মতলব উত্তরে কোরবানির পশু নিয়ে দুশ্চিন্তায় খামারিরা

এগিয়ে আসছে ঈদুল আযহা। এবারও করোনার মধ্যে এসেছে কোরবানির ঈদ। তবে গত বারের চেয়ে সময়টা এ বছর বেশী খারাপ। নানা বিধি-নিষেধ দিয়ে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে সরকার। আর মাত্র দুই সপ্তাহ সময় আছে ঈদের। ঈদের দিন যত ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে খামারিদের দুশ্চিন্তা।

এদিকে করোনার কারণে চলছে লকডাউন। করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় কোরবানির আগে চলমান কঠোর বিধিনিষেধের মেয়াদ আরও এক সপ্তাহ বেড়ে যাওয়ায় কোরবানির পশু বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার হাজারো খামার মালিক। কতদিন চলবে তা নিশ্চিত নয়। পশু হাট বসবে কিনা তাও অনিশ্চিত। খামারে বা বাড়িতে বাড়িতে এসে খুব সহজ নাও হতে পারে পশু বেচাকেনা। সারা বছর খামারে পরিশ্রম ও বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করার পর এখন পশুর বাজার ও দাম নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন তারা।

যানবাহন বন্ধ থাকার কারণে বাইরে থেকে আসতে পারছে না পাইকারী গরু ব্যবসায়ীরা। অন্য বছর ক্রেতা বিক্রেতাদের আনাগোনায় মুখরিত থাকে উপজেলার সবচেয়ে প্রাচীনতম পশুর হাট ছেংগারচর বাজার পশুর হাট ও খামারগুলো।

মতলব উত্তর উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নে বিশাল গরু ও ছাগলের খামার গড়ে তুলেছেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য রিয়াজুল হাসান। তিনি জানান, এবার কোরবানি সামনে রেখে লাভের আশায় তারা ৫৩টি গরু ও ২৩টি ছাগল প্রস্তুতি করেছেন।

বিনিয়োগও করেছে প্রচুর অর্থ। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করায় এবং চলমান কঠোর বিধিনিষেধের মেয়াদ আরও এক সপ্তাহ বেড়ে যাওয়ায় এখন গরু ও ছাগলের বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় তারা। লকডাউন এর মেয়াদ আরও ৭ দিন বৃদ্ধির ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে পশুর দাম কমতে শুরু করেছে।

তিনি জানান, যদি কোরবানিতে পশুর হাট না বসে তাহলে ন্যায্য দাম তারা পাবেন না। এতে আর্থিকভাবে মারাত্মক ক্ষতিতে পড়তে হবে।

একই কথা জানান উপজেলার ছেংগারচর পৌরসভার ঠাকুরচর গ্রামের প্রান্তিক খামার মালিক মানিক বেপারী। তিনি জানান, কোরবানি সামনে রেখে পরিবারের সর্বস্ব ব্যয় করে তিনি ৭টি গরু মোটাতাজা করেছেন। নিজে ঠিকমতো না খেয়ে গরুর পেছনে ব্যয় করেছেন অর্থ ও শ্রম। এখন দেশের যে অবস্থা, তাতে সঠিক দাম না পেলে পথে বসতে হবে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তিনি। শুধু মানিক বেপারী বা একই গ্রামের খামারি সালামত উল্লাহ খান নয়, একই রকম শঙ্কা ব্যক্ত করেন মতলভ উত্তরের হাজারো খামার মালিক।

মতলব উত্তর উপজেরা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ফারুক হোসেন চাঁদপুর টাইমসকে বলেন,গত বছরও কোরবানির সময় করোনা পরিস্থিতি ছিল। এবারও এ পরিস্থিতিতে ধর্মীয় অনুভূতি রেখে খামার থেকে গরু সংগ্রহ করে কোরবানি দিবে। অনলাইন সিস্টেমে ব্যাপক আকারে কোরবানির পশু বেচাকেনা হবে এবং এতে খামার মালিকরা তাদের প্রস্তুত করা পশুর ন্যায্য দাম পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন স্থানীয় খামারগুলোতে প্রাণিসম্পদ দফতরের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। সেই সাথে খামারের গবাদি পশুগুলোকে নিয়মিত টিকাসহ সব ধরনের চিকিৎসায় সহযোগিতা করা হচ্ছে।

নিজস্ব প্রতিবেদক

Share