জনপ্রতিনিধি হিসেবে রাজনীতিতে দীর্ঘদিন সক্রিয় ছিলেন তিনি। কাটিয়েছেন এক দীর্ঘ প্রবাস জীবনও। তবে ছোটবেলা থেকেই পশুপালনের প্রতি ছিল গভীর টান। সেই শখ থেকেই মাত্র চার বছর আগে গড়ে তোলেন ‘মোস্তাকিম ডেইরি ফার্ম অ্যান্ড এগ্রো’— যার প্রতিষ্ঠাতা ফরিদগঞ্জ উপজেলার রূপসা উত্তর ইউনিয়নের ভাটেরহদ গ্রামের বাসিন্দা, সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হাজী মোজাম্মেল হোসেন।
খামারটি এখন রূপ নিয়েছে বিশাল এক সফল উদ্যোগে। আসন্ন ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে সেখানে প্রস্তুত রয়েছে দুই শতাধিক গরু ও মহিষ। প্রতিটি পশুর দাম শুরু ৯০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত। এসব গরু ও মহিষ পালন করা হচ্ছে সম্পূর্ণ অর্গানিক ও প্রাকৃতিক উপায়ে, যা ইতোমধ্যেই ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে।
খামারের কর্মচারীরা জানান, বিশুদ্ধ খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে খামারে রয়েছে ১৫-১৬ একর জমিতে ঘাসের চাষ। এসব ঘাস ঘোড়ার গাড়ির মাধ্যমে খামারে আনা হয়। পশুগুলোকে খাওয়ানো হয় নিজেদের চাষ করা ঘাস, খড়, গমের ভুষি, লবণ, খৈল এবং ছোলার ভুষি। প্রতিটি পশুকে রাখা হয় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও প্রাকৃতিক পরিবেশে, যাতে করে তারা সুস্থভাবে বেড়ে উঠতে পারে।
খামারটি শুধুমাত্র পশুপালনের ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি এখন অন্তত ১৫ জন যুবকের কর্মসংস্থানের উৎস হয়ে উঠেছে। হাজী মোজাম্মেল চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, “জনপ্রতিনিধি থাকাকালে চেষ্টা করেছি কাজকে এবাদতের মতো করে দেখতে। এখন খামারের মাধ্যমে মানুষের আমিষ ও দুধের চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখতে পারছি— এটা আমার জন্য গর্বের।”
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সুমন ভৌমিক চাঁদপুর টাইমসকে জানান, হাজী মোজাম্মেল হোসেন বর্তমানে একজন আদর্শ খামারি হিসেবে বিবেচিত। প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে তার খামার পরিদর্শন ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। তিনি বলেন,
“উনার উদ্যোগ দেখে অনেক তরুণ এখন খামার গড়তে আগ্রহী হচ্ছে। আশা করি, ফরিদগঞ্জ উপজেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা পূরণে ভবিষ্যতে আর ঘাটতি থাকবে না।”
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. বিল্লাল হোসেন ভূঁইয়াও এই খামারকে আদর্শ খামার হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেন, সবকিছু পেরিয়ে হাজী মোজাম্মেল আজ একজন প্রকৃত উদ্যোক্তা। অর্গানিক পদ্ধতিতে গরু পালন করে তিনি উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন।”
প্রতিবেদক: শিমুল হাছান, ২৮ মে ২০২৫
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur