কাতার বর্তমানে বাংলাদেশের দ্বিতীয় শীর্ষ শ্রমবাজার। এ দেশে বাংলাদেশের শ্রমিকেরা বেশ সুনামের সঙ্গে কাজ করছেন। তাই এ দেশে
কাতারের নির্মাণ খাতের ওই প্রতিষ্ঠানের নাম কিউডিভিসি। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১৩০০ বাংলাদেশি কর্মী বেশ সুনামের সঙ্গে কাজ করছেন। তাঁদের কাজের দক্ষতায় খুশি নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ থেকে আরও ৭৪৫ জন কর্মী আনতে আগ্রহী। ইতিমধ্যে কর্মী নেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু করেছে। এসব কর্মীকে কাতারে আসতে কোনো অর্থ খরচ করতে হবে না। তাঁদের যাবতীয় ব্যয়ভার বহন করবে নিয়োগকারী এই প্রতিষ্ঠান।
জানা গেছে, ঢাকায় আল ইসলাম ওভারসিজ নামের একটি রিক্রুটিং প্রতিষ্ঠানকে নির্ধারিত জনবলের চাহিদা জানিয়ে চিঠি দিয়েছে কিউডিভিসি কর্তৃপক্ষ। এসব কর্মীকে যোগ্যতা ও শ্রেণিভেদে সর্বনিম্ন ৯০০ কাতারি রিয়াল থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার কাতারি রিয়াল পর্যন্ত বেতন দেওয়া হবে।
প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, নতুন করে আনা এসব কর্মীর থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করবে কিউডিভিসি। দুই বছরের নবায়নযোগ্য চুক্তিতে দৈনিক আট ঘণ্টা কাজ করানো হবে। তবে কাতারের শ্রম আইন অনুযায়ী তাঁদের জন্য অতিরিক্ত কাজ করারও সুযোগ রয়েছে। একই সঙ্গে কাতারের শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের চিকিৎসা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে।
কাতারনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান কিউডিভিসির পক্ষ থেকে আল ইসলাম ওভারসিজকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, সব কর্মীর উড়োজাহাজ-ভাড়া পরিশোধ করবে কিউডিভিসি কর্তৃপক্ষ। আগ্রহী কর্মীদের কাজ থেকে নিয়োগ খরচের নামে কোনো ধরনের ফি নেওয়া যাবে না। ইতিমধ্যে কাতারের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে বিষয়টি প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে কাতার দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, কিউডিভিসি কোনো ধরনের খরচ ছাড়াই বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেবে
বলে ইতিমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে। কোনো ধরনের খরচের কথা বলে কর্মীদের কাছ থেকে এক টাকাও নেওয়া যাবে না। বিষয়টি সম্পর্কে কাতারে আসতে আগ্রহী কর্মীদের সচেতন থাকতে হবে। কারণ, কিউডিভিসি ও আল ইসলামের মধ্যকার চুক্তিতে বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
কাউন্সিলর বলেন, ‘কাতারে নিউ অরবিটাল হাইওয়ে, দোহা মেট্রো রেড লাইন, শেরাটন পার্কসহ অনেক বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে কিউডিভিসি। আমি তাদের শ্রমিক ক্যাম্প পরিদর্শন করেছি। আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসংবলিত এই কোম্পানির আবাসিক শ্রমিক ক্যাম্প খুবই ভালো মানের। আমরা চাই, বিনা মূল্যে যেন কর্মীরা কাতার আসতে পারেন। কোনো মধ্যস্বত্বভোগীর কারণে যেন শ্রমিকেরা এই সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হন।’
সরকারি হিসাবমতে, বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে মোট জনশক্তি রপ্তানির ২২ শতাংশের গন্তব্যস্থল কাতার। শীর্ষ শ্রমবাজার ওমানের পরই কাতারের অবস্থান। প্রতি মাসে কাতার থেকে বাংলাদেশে প্রবাসী আয়ে (রেমিট্যান্স) যোগ হচ্ছে ২৫০ কোটি টাকা।
বর্তমানে কাতারে বাংলাদেশি জনসংখ্যা ২ লাখ ৭৫ হাজার। ২০১৪ সালে কাতারে এসেছেন ৮৭ হাজার ৫৭৫ জন। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এসেছেন ৭৫ হাজার ৭ জন। (প্রথম আলো)
আপডেট : ০৪ : ০২ পিএম, ২০১৫ ১৬ অক্টোবর রোববার
ডিএইচ/২০১৫।