শিক্ষাঙ্গন

সংসদ টিভিতে ৬ষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির ক্লাস সম্প্রচার হবে

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ‘সংসদ টেলিভিশনে’ ৬ষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণিরবিষয়ভিত্তিক শ্রেণি কার্যক্রম প্রচারের সিন্ধান্ত নিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)।

পরীক্ষামূলকভাবে আগামি মঙ্গল, বুধ ও বৃস্পতিবার শ্রেণি কার্যক্রম প্রচার করা হবে। পরবর্তীতে প্রতিদিন ৭টি করে প্রতিসপ্তাহে ৩৫টি ক্লাস প্রচার করা হবে। শিক্ষার্থীরা বাসায় বসেই টেলিভিশনে নিজ নিজ বিষয়ের ওপর অভিজ্ঞ শিক্ষকদের কাছ থেকে পাঠলাভ করতে পারবে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ‘এ টু আই’ প্রকল্পের কারিগরি সহায়তায় মাধ্যমিক শিক্ষা স্তরের এ একাডেমিক কার্যক্রম প্রচারের সিন্ধান্ত নিয়েছে মাউশি কর্তৃপক্ষ। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত পাঁচ শ্রেণীর (৬ষ্ঠ থেকে ১০ম) শিক্ষা কার্যক্রম সম্প্রচারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

২১ মার্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ‘ব্যানবেইস’, মোবাইল ফোন কোম্পানি ‘রবি’ এবং একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডিও’তে ৬ষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির বিভিন্ন বিষয়ের পাঠদান রেকর্ডিং শুরু হয়েছে। বিশ্বব্যাপি নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বাংলাদেশেও মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে, ইতোমধ্যে দু’জনের মৃত্যুও হয়েছে। এ কারণে যতদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে ততদিনই টেলিভিশনের মাধ্যমে পাঠদান কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হবে বলে সংবাদকে জানিয়েছেন মাউশি’র পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) প্রফেসর শাহেদুল খবির চৌধুরী।

দীর্ঘসময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলে নিজ নিজ বাসায় অবস্থান করেই ছাত্রছাত্রীরা যাতে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারে সে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সংসদ টেলিভিশনে রেকর্ডকৃত শিক্ষা কার্যক্রম সম্প্রচারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ৬ষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত প্রত্যেক স্তরে প্রতি বিষয়ে দৈনিক ৭টি করে ক্লাস সম্প্রচার হবে : অর্থাৎ রুটিন অনুযায়ীই বিষয়ভিত্তিক শ্রেণি কার্যক্রম পাঠদান করা হবে।

দেশের সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দক্ষ ও অভিজ্ঞ শিক্ষকমণ্ডলীর রেকর্ডকৃত পাঠদান কার্যক্রমই নিয়মিত সম্প্রচার করা হবে।’

১৬ মার্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক আদেশে,প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে ৩১ মার্চ পর্যন্ত স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা ও ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলসহ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টার বন্ধ ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ঘরে থেকে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।

পরবর্তীতে ১৮ মার্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,‘করোনাভাইরাস সংক্রমণ থেকে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার লক্ষ্যে ১৮ মার্চ থেকে আগামি ৩১ মার্চ পর্যন্ত সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টারগুলো বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছিল এবং শিক্ষার্থীরা যাতে বাসায় অবস্থান করে তা নিশ্চিত করতে অভিভাবকদের অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে,অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক এ ছুটিকে সাধারণ ছুটি হিসেবে গণ্য করে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এমনকি অনেকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত ভ্রমণেও যাচ্ছেন সপরিবারে।’

একই আদেশে কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করা হলেও ‘কিছু কোচিং সেন্টার তাদের কোচিং কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে আমাদের শিক্ষার্থী ও সারাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আজ পুনরায় চিঠি দেয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, কোনো শিক্ষার্থীকে রাস্তায় ঘুরতে দেখলে তাদের বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে। পাশাপাশি সন্তানদের বাসায় অবস্থান নিশ্চিত করতে অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।’

এদিকে মাউশি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সুযোগ নিয়ে কোন কোচিং সেন্টারের কার্যক্রম খোলা রাখা হলে এদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ পদক্ষেপ নেয়া হবে। ইতোমধ্যে কোচিং সেন্টারের কার্যক্রম নজরদারি শুরু হয়েছে।

বার্তা কক্ষ , ২২ মার্চ ২০২০

Share