দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘শুধু গাছ লাগালেই হবে না সন্তান লালন পালন করার মতো করে বড় করতে হবে। তাহলেই আপনি গাছের ফল খেতে পারবেন। আমি মাঝে মধ্যে খবর নেব, কে কয়টি গাছ লাগিয়েছে এবং কার গাছের কি অবস্থা। মুজিববর্ষে আমরা কোটি গাছ লাগানোর কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলাম। আপনারা প্রত্যেকে তিনটি করে গাছ লাগালে কোটি গাছ হবে।’
সোমবার ১৫ জুন বিকেলে বৃক্ষরোপণ দিবস হিসেবে উপলক্ষে বাংলাদেশ কৃষক লীগের পক্ষ থেকে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী ও বর্তমান কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বক্তব্য রাখেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে সংযুক্ত হন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের যত নেতাকর্মী আছেন, প্রত্যেকে তিনটি করে গাছ লাগাবেন। প্রতি বছর পহেলা আষাঢ় কৃষক লীগের সঙ্গে অনুষ্ঠান করে গাছ লাগাই। কিন্তু এবার করোনার কারণে আপনাদের সঙ্গে গাছ লাগাতে পারলাম না। তবে দলীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে আমি গণভবনে কয়েকটি গাছ লাগাব। উপকূলের দুর্যোগ ঠেকাতে হলে গাছ লাগানোর কোনো বিকল্প নেই।’ সেখানে প্রচুর পরিমাণে ঝাউ গাছ লাগানোর কথা বলেন তিনি।
কৃষি ক্ষেত্রে গবেষণার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে দেখি কৃষির গবেষণার জন্য একটি টাকাও নেই। সঙ্গে সঙ্গে আমি গবেষণা করার জন্য থোক বরাদ্দ দেই। এরপর থেকে গবেষণার জন্য আমরা আলাদা বরাদ্দ রাখি। গবেষণার ফলেই আজ আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে পেরেছি। বিভিন্ন প্রকার ফল আজ বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে চাষ হচ্ছে। মানুষ এখন প্রচুর ফল খাচ্ছে। এমনকি আমাদের দেশের ফল বিদেশে রফতানিও হচ্ছে। আমরা আর চাই না খাদ্যের জন্য কারও কাছে হাত পাতা লাগুক। গবেষণার ফলেই আজ বন্যা, খরা ও লবণ সহিষ্ণু ধান উৎপাদন হচ্ছে।’
কৃষিতে প্রণোদনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে সারা বিশ্বেও খাদ্য ঘাটতির আশঙ্কা রয়েছে। এ জন্য আমরা আগেই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। কৃষি খাতে সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা দিচ্ছি। টাকার অভাবে কৃষক ফসল ফলাতে পারবে না, এটা যেন না হয়। আর খাদ্যেরও যেন অভাব না হয়। প্রয়োজনে খাদ্য দিয়ে অন্য কোনো দেশকে যেন আমরা সহযোগিতা করতে পারি। বোরো ধান যাতে কৃষকের গোলায় ওঠে এ জন্য আমি ছাত্রলীগকে নির্দেশ দিয়েছিলাম। ধান কাটার জন্য সারাদেশে যেন উৎসবের আমেজ শুরু হয়েছিল। ছাত্রলীগ, কৃষক লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ প্রত্যেকে কৃষকের ধান কাটার জন্য যে ভূমিকা রেখেছেন সে কারণে আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই।’
কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ প্রসঙ্গে সরকারপ্রধান বলেন, ‘কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ করতে হবে। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কৃষককে উৎপাদন করতে হবে। শুধু বাইরে থেকে কৃষিযন্ত্র কেনা নয়। স্থানীয়ভাবে আমাদের কৃষিযন্ত্র তৈরি করতে হবে। আমাদের যে কারখানা আছে সেখানে কৃষিযন্ত্র বানাতে হবে। প্রয়োজনে কিছু পার্টস আমদানি করা যেতে পারে। কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণের জন্য তিন হাজার ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছি। স্থানীয়ভাবে কৃষিযন্ত্র তৈরির ওপর তিনি জোর দিতে বলেন সংশ্লিষ্টদের।’
বার্তা কক্ষ, ১৬ জুন ২০২০
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur