সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নূর ও রাশেদ খানকে ‘হত্যার হুমকি’ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। তাদেরকে ‘হত্যার হুমকি’ দেয়ার প্রতিবাদে আবারও উত্তাল হয়ে উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাস।
মঙ্গলবার (১৫ মে) দিনগত রাতে ঢাবির মুহসীন হলে নুরুল হক নূরের কক্ষে পিস্তল নিয়ে ‘গুলি করে হত্যার হুমকি’ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ইমতিয়াজ উদ্দিন বাপ্পি, মহসীন হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান সানী, চারুকলা অনুষদ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম হাসান লিমন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জ্যোতির বিরুদ্ধে এ অভিযোগ তোলা হয়। তবে ‘হত্যার হুমকি’র অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইমতিয়াজ বাপ্পি। তিনি বলেন, ‘ফাহিমের ফেসবুক আইডিতে রিপোর্ট করার বিষয়ে জানতে গিয়েছিলাম।’
এদিকে ওই ঘটনার প্রতিবাদে আজ (বুধবার) দুপুর সোয়া ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্হাগারের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে আন্দোলনকারীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
‘হত্যার হুমকি’র বিষয়ে নুরুল হক নূর বলেন, ‘কেন্দ্রীয় কমিটির (কোটা সংস্কার) যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ আমার রুমে ছিল। এর মধ্যে চারুকলা অনুষদের ছাত্রলীগের সেক্রেটারি লিমন ফোন দিয়ে থ্রেট দেয় যে, হল থেকে নামিয়ে দেওয়া হবে। পিটিয়ে নামিয়ে দেওয়া হবে। আমরা নাকি সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি।’
তিনি বলেন, ‘এক পর্যায়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ইমতিয়াজ উদ্দিন বাপ্পি কল নিয়ে বলেন, ছাত্রদলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকুতে মারছি। তোদের মতো পোলাপানকে খেয়ে দিতে দুই সেকেন্ডও লাগে না। তোগোরে গুলি কইরা মারি নাই শুধু কিছু সিনিয়রের নিষেধ ছিল। তবে তোরা বাঁচবি না। কিছুদিন পর প্রজ্ঞাপনটা জারি হোক। দেখি তোদের কোন বাপ ঠেকায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘তার ১০ মিনিট পরে কক্ষে পিস্তল নিয়ে এসে বলে, তোরা মা-বাবার কাছ থেকে দোয়া নিয়ে নে। তোরা বাঁচবি না। তোদের গুলি করে মারব। আমাকে (নুরুল হক নুর) মারতেও আসে। তারা আমার মোবাইলও নিয়ে যায়। যাতে আমি রেকর্ড করতে না পারি। আমরা এখন জীবননাশের হুমকির মুখে আছি।’
এদিকে হত্যার হুমকিতে জিডি করতে গেলে তা নেয়নি শাহবাগ থানা পুলিশ। আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা চার যুগ্ম আহ্বায়কের নিরাপত্তা চেয়ে ৪টি ও সব আন্দোলনকারীদের নিরাপত্তা চেয়ে ১টি জিডি করতে বুধবার দুপুরে শাহবাগ থানায় গেলে জিডি নেয়নি পুলিশ।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাসান এ বিষয়ে বলেন, ‘তাদের (আন্দোলনকারী) অভিযোগ রাখা হয়েছে। এটি শুধু থানার বিষয় নয়, বিশ্ববিদ্যালয়েরও। তাই আমরা বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারের উচ্চ মহলের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেব।’