ফুলও ফিরিয়ে দিলেন খালেদা ।১৫ আগস্ট প্রথম প্রহর (রোববার দিবাগত রাত) ১২টা ১ মিনিটে গুলশানে নিজের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ছিলেন তিনি।
আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন- জন্মদিনের প্রথম প্রহরে কেক কাটবেন না। এবার নেতাদের আনা ফুলও ফিরিয়ে দিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ৭২ তম জন্মদিন উপলক্ষে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু মৌখিক শুভেচ্ছা জানান।
এর আগে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের বেশ কিছু সংখ্যক নেতা ফুল নিয়ে গুলশান কার্যালয়ে ঢোকার চেষ্টা করেন। কিন্তু খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে আগেই নির্দেশ দেওয়া ছিল, কেউ যেন ফুল নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতে না পারে।
ফলে ফুল নিয়ে আসা নেতাদের কেউ কেউ কার্যালয়ের বাইরে ফুল রেখে ভেতরে ঢোকার অনুমতি পান। কেউ কেউ আবার সে সুযোগও পান নি।
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকীর দিন ১৫ আগস্ট নিজের জন্মদিন পালন করে গত দুই যুগ ধরে বাংলাদেশের রাজনীতিতে সমালোচনার শিকার হয়েছেন খালেদা জিয়া।
তার এই জন্মদিন পালন জামায়াত ও ২০ দলীয় জোটে থাকা নাম সর্বস্ব কয়েকটি রাজনৈতিক দল ছাড়া কেউ ভাল চোখে দেখেনি। নানা মহল থেকে বার বার অনুরোধ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর শাহাদাৎ বার্ষিকীর দিন যেন জন্মদিন পালন না করেন খালেদা জিয়া।
কিন্তু বিগত বছরগুলোতে কারো অনুরোধই রাখেননি তিনি। সব ধরনের অনুরোধ উপেক্ষা করে জন্মদিনের প্রথম প্রহরে ঘটা করে কেক কেটেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন।
কিন্তু এবার জাতীয় ঐক্য’র ডাক দেওয়া খালেদা জিয়া নিজে থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জন্মদিনে কেক কাটবেন না তিনি।
অবশ্যই বিএনপির নেতারা বলার চেষ্টা করছেন- বঙ্গবন্ধুর শাহাদাৎ বার্ষিকী বা জাতীয় ঐক্য নয়। বরং দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা, বিএনপির নেতা-কর্মীদের উপর নিপীড়ন-নির্যাতন এবং জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের হামলায় সংকটাপন্ন পরিস্থিতিতে কেক কেটে জন্মদিন পালন থেকে বিরত রয়েছেন খালেদা জিয়া।
গত দুই যুগ ধরে ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার ‘জন্মদিন’ উদযাপন করা হলেও তার আরও কয়েকটি জন্মদিনের হদিস পাওয়া যায়। তার জন্ম সাল নিয়েও দুই ধরনের তথ্য রয়েছে।
বাংলা পিডিয়াসহ খালেদা জিয়ার জীবনীর ওপর রচিত কয়েকটি গ্রন্থে তার জন্ম বছর ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট দেখানো হয়েছে।
১৯৮১ সালে ৩০ মে রাষ্ট্রপতি থাকা অবস্থায় জিয়াউর রহমান নিহত হলে রাজনীতিতে পা রাখেন তার স্ত্রী খালেদা জিয়া। প্রথমে দলের ভাইস চেয়ারম্যান এবং তিন বছর পর চেয়ারপারসন হন তিনি।
এরশাদবিরোধী আন্দোলনে খালেদা জিয়া বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন, ‘ক্যান্টনমেন্টে জন্ম নেওয়া দল’ বিএনপির জনভিত্তি তৈরি করে দেন খালেদাই।
১৯৯১ সালে সংসদ নির্বাচনে বিএনপি বিজয়ী হলে বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হন খালেদা। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনের পর কয়েক দিনের জন্য প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনি।
২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট জয়ী হলে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী হন খালেদা জিয়া। ২০০৮ সালের নির্বাচনে হারের পর সংসদে বিরোধী দলীয় নেতার দায়িত্ব পালন করেন তিনি।(বাংলানিউজ)
নিউজ ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৯:৩৪ পি,এম ১৫ আগস্ট ২০১৬,সোমবার
ইব্রাহীম জুয়েল