কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ নিয়ে সৃষ্ট ঘটনাকে দুঃখজনক বলে অভিহিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘অক্সফোর্ড থেকে শুরু করে সারাবিশ্বে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। অথচ এখানে উদ্ভট কথা বলে অযথা কিছু মানুষের জীবন পর্যন্ত নিয়ে নেয়া হলো। এটা খুবই দুঃখজনক।’
রোববার (১০ এপ্রিল) সকালে ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জের তেঘরিয়া ইউনিয়নের রাজেন্দ্রপুরে নবনির্মিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার উদ্বোধনকালে এ কথা জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কয়লার একটা কার্গো ডুবে যাওয়ার পর অনেকে বললো যে, পানি নাকি দূষিত হয়ে গেছে। ফিল্টারে পানি পরিশোধনে কয়লা ব্যবহার হয়। অন্যদিকে, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ছাই সিমেন্ট কারখানায় ব্যবহার করা হয়। সিমেন্ট কারখানাগুলো এই ছাই নিয়ে যাচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প গ্রহণ করতে গেলেই এক শ্রেণির লোক পরিবেশ রক্ষার জন্য তৎপর হয়ে ওঠেন। তারা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র করতে দেবে না। প্রথমবার যখন আমি ছিয়ানব্বই সালে ক্ষমতায় ছিলাম, তখনই দিনাজপুরে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করি। সেখানে দুটো বিদ্যুৎকেন্দ্র আছে, তৃতীয়টার কাজ চলছে। এলাকার কোনো ক্ষতি হয়নি বরং জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ধান-পান হচ্ছে, গাছপালা হচ্ছে- সব হচ্ছে। মানুষ বসবাস করছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা দ্রুত বিদ্যুৎ উৎপাদন করে মানুষকে স্বস্তি দিয়েছি। এখন সেই উৎপাদনে বাধা দেয়ার চেষ্টা হচ্ছে, অথচ দেশের উন্নয়নের জন্যই এটা করা দরকার।’
প্রসঙ্গত, বাঁশখালী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পক্ষে বিপক্ষে সংঘর্ষে গত সোমবার (৪ এপ্রিল) কমপক্ষে চার গ্রামবাসী নিহত হয়েছে। এরা সবাই গুলিবিদ্ধ। এ ঘটনার পর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, প্রকল্প সরিয়ে নেয়া যেতে পারে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর আজকের ভাষণে এটা স্পষ্ট হলো যে, যতো বাধাই আসুক সরকার বাঁশখালীতে ওই স্থানেই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে অনড় থাকছে।
এর আগে কারাগার প্রাঙ্গণে পৌঁছে প্রধানমন্ত্রী সুইচ টিপে ও ফিতা কেটে কারাগারের উদ্বোধন করেন এবং কারাগারের বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়র সিনিয়র সচিব মো. মোজাম্মেল হক খান ও আইজি প্রিজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন।
||আপডেট: ০৬:৩৭ অপরাহ্ন, ১০ এপ্রিল ২০১৬, রোববার
চাঁদপুর টাইমস /এমআরআর