চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আনারস প্রতীকের প্রার্থী আলহাজ্ব হেলাল উদ্দিন মিয়াজী বলেন, কোন হুমকি-ধমকিতে আমাকে নির্বাচন থেকে সরাতে পারবেনা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি তার কার্যালয়ে হাজীগঞ্জ সংবাদকর্মীদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে নির্বাচন মুখী মানুষ ছিলাম না। আমি অতিতে দল ও দলের অনেক প্রার্থীর নির্বাচন করেছি। কিন্তু নিজে কখনো নির্বাচন করার চিন্তা আমি করিনি। উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অন্যান্য যারা প্রার্থী হয়ে আসছেন। এর আগে থেকে কে প্রার্থী হবেন বা কারা প্রার্থী হবেন না। এ বিষয় নিয়ে বিভিন্নভাবে আমাদের মধ্যে অনেক আলাপ আলোচনা হয়েছে। আমরা পর্যালোচনা করেছি।
আমার চেষ্টা ছিল, যদি আরও কেউ দলের মধ্যে যেহেতু এটি নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। সেক্ষেত্রে যেই একজন ভালো প্রার্থী আসবে আমরা হয়তো একজন ভালো প্রার্থীকে বেছে নিয়ে নির্বাচন করবো। যাতে করে তিনি বিজয়ী হয়ে আসলে উপজেলা সর্বস্তরের জনগণের জন্য একটি সুন্দর পরিবেশ তৈরি করতে রাখতে পারেন। মানুষ যেন তার মনের কথাগুলো বা সুবিধা-অসুবিধার কথা বলার সুযোগ পায়।
আমরা ইতিমধ্যে দেখেছি আমি ছাড়াও আরও দুইজন প্রার্থী রয়েছে। আর কোন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার জন্য এগিয়ে আসে নাই। সেজন্য আমি প্রার্থী হয়েছি। জনগণ যদি মনে করে অন্যান্য প্রার্থীর তুলনায় আমর যোগ্যতা আছে তাহলে আমাকে নির্বাচতি করলে এ উপজেলাকে একটি সুন্দর সকল মানুষের জন্য একটি গ্রহণযোগ্য প্রতিষ্ঠান করার জন্য আমার চেষ্টা অব্যাহৃত রাখবো। যাতে করে সকলে সন্তুষ্ট থাকে।
তিনি বলেন প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ আপনারা জাতির বিবেক। আপনাদের কাছ থেকে মানুষ সত্যটা জানবে। মানুষ যোগ্য প্রার্থী বাছাই করার সুযোগ পাবে। এ নির্বাচনটি আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনা একটি নির্দলীয়, নিরপেক্ষ জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য এবং মানুষ যাতে স্বস্তঃপূর্ত তাদের মনের মতো প্রার্থীকে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত করতে পারে। সব মহেলই তিনি এ নির্দেশ দিয়েছেন।
এরপরেও অনেকে এ নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। শুধু চেষ্টা নয়, আমি এ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার পিছনে ইউনিয়ন ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ আমাকে বিভিন্ন দেনদরবার করে এবং অন্যান্য প্রার্থীদের সাথে দেনদরবার করে আমাকে সিদ্বান্ত দিয়েছে। আপনাকে নির্বাচনটা করতে হবে। তাই আমি অনেক ভেবে চিন্তে সিদ্বান্ত নিয়েছি, আমি নির্বাচন করবো।
তিনি আরো বলেন, আমি মাননীয় সংসদ মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীরউত্তমের সাথে যোগাযোগ করেছি, ওনার কাছে দোয়া চেয়েছি। ওনি বলেছেন, ব্যক্তিগতভাবে আমার কোন প্রার্থী নেই। তোমরা যারা নির্বাচন করবে, এরমধ্যে জনগণ যাকে ভোট দিবে, সে আমার সাথে কাজ করবে। এ ব্যাপারে আমার কোন আপত্তি নেই। আমি এখন সকলের সহযোগিতা কামনা করি।
হাজীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব হেলাল উদ্দিন মিয়াজী বলেন, আমি কোন রকমের অন্যায়, অবৈধ কোন সুযোগ সুবিধা নিয়ে বিজয়ী হতে চাই না। জনগণ যদি ভোট দেয় আমি নির্বাচিত হবো। আমার থেকে যদি অন্য কাউকে ভালো মনে করে তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে। আমি তাদেরকে স্বাগত জানাবো। আর আমি যদি নির্বাচিত হয়ে আসতে পারি, সম্পূর্ন সততার মধ্যে অনিয়মের উর্ধ্বে দল-মত নির্বিশেষে সকল মানুষের জন্য কাজ করবো।
তিনি বলেন, আমি আনারস প্রতীক পেয়েছি। আমার নেতাকর্মীদের মধ্যে যারা আমাকে উৎসাহ এবং সাহস দিয়ে এ নির্বাচন করার জন্য আমাকে মাঠে এনেছে, গত দুইদিন যাবৎ তাদেরকে বিভিন্ন রকমের হুমকি-ধমকি ও বিভিন্ন রকমের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাদেরকে আমার কাছ থেকে দুরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। আমি আপনাদের কাছে অঙ্গিকার করি, আমি জনগণের প্রার্থী হয়ে এসেছি। কেউ আমার সাথে থাকবে, থাকবেনা। এই চিন্তা আমি মাথা থেকে ছেড়ে দিয়েছি। সকলের সহযোগিতায় জনগণ যদি আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে, আমি শেষ মূহুত্ব পর্যন্ত আপনাদের সাথে থাকবো। কোন হুমকি-ধমকি আমাকে সরাতে পারবেনা।
আমি আপনাদের মাধ্যমে উপজেলার সকলের মানুষের কাছে ভোট প্রার্থণা করছি। আমি যদি নির্বাচিত হই, তাহলে আমি আল্লাহ সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য আপনাদের হয়ে সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করবো।
এ সময় আওয়ামী লীগ নেতা বীরমুক্তিযোদ্ধ আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন বতু মিজি, খোরশেদ আলম ও মফিজুল ইসলাম, ইঞ্জি. মোখলেছুর রহমান, আহসান উল্যাহ মৃধা, জাকির হোসেন মিয়া, জহির হোসেন প্রধানীয়া, রফিকুল ইসলাম, ফখরুল ইসলাম, নুর মোহাম্মদ, সাবেক ছাত্রনেতা এবায়েদুর রহমান খোকন বলি, আবদুল্লাহ আল মামুন জীবন, রিয়াদ বলি ও ফরহাদসহ উপজেলা, পৌর ও বিভিন্ন ইউনিয়নের দলীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিবেদক: জহিরুল ইসলাম জয়, ৩ মে ২০২৪