মতলবে ক্লিনিক ম্যানেজারের ‘ভুল ইনজেকশন’ পুশে নারীর মৃত্যু

চাঁদপুরেের মতলব দক্ষিণ থানা রোডে এ্যাপোলো ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টার নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভুল চিকিৎসায় ফাতেমা (৬৫) নামে এক নারী রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মৃত নারীর বাড়ি চাঁদপুর সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামের বরদিয়া আড়ং বাজার সংলগ্ন ঢালী বাড়ি।

মৃত নারীর পরিবারের অভিযোগ, ‘এ্যাপোলো ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভুল ইনজেকশন দেয়ার কারনে তার মৃত্যু হয়েছে। থানা পুলিশ আসার আগেই নারীর লাশ সরিয়ে নেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করায় তরিগরি করে নারীর লাশ ইজিবাইকে করে নিয়ে যায় নিজ বাড়িতে।’

হাসপাতাল ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ‘গত দুদিন আগে গ্যাস্টিকের সমস্যা নিয়ে ওই রোগীকে মতলব দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরবর্তীতে প্রাইভেট ডাক্তার দেখানোর জন্য ২৭ সেপ্টেম্বর (সোমবার) এ্যাপোলো ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নেওয়া হলে সেখানে ঢাকা থেকে আগত ডাঃ কামরুল হাসানকে দেখানো হলে তিনি পূর্বের চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র না দেখেই ইনজেকশন দেওয়ার পরামর্শ দেন ও বেশ কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করাতে বলেন।’

ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ম্যানেজার শাহাদাত ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ইনজেকশন পুশ করার সাথে সাথে রোগী লুটিয়ে পড়লে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে নেওয়া হয়।

মৃতের মেয়ে আমেনা জানায়,‘ডাক্তার দেখানোর জন্য সকাল ৯:৩০ এ এ্যাপোলো ডায়াগনস্টিক সেন্টার নিয়ে যাই পাইভেটে বড় ডাক্তার দেখানোর জন্য অপেক্ষায় থাকি দুপুর ১২টার দিকে ডাক্তার আসেন ডাক্তারের পরামর্শে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ম্যানেজার ২টার দিকে ইনজেকশন পুশ করে সেখানে ইনজেকশন দেওয়ার সাথে সাথে আমার মা মারা যান।’

তিনি আরও বলেন, ‘ডাক্তার ইনজেকশন দেওয়ার কথা বললে আমরা বার বার বলেছি আমাদের আগের চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র গুলো দেখেন সেগুলো না দেখেই ইনজেকশন দিয়ে দেন এই ইনজেকশন দেওয়ার কারনেই আমার মা মারা যায়।’

মৃতের স্বজনরা বলেন, এ্যাপোলো ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারে ভুল ইনজেকশন দেওয়ার ফলে তাৎক্ষনিক মৃত্যু ঘটে।

এ ব্যাপারে ডাঃ কামরুল হাসান বলেন, ‘রোগী আসার পর আশঙ্কাজনক অবস্থা দেখে গ্যাস্টিক ও পেট ব্যাথার ইনজেকশন দেওয়ার জন্য বলেছি অন্য কোন ইনজেকশন দিয়েছে কিনা আমি জানি না তবে গ্যাস্টিকের ইনজেকশন দেওয়ার ফলে মৃত্যু হতে পারে না। এটা দুঃখজনক ঘটনা।’

এ ব্যাপারে ম্যানেজার শাহাদাত বলেন, ‘গ্যাস্টিকের ইনজেকশন আমি দিয়েছি কিন্তু রোগীর অবস্থা আগেই খারাপ ছিল কী কারণে মারা গেছে তা জানি না।’

মতলব দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে কতব্যরত ডাঃ নিগার সুলতানা বলেন, ‘মৃত অবস্থায় রোগীকে আনা হয়েছে।অভিযুক্ত এ্যাপোলো ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারের বিরুদ্ধে এর আগেও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।’

থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন মিয়া বলেন, ‘এ ব্যাপারে কোন অভিযোগ করেনি।তবে সংবাদ পাওয়ার পর হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হলে সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি।’

স্টাফ করেসপন্ডেট

Share