঐক্য গড়ার চেষ্টা করেছেন ততোবার এ বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন অনেকেই।
আর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বরাবরই বলা হয়েছে- ‘ভুয়া জন্মদিনে’ কেক কেটে বঙ্গবন্ধুর হত্যা উদযাপন করেন খালেদা জিয়া।
গত দুই যুগ ধরে ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার ‘জন্মদিন’ উদযাপন করা হলেও তার আরও কয়েকটি জন্মদিনের হদিস পাওয়া যায়। তার জন্ম সাল নিয়েও দুই ধরনের তথ্য আছে।
খালেদা জিয়ার জন্ম ১৯৪৬ সালে বলে তার নতুন করা পাসপোর্টে থাকলেও গয়েশ্বর চন্দ্র রায় গত বছর জানান, তার নেত্রীর জন্ম ১৯৪৫ সালে।
বাংলা পিডিয়াসহ খালেদা জিয়ার জীবনীর ওপর রচিত কয়েকটি গ্রন্থে তার জন্ম বছর ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট দেখানো হয়েছে।
১৯৮১ সালে ৩০ মে রাষ্ট্রপতি থাকা অবস্থায় জিয়াউর রহমান নিহত হলে রাজনীতিতে পা রাখেন তার স্ত্রী খালেদা জিয়া। প্রথমে দলের ভাইস চেয়ারম্যান এবং তিন বছর পর চেয়ারপারসন হন তিনি।
এরশাদবিরোধী আন্দোলনে খালেদা জিয়া বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন, ‘ক্যান্টনমেন্টে জন্ম নেওয়া দল’ বিএনপির জনভিত্তি তৈরি করে দেন খালেদাই।
১৯৯১ সালে সংসদ নির্বাচনে বিএনপি বিজয়ী হলে বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হন খালেদা। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনের পর কয়েক দিনের জন্য প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনি।
২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট জয়ী হলে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী হন খালেদা জিয়া। ২০০৮ সালের নির্বাচনে হারের পর সংসদে বিরোধী দলীয় নেতার দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
নিউজ ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৭:৫৭ পি,এম ১৪ আগস্ট ২০১৬, রোববার
ইব্রাহীম জুয়েল