বিভিন্ন প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগে বিশ্ব রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির অবদান অনস্বীকার্য। তবে এ রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি গড়ে ওঠার পিছনে রয়েছে এক ইতিহাস।
১৮৫৯ সালের ২৪ জুন অস্ট্রিয়ার সঙ্গে ফ্রান্স আর সার্ডিনিয়া-পিডমন্ট সেনাদের মারাত্মক রক্তক্ষয়ী এক যুদ্ধ চলছিল ইতালির সফেরিনোতে। সুইজারল্যান্ডের ব্যবসায়ী হেনরি ডুনান্ট সেখানে গিয়েছিলেন তৃতীয় নেপোলিয়নের সঙ্গে দেখা করতে।
উদ্দেশ্য,আলজেরিয়ার সঙ্গে একটা চুক্তির ব্যাপারে ফ্রান্সের অধিপতি নেপলিয়নের সাহায্য চাওয়া। কিন্তু নেপোলিয়নের সঙ্গে কথা বলবেন কি,যুদ্ধক্ষেত্রের ভয়াবহ দৃশ্য দেখেই ডুনান্টের অবস্থা খারাপ। যুদ্ধে অনেকেরই প্রায় বিনা চিকিৎসায় মারা যাওয়ার আশঙ্কা। সে অবস্থায় নিজেও নেমে পড়লেন আহত সৈন্যদের সেবায়। পরবর্তীতে ১৮৬৩ সালে বেশ কয়েক জন চিকিৎসক,রাজনীতিবিদ আর সেনাকর্মকর্তাকে নিয়ে একটা সংগঠনের যাত্রা শুরু করেছিলেন ডুনান্ট।
‘সলফেরিনোর স্মৃতি’ নামক বইয়ে তিনি তাঁর সকল স্মৃতি ও অভিজ্ঞতা সংরক্ষণ করেছিলেন। পরবর্তীতে সে সংগঠনই ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব দ্য রেড ক্রস বা আইসিআরসি নামে পরিচিতি পায়।
১৮২৮ সালের ৮ মে সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরে জন্মগ্রহণ করেন বিশ্ব রেড ক্রিসেন্ট আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা জিন হেনরি ডুনান্ট। তাঁর জন্মদিনকে স্মরণীয় করে রাখার লক্ষ্যে প্রতি বছর এ দিনটিকে বিশ্ব রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
ডুনান্টের ধারণার উপর ভিত্তি করে ১৮৬৪ সালে জেনেভা কনভেনশন তৈরি হয়। ১৯০১ সালে ফ্রেডেরিক পাসির সাথে মিলিত ভাবে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ১৯১০ সালের ৩০ অক্টোবর ডুরান্টের মৃত্যু হয়।
পৃথিবীর দেশে দেশে যুদ্ধ,দাঙ্গা,প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ক্লান্তিহীন ভাবে কাজ করে চলে আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটি। রেড কমিটির সদস্য ও কর্মচারীদের নিষ্ঠা,অধ্যবসায় ও স্বার্থত্যাগ বহু মানুষকে জীবন দিয়েছে নতুন করে বাঁচতে শিখিয়েছে।
পৃথিবীর বহু ধনী ব্যক্তি এ কমিটিতে অর্থ দিয়ে সাহায্য করে থাকেন। বলতে গেলে,পৃথিবীতে যে ভাবে যুদ্ধ,হানাহানি বেড়েছে,সেভাবেই গুরুত্ব বেড়েছে রেড ক্রসের।
বার্তা কক্ষ , ৮ মে ২০২১
এজি