বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিনের বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, একটি টেলিভিশনে আমাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, আমরা (জামিন দেয়ার বিষয়ে) চিন্তা-ভাবনা করছি কিনা। আমরা কেন চিন্তা-ভাবনা করব? আমি চিন্তা-ভাবনার কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছি না। এখন তিনি সাজা ভোগ করছেন। আপিল বিভাগ তার জামিনের আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন। সবই আদালতের ব্যাপার, আমাদের কেন ভাবতে হবে যে আমরা খালেদা জিয়াকে নিয়ে কী করব?… আমরা অন্ততপক্ষে এটা নিয়ে এখন ভাবছি না।
২১ জানুয়ারি মঙ্গলবার সচিবালয়ে পাবনা আইনজীবী সমিতিতে বই কেনা বাবদ ৩০ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে এ সব কথা বলেন তিনি।
কয়েক দশক পরে হলেও চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় গুলি ও সিপিবির সমাবেশে বোমা হামলার বিচার শেষ করায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
তিনি বলেছেন, ‘সোমবার দুটো রায় হয়েছে। দুটি রায়ের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিকটা হচ্ছে চট্টগ্রামের ঘৃণিত অপরাধটা ১৯৮৮ সালে হয়েছে। ৩১ বছর পর এই বিচার সমাপ্ত হল। সিপিবির সমাবেশে বোমা হামলা ২০০১ সালে হয়েছে। এর মানে ১৮ বছর পর আমরা এর বিচার শেষ করতে পেরেছি। সন্তুষ্টি প্রথমেই, যে অন্ততপক্ষে বিচারটি শেষ হয়েছে।
তিন দশক আগে চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার জনসভার আগে গুলি চালিয়ে ২৪ জনকে হত্যার মামলায় গত সোমবার পাঁচ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
এদিকে প্রায় দুই দশক আগে ঢাকার পল্টন ময়দানে সিপিবির সমাবেশে বোমা হামলার ঘটনায় দীর্ঘ প্রতীক্ষিত বিচার শেষে হরকাতুল জিহাদের (হুজি) ১০ জঙ্গির ফাঁসির রায় এসেছে।
আনিসুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেবল আইনের শাসনই প্রতিষ্ঠা করেননি, তা সুদৃঢ় করার জন্য যে সব পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন, সেগুলোও নিয়েছেন। তারই একটি অংশ হল দ্রুত এ সব মামলার বিচার শেষ করা। আমরা এটুকু বলতে পারি যে,এই দুটো বিচারের মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত হল, অপরাধীরা কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়, যার যতই ক্ষমতা থাকুক না কেন…। সাময়িকভাবে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে কিছুদিনের জন্য হয়ত ‘আইনের ঊর্ধ্বে আছেন’ বলে একটা ইলুশনের মধ্যে থাকতে পারেন অপরাধীরা, শেষ পর্যন্ত তাদের আইনের আওতায় আসতেই হবে।
বিচার শেষ করতে দীর্ঘ সময় লাগল কেন? জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সালে যখন মামলায় গতি আনার প্রক্রিয়া চলছিল, তা শেষ হওয়ার আগেই সরকার পরিবর্তন হয়। এই মামলাগুলো যাতে বিচারের মুখ না দেখে সেই ব্যবস্থা করেছিল বিএনপি সরকার। তারপর শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে সরকার গঠন করলেন, তখন থেকে এটা আবার তদন্তে। আবার নতুন করে সাক্ষীসাবুদ দেয়ার ব্যবস্থা ও তদন্ত করে এই সব মামলাগুলো চালানো- সে জন্য একটু দেরি হয়েছে।
রায় কবে নাগাদ কার্যকর হবে? এ প্রশ্নে তিনি বলেন, আদালতের কিছু বাধ্যবাধকতা আছে। এখানে ফাঁসি দেয়া হয়েছে। এটা অটোমেটিক্যালি হাইকোর্ট বিভাগে কনফার্মেশনের জন্য যাবে। হাইকোর্ট বিভাগ শুনানি শেষ করলে তারপর রায় কার্যকর হবে।
চাঁদপুর টাইমস রিপোট