জাতীয়

খালেদা জিয়ার সিটিস্ক্যান রিপোর্ট পেয়ে যে সিদ্ধান্ত দিল মেডিকেল বোর্ড

করোনায় আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সিটিস্ক্যান করা হয় গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে। গুলশানের বাসা থেকে তাকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিশেষ নিরাপত্তায় এভার কেয়ারে নিয়ে পরীক্ষা করিয়ে আবার গুলশানের বাসায় ফিরিয়ে আনা হয়।

সিটিস্ক্যানের মূল রিপোর্ট পর্যালোচনা করে খালেদা জিয়ার চিকিৎসাপত্রে আরেকটি ওষুধ যুক্ত করেছে তার মেডিকেল টিম। শারীরিক অবস্থা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন চিকিৎসক দলের সদস্যরা।জটিল কোনো সমস্যা না হলে আপাতত বাসায় থেকেই বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসা চলবে।মেডিকেল বোর্ডে থাকা একাধিক চিকিৎসক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত বৃহস্পতিবার রাতে ভাচুর্য়ালে খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার সহধর্মিনী ডা. জোবাইদা রহমান, ঢাকার চিকিৎসকরা ছাড়াও মেডিকেল বোর্ডের সদস্য যুক্তরাষ্ট্র- যুক্তরাজ্যের চিকিৎসকরাও অংশ নেন। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, নতুন কোনো সমস্যা না হলে আপাতত বাসায় থেকেই খালেদা জিয়ার চিকিৎসা দেওয়া হবে।

মেডিকেল টিমের সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেন, আমরা বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) সিটিস্ক্যানের ফাইনাল রিপোর্ট হাতে পেয়েছি। রাতেই লন্ডনে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহধর্মিনী ডা. জোবাইদা রহমান যিনি ম্যাডামের সবকিছু তদারকি করছেন তিনিসহ দেশ-বিদেশে মেডিকেল টিমের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে আমরা পুরো রিপোর্টটি পর্যালোচনা করেছি। সবার পরামর্শ নিয়ে আরেক ওষুধ যুক্ত করা হয়েছে। চিকিৎসায় যেসব ওষুধপত্র আগে দেওয়া হয়েছে তা ঠিক আছে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. জাহিদ আরও বলেন, সিটিস্ক্যানের ফাইনাল রিপোর্টে ‘মিনিমাম ইনভোলমেন্ট’ এর কথা বলা হয়েছে। যেটা সাময়িক রিপোর্টে বলা হয়েছিল। আলহামদুলিল্লাহ ভালো রিপোর্ট। আমরা সবাইকে জানাতে চাই, সিটিস্ক্যানের রেজাল্ট খুবই মিনিমাম, নেগলিজিবল। দেশবাসীর কাছে খালেদা জিয়া দোয়া চেয়েছেন বলে জানান তিনি।

গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার করোনা পজিটিভ শনাক্ত হওয়ার পর প্রখ্যাত ‘বক্ষব্যাধি ও মেডিসিন’ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এফএম সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের টিম গুলশানের বাসায় তার চিকিৎসা শুরু করেন। ‘ফিরোজা’র বাসায় বিএনপি চেয়ারপারসন ছাড়াও আরও ৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের চিকিৎসাও সেখানে চলছে।

দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ৭৫ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে কারাগারে যেতে হয়। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর পরিবারের আবেদনে সরকার গত বছরের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে তাকে ছয় মাসের জন্য সাময়িক মুক্তি দেয়।

পরে ওই বছরের সেপ্টেম্বরে তার মুক্তির সময় আরও ছয় মাস বাড়ায় সরকার। এ বছরের মার্চে দ্বিতীয় বারের মতো ছয় মাসের মেয়াদ বাড়ানো হয়। মুক্তি পাওয়ার পর খালেদা জিয়া গুলশানে নিজের ভাড়া বাসা ফিরোজায় থেকে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তার সঙ্গে বাইরের কারও যোগাযোগ সীমিত।

ঢাকা ব্যুরো চীফ,১৬ এপ্রিল ২০২১

Share