Home / চাঁদপুর / কে হচ্ছেন চাঁদপুর আওয়ামী লীগের কর্ণধার?
কে হচ্ছেন চাঁদপুর আওয়ামী লীগের কর্ণধার

কে হচ্ছেন চাঁদপুর আওয়ামী লীগের কর্ণধার?

দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর পর ১১তম বছরে এসে হতে যাচ্ছে চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন। রাজনীতির মাঠে সম্মেলনকে ঘিরে চলছে ব্যাপক আলোচনা।

সাথে সাথে দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও সরকার বিরোধী বিভিন্ন দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণের মাঝে একধরনের কৌতুহল রয়েছে দলটির জেলা পর্যায়ের ভবিষ্যত শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে নিয়ে।

স্থানীয় গণামাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ইতোমধ্যে বেশ আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। তবে গতবারের তুলনার এবার কৌতুহল একটু বেশিই। এর প্রধান কারণ হলো গত ১০ বছর পূর্বে দলটি সরকারে ছিলো না এবার এসে সরকারের মাঝে থেকেই কাউন্সিল হচ্ছে। এবারের কাউন্সিলে দলীয় কর্ণধারদের অনেকেই দলীয় শৃঙ্খলার মধ্যেই থেকে প্রভাব প্রতিপত্তি বিভিন্নভাবে ফুটিয়ে তুলতে সক্ষম হবেন।

নতুন নেতৃত্বে হাতে যাবে আওয়ামীগ না পুরনোরাই আবারো হাল ধরবে। নেতাকর্মীদের মাঝে চলছে এ নিয়ে কথপোকথন চলছে হিসেবে নিকেষেরও। এরই মধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থীরা বসে নেই তারাও কাউন্সিলরদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছে।

তবে সম্প্রতি চাঁদপুরে ছাত্রলীগের একটি গ্রুপের তা-বের বিষয়টিও এ কাউন্সিলে প্রভাব পড়বে। এ তা-বে ছাত্রলীগের প্রভাবশালী কয়েকজন নেতাসহ ২১ নেতাকর্মীমে কারাগারে যেতে হয়েছে। পুলিশের গ্রেফতার হয়রানি থেকে বাঁচতে অনেকেই গা ঢাকা দিয়েছে।

২০০৫ সালের ২৬ এপ্রিল চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় শহরের গণি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে। সেই সম্মেলনের পরে আর কোনো ত্রি-বার্ষিক সম্মেল হয়নি। সর্বশেষ ৯ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ চাঁদপুর জেলা শাখার জন্য আগামী ২৬ মঙ্গলবার জানুয়ারি কাউন্সিলের তারিখ ধার্য করে দেন। বর্তমান জেলা আওয়ামীলীগ ৭১ সদস্য বিশিষ্ট হলে ও এর মধ্যে সহ-সভাপতি আবদুল মান্নান মিয়াজীসহ ১০জন সদস্য মৃত্যু বরণ করেছেন এবং ২ জন সদস্য দীর্ঘ সময় ধরে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন।

আগামী ২৬ জানুয়ারি মঙ্গলবার কাউন্সিলের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে যারা অংশ নিচ্ছেন তারা হচ্ছেন- সভাপতি পদে জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া এমপি, সহ-সভাপতি মোঃ ইউছুফ গাজী, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র নাছির উদ্দিন আহামেদ এবং জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব ওচমান গনি পাটওয়ারী।

আর সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডঃ মোঃ জহিরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক শামছুল হক মন্টু পাটওয়ারী ও তাফাজ্জল হোসেন এসডু পাটওয়ারী, অ্যাড. মুজিবুর রহমান ভূঁইয়া।

এ ছাড়াও যাদের নাম শুনা যাচ্ছে তারা হলেন: সভাপতি পদে এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক বাণিজ্য সচিব গোলাম হোসেন, হাজীগঞ্জের অধ্যাপক এ কে এম ফজলুল হক, বিশিষ্ট চিকিৎসক জে আর ওয়াদুদ টিপু। সাধরণ সম্পাদক পদে আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় উপ-পরিষদের সহ-সম্পাদক সাবেক ছাত্র নেতা জিল্লুর রহমান জুয়েল, বিএমএ চাঁদপুরের সভাপতি ডা. হারুরনুর রশিদ সাগরের নামও শুনা যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শামছুল হক মন্টু পাটওয়ারী বলেন, দীর্ঘ সময়ের পর কাউন্সিল হচ্ছে আমরা চাই নতুন নেতৃত্ব জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে আসুক। বর্তমান নেতৃত্ব দীর্ঘ সময় দলকে নেতৃত্ব দিয়েছে পরিবর্তন হলে সকলের জন্যই মঙ্গলকর হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

তাফাজ্জল হোসেন এসডু পাটওয়ারী বলেন, কাউন্সিলের মাধম্যে নেতৃত্বের পরিবর্তন হোক এটাই আমার চাওয়া। দীর্ঘ ১০ বছরপর কাউন্সিল হচ্ছে সঠিক সময়ে কাউন্সিল হলে অনেক আগেই নেতৃত্বের পরিবর্তন ঘটতো বলে আমি বিশ্বস করি।

শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রব ভূঁইয়া বলেন, কাউন্সিল সুন্দরভাবে হয়ে নতুন নেতৃত্ব জেলা আওয়ামীলীগের হাল ধরুক এটাই আমার আশা। নতুন নেতৃত্ব আসলে অনেক কিছুরই পরিবর্তন আসবে বলে আমি বিশ্বস করি।

প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালে অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে সভাপতি পদে ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া, মোঃ ইউছুফ গাজী, আবদুল মান্নান মিয়াজী ও অধ্যাপক মোল্লা মোঃ রিয়াছত উল্লাহ এবং সাধারণ পদে আবু নঈম দুলাল পাটওয়ারী ও অ্যাডঃ জহিরল ইসলাম প্রতিদ্বদ্বিতা করেন। সাধারণ সম্পাদক পদে আবু নঈম দুলাল পাটওয়ারী কাউন্সিলরদের ভোটে নির্বাচিত হন। কিন্তু তখনকার সময়ে সভাপতি পদে শেষ পর্যন্ত ভোট হয়নি। এ পদে শামছুল হক ভূঁইয়া ও ইউছুফ গাজীর মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিলো। অবশেষে নানা নাটকীয়তার পর সভাপতি পদে মনোনয়ন কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের ওপর ছেড়ে দেয়া হয়। পরে কেন্দ্র থেকে সভাপতি হিসেবে ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়ার নাম ঘোষণা করা হয়।

জেলা আওয়ামী লীগ কমিটি তিন বছরের মেয়াদে হলেও বর্তমান কমিটির বয়সকাল ১১ বছর পূর্ণ হতে প্রায় চার মাস বাকি।

আগামী ২৬ জানুয়ারি সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হলে সম্মেলন স্থান ও অতিথি এখনে চূড়ান্ত হয়নি। তবে স্থান হিসেবে সম্ভাব্য তালিকায় আউটার স্টেডিয়াম ও হাসান আলী সরাকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠের নাম শোনা যাচ্ছে। অতিথি হিসেবে কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদকসহ প্রেসিডিয়ামের সদস্যরা উপস্থিত হবে বলে নেতাদের অনেক আশা প্রকাশ করেছেন।

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।আপডেট : ০৪:২০ পিএম, ১২ জানুয়ারি ২০১৫, মঙ্গলবার

ডিএইচ