চাঁদপুরে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির চাল বরাদ্দ ১ হাজার ৫শ ৯৮ মে.টন

চাঁদপুর জেলায় ৫৩ হাজার ২ শ ৭৭ জনের মধ্যে এ দুমাসে ৫১ হাজার ৪শ ৫১ জন সুবিধাভোগী চাল পাবেন। আর এ জন্যে ১ হাজার ৫শ ৯৮ মে.টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে ২৪ ফেব্রুয়ারি জানা গেছে ।

এদিকে হাজীগঞ্জ উপজেলার পৌরসভার সহ ১২টি ইউনিয়নের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। আসন্ন রমজান উপলক্ষে এ উপজেলার বারোটি ইউনিয়নে ও পৌরসভায় ৭ হাজার ২ শ ৬৬ টি কার্ডধারী সাধারণ গরীব ও অসহায় পরিবারের সদস্য রয়েছে ।

প্রত্যেকটি কার্ড এর বিপরীধে প্রতিবার ১৫ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি করে চাল ক্রয় করতে পারবে । এতে ২শ ১৮ মে. টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তবে ভিজিএফ কাদ্য তালিকায় যাদেও নাম রয়েছে -তারা এ সুবিধা পাবেন না। উপজেলা খাদ্য অফিস সূত্রে ১৮ ফেব্রুয়ারি এ তথ্য জানানো হয়েছে ।

প্রাপ্ত তথ্য মতে, উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপজেলা খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির বাস্তবায়নের আহবাযক ও স্ব স্ব ইউপি সচিবগণ সদস্য -সচিব হিসেবে দায়িক্ব পালন করছেন। মার্চ-এপ্রিল এ দুমাসে কার্ড প্রতি ৩০ কেজি চাল পাবেন।

খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। রোববার ৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।

খাদ্য বিভাগের গৃহীত পদক্ষেপ তুলে ধরে বলা হয়- মজুত ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে চলতি অর্থবছরে আরও ৯ লাখ টন খাদ্যশস্য আমদানির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইউরিয়া সারের স্টক প্রায় ৮ লাখ টনে উন্নীত করা হয়েছে, যা মার্চ মাস পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। সারের মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে ভর্তুকি দেয়া অব্যাহত রয়েছে। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এ বাবদ ২৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি বাবদ চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে ৮ হাজার ৫৯ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। মূলত ওএমএস, টিসিবি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি সারা বছর চলমান রাখার লক্ষ্যে বর্ধিত হারে বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এছাড়াও অধিকতর খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে করণীয় সম্পর্কে বলা হয়, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রকৃত চাষীদের ন্যায্য মূল্যে প্রাপ্তি নিশ্চিত করা, মাঠ পর্যায়ে উৎপাদিত পণ্য সরাসরি ভোক্তার কাছে পৌঁছে দেওয়ার কার্যকর পদ্ধতি দ্রুত খুঁজে বের করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে অনলাইন ভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কিংবা অন্যান্য উপায়ে যেসব ব্যবসা সফলভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা অনুসরণে চাষীদের জন্য একটি ব্যবসা মডেল তৈরি করার বিষয়টি বিবেচনা করা।

চাল, ডাল, তেল, আলু ইত্যাদি নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের বার্ষিক চাহিদা দেয়ার সঙ্গে বর্তমান মজুতের তুলনাভিত্তিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে মধ্যমেয়াদি চাহিদার প্রক্ষেপণ এবং এসব পণ্য সরবরাহের রূপরেখা তৈরি করা।
চাল,আলু,পেঁয়াজসহ কৃষি পণ্যের ক্ষেত্রে উৎপাদন পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সাময়িক ভিত্তিতে তাৎক্ষণিক শুল্ক হ্রাস অব্যাহতির বিষয়টি বিবেচনায় নেয়া। এদিকে সরকার খাদ্যদ্রব্যের পাশাপাশি কৃষি উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় অন্য উপকরণ সরবরাহের রূপরেখাও তৈরি করা। কৃষি ও খাদ্যদ্রব্য মজুত সংরক্ষণে সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গুদাম ও হিমাগারের সংখ্যা বৃদ্ধি করা। বর্তমানে সারা দেশে ওএমএসের ৯১২টি কেন্দ্রে সপ্তাহে পাঁচ দিন চাল-আটা বিক্রি করা হয়। এসব কেন্দ্রে ডিলার সংখ্যা দু’ হাজার ৪২৬। জেলা শহরে ৪৫২ জন এবং মহানগর ও শিল্পাঞ্চল এলাকায় ডিলার রয়েছেন ৪৬০ জন।

পাঁচ বছরের বেশি কেউ ডিলার থাকতে পারবেন না : এবার পাঁচ বছর পর পর ডিলারশিপ পরিবর্তনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ জন্য ওএমএস ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি নীতিমালা সংশোধন করছে সরকার। খসড়া ওএমএস নীতিমালায় বলা হয়েছে, নতুন নিয়মে চাল-আটা সংগ্রহের জন্য কমপক্ষে তিন দিন ডিলারকে গুদামে উপস্থিত থাকতে হবে। প্রতিবছর ডিলারশিপ নবায়ন করতে হবে।

মহানগর এলাকায় ডিলারশিপ দেয়া হবে ওএমএস কেন্দ্রের দেড় গুণ। জেলা শহরে দেয়া হবে কেন্দ্রের ১.৩ শতাংশ। প্রতি উপজেলায় ডিলার থাকবেন তিনজন। আপতকালে তাঁরা ওএমএস বিতরণ করবেন। অনিয়মের অভিযোগে বিভাগীয় কমিটি ডিলারশিপ বাতিল করতে পারবে। এ বিষয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাবিবুর রহমান হোছাইনী বলেন, ওএমএস ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি আরো স্বচ্ছ, গতিশীল ও জনবান্ধব করতে নীতিমালা সংশোধন করা হচ্ছে। সারা দেশে নিয়োজিত ১২ হাজার ৪২৬ জনের ডিলারশিপ চলতি সপ্তাহে বাতিল হতে পারে। পরে ডিলার নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়া হবে।

আবদুল গনি
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
এজি

Share