চাঁদপুরে নবাগত পুলিশ সুপার মো.মাহবুবুর রহমান পিপিএম (বার)’র সাথে কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির নেতৃবৃন্দের মতবিনিময় সভা শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১ টায় জেলা পুলিশের আয়োজনে চাঁদপুর পুলিশ লাইনস মিলনাতনে অনুষ্ঠিত হয় ।
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মো.মাহবুবুরে রহমান পিপিএম (বার)।
তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন,‘ চাঁদপুরের বিদায়ী এসপি জিহাদুল কবির আমার বন্ধু। তিনি আমাকে দু’টো কথা বলেছিলেন। প্রথমত :এখানে অস্ত্র নেই,দ্বিতীয়টি হচ্ছে কমিনিটি পুলিশিং এর কার্যক্রম বেশ জোড়ালো। বর্তমান সময় তথ্যের যুগ। ১৯৬০ সালে প্রথম পাশ্চাত্যে বিশ্বে শুরু হয়। কেউ একা একা কাজ করতে পারে না। এখানকার মানুষ স্বর্তস্ফূর্ত ভাবে যে কোনো কাজে অংশগ্রহণ করে সহযোগিতা করে। যেটা আমি এর আগে কোনো জেলায় দেখি নি।’
এসপি আরো বলেন,‘১৪শ’ পুলিশ সদস্যদের সাথে ১৯ হাজার কমিউনিটি পুলিশিং কর্মকর্তা রয়েছে বলেই চাঁদপুরের আইন শৃঙ্খলা যথেষ্ট ভালো। ৬টি চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যা কমিউনিটি পুলিশিং ক্রাইম কন্ট্রেলের ক্ষেত্রে তরান্বিত ভূমিকা রাখবে। সিপিওদের ঘন ঘন বদলী না হয়, সেদিকে নজর রাখতে হবে। এছাড়া চাঁদপুরে নারীর অংশগ্রহণ আরো বাড়াতে হবে। পুলিশ অফিসার ও সদস্যদের কাজ করার ক্ষেত্রে উদ্যমতা নিয়ে কাজ করতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘ চেষ্টা করবো কৌশলগত ও প্রায়োগিকতাকে কাজে লাগিয়ে কাজ করে যাবে। জাবেদ পাটওয়ারী স্যারের বাড়ি চাঁদপুওে । তাই আমাদের আরো সচেষ্ট হয়ে কাজ করতে হবে। আমাদের দৃঢ় সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ করতে হবে। সিনিয়র সিটিজেন, রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব, সাংবাদিকসহ সকলকে নিয়ে মাদকের ও গ্যাং কালচারের বিরুদ্ধে কাজ করতে হবে। সবার সাথে বন্ধুত্ব থাকবে কারো সাথে শত্রুতা নয়।’
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, পৌর মেয়র ও জেলা কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির উপদেষ্টা নাছির উদ্দিন আহমেদ
বলেন, ‘সকলের সহযোহিতায় সমাজ সমৃদ্ধ হয়। তাই পুলিশ প্রশাসনের সাথে কমিউনিটি পুলিশিং ও জনগণের সকলের সহযোগিতায় আজ চাঁদপুরসহ সারাদেশের কাছে দৃষ্টান্ত। জাতির পিতা আমাদের একটি রাষ্ট্র, পতাকা, সংবিধান দিয়ে গেছেন।
তিনি মাত্র সাড়ে ৩ বছরের একটি স্বাধীন রাষ্ট্রকে পরিচালনার জন্য সবকিছু করে দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বির্নিমাণে কাজ করে যাচ্ছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় কমিউনিটি পুলিশিং এর ভূমিকা রাখতে হবে।’
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির উপদেষ্টা আলহাজ ওচমান গণি পাটওয়ারী বলেন,‘আজ জননেত্রী শেখ হাসিনার সকলকে ম্যাসেজ দিয়েছেন, যাতে কোনো অবৈধ কর্মকান্ডকে আশ্রয়-পশ্রয় দেয়া না হয়। বর্তমানে সমাজ মাদকে সয়লাব। তাই পুলিশ সুপার মহোদয় এ বিষয়ে কোনো ছাড় দিবেন না বলে আমি মনে করি। সরকার আমাদের নদীভাঙ্গন থেকে রক্ষা করছে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে। পুলিশ স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে শুরু করে অদ্যাবধি কাজ করে যাচ্ছে। যে কোনো কাজে আমরা পুলিশের সহযোগি হয়ে কাজ করবো।’
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির উপদেষ্টা আবু নঈম দুলাল পাটওয়ারী বলেন,‘পুলিশ ও কমিউনিটি পুলিশিং জনতাকে সাথে নিয়ে সমাজ থেকে মাদকে দূর করতে হবে। মাদক সমাজের সকল সন্ত্রাসী কাজের মূল হিসেবে কাজ করে। তাই আমাদের যুব সমাজকে মাদকের ছায়া থেকে দূরে রাখতে হবে। এ জন্য অভিভাবকদের বিশেষ ভূমিকা রাখতে হবে।’
স্বাগত বক্তব্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মো.মিজানুর রহমান বলেন,‘১৯৯৬ সালে এ জেলায় কমিউনিটি পুলিশিং এ যাত্রা শুরু হয়। সে থেকে আজ পর্যন্ত ১৯ হাজার ব্যাক্তি কমিউনিটি পলিশিং কমিটির সাথে যুক্ত হয়েছে। সকলের ফোন নাম্বারসহ ফাইল রয়েছে যা অনেক সংগঠনের জন্য দৃষ্টান্ত।’
জেলা কমিউনিটি পুলিশিং এর সভাপতি ডা.এসএম সহিদ উল্যাহর সভাপতিত্বে ও কচুয়া উপজেলা সার্কেল সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো.রাসেল শেখের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন জেলা কমিউনিটি পুলিশিং’র সহ-সভাপতি সুভাষ চন্দ্র রায়,তমাল কুমার ঘোষ, কাজী শাহাদাত, চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইসচার্জ মো.নাসিম উদ্দিন,চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক লক্ষণ চন্দ্র সূত্রধর,পৌর কমিউনিটি পুলিশিং’র সভাপতি বাবুল শেখ,সদর উপজেলার সভাপতি সালেহ মো.জিন্নাহ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন পুলিশ লাইনস জামে মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ আব্দুস সালাম। গীতা পাঠ করেন কচুয়া উপজেলা কমিউনিটি পুলিশিং এর সাধারণ সম্পাদক প্রণব রায়। ডা.এম এ গফুর, ডা. রুহুল আমিন ও আবুল কালাম পাটওয়রীসহ কমিউনিটি পুলিশিং এর সাথে সম্পৃক্ত যে সকল ব্যাক্তি পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছেন, তাতের রুহের আত্মার মাগফিরাত কামনায় এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯