কোনো জঙ্গি বা সন্ত্রাসের স্থান বাংলাদেশে হবে না : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ ধর্মপ্রাণ, কিন্তু ধর্মান্ধ নয়। কোনো জঙ্গি বা সন্ত্রাসের স্থান বাংলাদেশে হবে না। যারা ইসলামের নাম করে মানুষ হত্যা করছে, তারা আমাদের পবিত্র ধর্মের বদনাম করছে দেশে-বিদেশে।

মঙ্গলবার দুপুরে গণভবনে এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন। সন্ত্রাস ও জঙ্গি দমনে ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন জেলার মাঠ পর্যায়ের প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, মসজিদের ইমাম, ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব, শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে মতবিনিময়ের জন্য এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের ধর্মে আছে মানুষের কল্যাণে কাজ করা। কিন্তু তারা (জঙ্গি) রমজানে তারাবি নামাজ না পড়ে, ঈদের দিন ঈদের নামাজ না পড়ে মানুষ মারছে।

ইসলামকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। এটা আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবার কল্যাণে কাজ করতে চাই, এটাই আমাদের লক্ষ্য।

জঙ্গি দমনে কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক ঘটনা ঘটেছে। আমি চাই দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে গড়ে উঠবে বাংলাদেশ। সে লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি আমরা।

জঙ্গি হামলায় উচ্চশিক্ষিতদের জড়িত থাকার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা উচ্চশিক্ষিত, ইংরেজি মিডিয়ামে পড়াশোনা করছে, সেই ছেলে-মেয়েরা কীভাবে ধর্মান্ধ হয়ে যাচ্ছে? নিখোঁজ হয়ে যায় পরিবার থেকে? অথচ প্রশ্ন আসে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর। এ নিয়ে রিপোর্ট দিত মানবাধিকার সংগঠনগুলো। এখন দেখা যায় অনেকে স্বেচ্ছায় গুম হয়ে তারা এ ধরনের কাজ করছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েরা কোথায় নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছে, তাদের বিষয়ে খোঁজ নিতে হবে। আমরা উৎস খুঁজে বের করবো।

বাবা-মা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, ইমাম-মুয়াজ্জিনসহ সবাই যেন নিজ নিজ কর্মস্থল থেকে সাধারণ মানুষকে এ ব্যাপারে সচেতন করেন এ বিষয়ে তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেক ইউনিয়ন ও থানায় জঙ্গি এবং সন্ত্রাসবিরোধী কমিটি করা হবে। এই কমিটিগুলো কারও জঙ্গি সম্পৃক্ততা থাকলে তা খুঁজে বের করবে। কমিটির মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমার বিশ্বাস, আমরা এ অবস্থার পরিবর্তন করতে পারবো। ইসলাম ধর্মকে যেন কেউ কলুষিত করতে না পারে, সেজন্য সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। কেউ বিপথে পাঠাতে চাইলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ যাচ্ছে কি না এবং কেউ নিচ্ছে কি না- দুটিই খুঁজে বের করতে হবে।

সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় সর্বস্তরের মানুষকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমার বিশ্বাস, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা বাংলাদেশকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিমুক্ত করতে পারবো। সবাই একযোগে কাজ করলে সাধারণ মানুষের ভাগ্য নিয়ে কেউ ছিনিমিনি করতে পারবে না।

অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ।

নিউজ ডেস্ক ।। আপডেট ০৭:৪২ পিএম,১২ জুলাই ২০১৬,মঙ্গলবার
এইউ

Share