চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের ফাইল ছবি
চাঁদপুর আড়াই শ’ শয্যাা জেনারেল হাসপাতালের দু’ অফিস সহকারী কর্তৃক নার্সদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক প্রদীপ কুমার দত্ত ৩ সদস্যের এ কমিটি গঠন করেন।
কমিটিকে ৭দিনের মধ্যে তদন্ত রির্পোট জমা দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের প্রধান সহকারী কাম হিসাব রক্ষক সফিউল আলম।
কমিটির সদস্যরা হলেন – হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. গোলাম ফারুক ভূঁইয়া, সদস্য ডা.সালেহ আহমেদ ও নাসিং সুপারভাইজার কল্পনা দাস।
চাঁদপুর আড়াই শ’ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি জেনারেল হাসপাতালের প্রধান অফিস সহকারী সফিউল আলমের সহযোগিতায় অফিস সহকারী ফারুক হোসেন সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত ৪৭ জন সিনিয়র স্টাফ নার্সদের কাছ থেকে বিভিন্ন কাগজ পত্র তৈরি করে দেয়া সহ অফিসিয়াল কাজের জন্য জন প্রতি দু’ হাজার একশ’ টাকা করে হাতিয়ে নেয়। এ ক্ষেত্রে তাদের কোনো রশিদ দেয়া হয়নি।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, এ বছর ডিসেম্বর মাসের শুরুতে সরকার স্বাস্থ্য সেবা মানন্নোয়নের সারা দেশে ১০ হাজার সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগ দিয়েছে। সে মতে চাঁদপুরে আড়াই শ’ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ৪৭ জন সিনিয়র স্টাফ নার্সকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ১৫ জানুয়ারি নিয়োগ প্রাপ্তির পর তারা এ হাসপাতালে যোগদান করে।
হাসপাতালের অফিস সহকারী ফারুকুল ইসলামসহ একটি চক্র যোগদানকৃত নার্সদের বিভিন্ন কাগজপত্র তৈরি করে দেয়া সহ অফিসিয়াল কাজের কথা বলে জনপ্রতি ৩ হাজার ৬ শ’ টাকা করে দাবি করে।
পরে প্রধান অফিস সহকারী সেটা কমিয়ে ২ হাজার ১শ’ টাকায় মিমাংসা করে দেন। এক পর্যায়ে ১ মাস পুর্বে সকল নার্স নিশ্চুপে ২ হাজার ১শ’ টাকা করে প্রায় লাখ টাকা ফারুকের হাতে তুলে দেয়। বর্তমানে ফারুক হোসেন যোগদানকৃত নার্সদের কাছ থেকে ২ হাজার ১শ’ টাকা হাতিয়ে নিয়ে আবারো পুলিশ ভেরিভিকেশনের নামে আরো ৫শ’ টাকা দাবি করে। এতে করে এক পর্যায়ে বিষয়টি প্রকাশ পেয়ে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ ক’জন সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত সিনিয়র স্টাফ নার্স জানান, জনপ্রতি তারা ২ হাজার ১শ’ টাকা একত্র করে অফিস সহকারী ফারুকের কাছে জমা দিয়েছে। এ টাকা তিনি আইডি কার্ড প্রদান ও অনলাইনে আমাদের কাগজপত্র পাঠাবেন বলে জানিয়ে নিয়েছেন।
অভিযোগ সর্ম্পকে অভিযুক্ত অফিস সহকারী ফারুকুলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আইডি কার্ড প্রদান ও বিভিন্ন কাগজ পত্র ঠিক করে দিতে হবে । তাই এ টাকা নিতে হয়েছে। তিনি এ বিষয়ে এর বেশি কিছু জানেনা। যা কিছু হেডক্লার্ক জানে। ’
অফিস সহকারী ফারুকুলের সাথে আলাপকালে ওই মূহুর্তে তার কক্ষে প্রবেশ করা সিনিয়র স্টাফ নার্স নিপা রাণী ও আরেকজনকে তাৎক্ষণাৎ বিষয়টি জানতে চাইলে ২ হাজার ১শ’ টাকার কথা তারা স্বীকার করেন।
তাদেরকে এ টাকার জন্য কোনো প্রকার মানি রিসিট দেয়া হয় না বলেও তারা জানায়। তারাও আইডি কার্ড প্রদান ও অনলাইনে আমাদের কাগজপত্র পাঠাবেন বলে টাকা নিয়েছে । এদিকে নিপারাণী ও তার সহকর্মীর সাথে আলাপের এক পর্যায়ে অফিস সহকারী ফারুকুল উঠে হেডক্লার্কের কক্ষে চলে যায়। প্রধান করণিক সফিউল ইসলাম জানান, ‘আমি এ বিষয়ে কিছুই জানিনা’। আর এরকম টাকা নেয়ার বিধান নেই।
হাসপাতালের প্রধান তত্ত্বাবধায়ক প্রদীপ কুমার দত্ত এ প্রতিবেদককে জানায়, এ বিষয়ে আমার জানা নেই। ঘটনা সত্য কিনা তা’ খতিয়ে দেখা হবে। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।
প্রসঙ্গত, অভিযুক্ত দু’প্রধান অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে এর আগেও হাসপাতালে মূল্যবান আসবাবপত্র ও ওষুধ অন্যত্র বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে। ক’মাস পূর্বে ফারুক হোসেন হাসপাতালের একটি মেশিন বিক্রি করতে গিয়ে হাতে নাতে আটক হয়।
প্রতিবেদক- আশিক বিন রহিম
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৮: ৩০ পিএম, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, বৃহস্পতিবার
ডিএইচ
