দুই দিনের সফরে ঢাকায় রয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। রোববার (২২ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকায় পৌঁছেই ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। বিকেলে সোনারগাঁও হোটেলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন।
এর পর রাত ৮টা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেন। সবশেষ তিনি সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদকে সাক্ষাত দেন। হঠাৎ করেই তিনি বিশেষ বিমানে বাংলাদেশে এসে ব্যস্ত হয়ে পড়ায়। এ সফরের রাজনৈতিক গুরুত্ব বেড়েছে কয়েকগুণ।
প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা সুষমা স্বরাজ ও খালেদা জিয়ার বৈঠকও অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তাই রাজনৈতিক অঙ্গনে তাদের এই বৈঠকে কী ঘটেছে তা জানার আগ্রহ সবার মাঝেই।
বৈঠক শেষে হোটেলটির লবিতে সাংবাদিকদের কাছে ব্রিফ করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন। আগামী নির্বাচন সম্পর্কে আলোচনা করেছেন এবং এ বিষয়ে যেসব সমস্যা রয়েছে তা তুলে ধরেছেন। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ সমস্যাগুলো শুনেছেন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের দাবিতে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করা বিএনপি এখন ‘সহায়ক সরকারের’ অধীনে আগামী নির্বাচনের দাবি করছে। শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী রেখে সেই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় বলে অভিযোগ তাদের।
খালেদা জিয়ার মুখে ‘সমস্যাগুলো’ শুনে সে সব বিষয়ে সুষমা স্বরাজ কিছু বলেছেন কি না, তা জানাননি মির্জা ফখরুল ইসলাম।
তিনি বলেছেন, সব দলের অংশগ্রহণে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ‘সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য’ হবে বলে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। ভারত একটি গণতান্ত্রিক দেশ। তারা (ভারত) চান যে, অন্যান্য দেশগুলো বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশগুলোতে গণতান্ত্রিক চর্চা থাকুক এবং গণতান্ত্রিকভাবেই সরকার নির্বাচিত হোক।
এখানে নির্বাচন যেন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ হয় সেটাও তিনি আশা করেন এবং সকল দলের অংশগ্রহণে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়, সেটা তিনি আশা করেন। একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশন যেন তার দায়িত্ব পালন করতে পারেন সেটাও তিনি আশা করেন।
সোনারগাঁও হোটেলের অষ্টম তলায় এই বৈঠকে খালেদা জিয়ার সঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ছাড়াও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য রিয়াজ রহমান ও সাবিহউদ্দিন আহমেদ ছিলেন।
‘অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ’ পরিবেশে এই বৈঠক হওয়ার কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, আলোচনায় উভয় দেশের যে সম্পর্ক তাকে আরও শক্তিশালী করার কথা বলা হয়েছে।
রাজনৈতিক আলোচনা ছাড়াও রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কথা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, তিনি (খালেদা জিয়া) বলেছেন, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান হতে হবে। তাদের সাময়িক আশ্রয় দেয়া হয়েছে, কিন্তু তাদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে এবং তাদের নিরাপদ একটা অবস্থা তৈরি করতে হবে।
এক সংবাদিকদের এক জিজ্ঞেসায় ফখরুল বলেন, এ সময় তিনি খালেদা জিয়ার শরীরের খোঁজখবরও নেন।
সুষমা স্বরাজের সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসনের এটি দ্বিতীয় বৈঠক। ২০১৪ সালের মে মাসে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে সুষমা প্রথম বিদেশ সফরে ঢাকা এলে এই হোটেলেই তার সঙ্গে দেখা করেছিলেন খালেদা।
ওই বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলীর দেয়া নৈশভোজে যোগ দেন সুষমা স্বরাজ।
নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ ১২ : ২০ পিএম, ২৩ অক্টোবর, ২০১৭ সোমবার
এইউ