চাঁদপুর সদর উপজেলার হানারচর ইউনিয়নের হরিণা চালিতাতলী এডওয়ার্ড ইনস্টিটিউশন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত কোচিং না পড়লে প্রতিমাসে বেতন বাধ্যতা মূলক অনিয়মের অভিযোগে অভিবাবকদের চাপাক্ষোভে ওই বিদ্যালয়ের প্রতি অনিহা সৃষ্টি হয়েছে।
রোববার (১ জুলাই) সকালে এমন অনিমের জন্য অভিবাকরা ওই বিদ্যালয়ে আর তাদের সন্তানদেরকে পড়া লেখা করাবেনা বলে অনেক ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এসময় একাধিক অভিবাকের কাছে জানাযায়, হরিণা চালিতাতলী এডওয়ার্ড ইনস্টিটিউশন বিদ্যালয়ের ৬ ষ্ট শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়–য়া শিক্ষার্থীদেরকে প্রতিদিন ওই বিদ্যালয়ে কোচিং পড়ানো হয়। আর এসব কোচিং পড়িয়ে থাকেন ওই বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকগন। কোচিং বাবদ প্রতিমাসে নেয়া হয় ২,শ, টাকা থেকে আড়াই,শ টাকা করে।
যারা ৬ষ্ঠ এবং সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে তাদের কাছে নেয়া হয় ২,শ টাকা। আর যেসব শিক্ষার্থী অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণিতে পড়ে তাদের কাছ থেকে নেয়া হয় আড়াই,শ টাকা করে। যেসব শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন নিয়মিত কোচিং পড়ে থাকে তাদের মধ্যে কিছু কিছু অভিবাবক লজ্জা শরমে মুখফুটে কিছু বলতে না পেরে বাধ্যতামূলক ভাবে সন্তানদেরকে নিয়মিত কোচিং পড়িয়ে যাচ্ছেন।
আর যেসব পরিবারের আর্থিক সমস্যা রয়েছে তারা অনেকেই রোববার সকালে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সন্তানদেরকে কোচিং পড়াবেনা বলে কোচিংয়ের বেতন নিয়ে শিক্ষকদের সাথে বাকবিতন্ডা করেন।
ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মাতা সাজেদা বেগম, নুরজাহান বেগম, খাদিজা বেগম, আবুল খায়ের বেপারী, আহসান গাজী ও নাছির কৌতয়ালসহ একাধিক অভিবাবকরা জানায়, গত কয়েকদিন আগে তাদের সন্তানরা বলেছেন বিদ্যালয়ের কোচিংয়ের বেতন
এবং পরীক্ষার ফিস বাবদ কারো ১১,শ টাকা থেকে শুরু করে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত কোচিং ও পরীক্ষার ফিসের টাকা পরিশোধ করতে হবে, নইলে তারা নাকি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না।
তারা বলেন, একসাথে এত টাকা কথা শুনে আমরা সবাই বলতে এসেছি যে আমরা আমাদের সন্তানদেরকে কোচিং পড়াবো না। সাজেদা বেগম বলেন যখন দেখলাম আমার মেয়ের কোচিংয়ের একমাসের বেতন দিতে পারছিনা তখন আমি শিক্ষকদেরকে বলেছি আমার মেয়েকে কোচিং পড়াবো না। কিন্তু শিক্ষকরা বলেছেন তাদের কাছে কোচিং পড়ালেও প্রতিমাসে বেতন দিতে হবে না পড়ালেও দিতে হবে।
এভাবেই শিক্ষক ও অভিবাবকদের জিন্মি করে বাধ্যতা মূলক কোচিং বাণিজ্যের অনিয়ম করে কয়েক লাখ টাকা উত্তোলন করেছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
কোচিং বাবদ টাকা জমা নেয়ার কোন রশিদ কিংবা কোন কাগজপত্র দেখাতেও রাজি হননি বিদ্যালয়ের শিক্ষকগন। তাহলে তারা কিসের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন অংকের টাকা উত্তোলন করছেন সে প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যায়।
এ ব্যাপারে হরিণা চালিতাতলী এডওয়ার্ড ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক মনির আহম্মদ সিদ্দিকীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, যারা গরীব অসহায় রয়েছে তাদের টাকা পয়সার ক্ষেত্রে আমি অনেককেই ছাড় দেই। যারা অভিযোগ দিয়েছে তারা তো আমার কাছে আসেনি।
তিনি আরো বলেন, আমাদের পাশ্ববর্তী চান্দ্রা ও বহরিয়া স্কুল গুলোর তুলনা মূলক হারে আমাদের এ বিদ্যালয়টি পড়ালেখায় অনেক পিছিয়ে। তাই বিদ্যালয়ের পড়ালেখার মানোন্নয়নের জন্য কিছু পদক্ষেপ তো গ্রহন করতেই হয়।
কারণ ক্লাসের ওপর ভিত্তি করে চলে না। তাছাড়া আমি শিক্ষকদের বেতনও ঠিকমতো দিতে পারছিনা। এখনো অনেকের ৫/৬ মাসের বেতন বাকি রয়েছে। তার এসব বক্তব্যেই বুঝা যায় যে কোচিং পড়াটা কতটা বাধ্যতামূলক।
প্রতিবেদক- কবির হোসেন মিজি