চাঁদপুর টাইমস, ঢাকা:
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার জন্য দায়ী করে তৎকালীন সেনাপ্রধান কেএম শফিউল্লাহ ও বিপ্লবী সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের বিরুদ্ধে কঠোর মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম।
সেসময় বঙ্গবন্ধুকে রক্ষার কোনো উদ্যোগ না নেয়ায় কেএম শফিউল্লাহকে ‘একটা ইডিয়ট’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘তিনি এখন মিথ্যাচার করে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে সেদিন কেন নীরব ছিলেন। তার জবাব দিতে হবে তাকে।’
অপরদিকে জাসদকে উদ্দেশ করে বলেন, তারাই বঙ্গবন্ধু হত্যার পথ পরিষ্কার করেছিল।
রোববার সন্ধ্যায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতীয় শোক দিবসের এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ধানমন্ডি, কলাবাগান, হাজারিবাগ ও নিউমার্কেট থানা আওয়ামী লীগ যৌথভাবে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা-১০ আসনের সাংসদ শেখ ফজলে নূর তাপস। বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, ধানমন্ডি থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল আহমেদ, কলাবাগান থানার সভাপতি নাজমুল করিম, হাজারীবাগ থানার সভাপতি ইলিয়াছুর রহমান, নিউমার্কেট থানার সভাপতি জসিম উদ্দিন প্রমুখ।
শেখ সেলিম বলেন, ‘শেখ মনি মারা যাওয়ার দেড়-দুই ঘণ্টা পর বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। কিন্তু ইডিয়ট শফিউল্লাহ তখন আর্মির চিফ ছিলেন। মনি ভাই মারা যাওয়ার দেড়-দুই ঘণ্টার পর বঙ্গবন্ধু মারা গেলেন। কেউ বলে ৬টা ৪৭ মিনিট। বঙ্গবন্ধু সবার কাছে ফোন দেন। তার ফোন পেয়ে কর্নেল শাফায়াত ছুটে আসেন। আর উনি বসে বসে বুড়ো আঙুল চুষছিলেন।’
সেলিম বলেন, ‘জিয়াউর রহমান ডেপুটি চিফ ছিলেন। তিনি হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। সেদিনের ঘটনার জন্য এখনও একটা তদন্ত কমিশন গঠন করা হোক। তাহলে সব বেরিয়ে আসবে। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে যারা বেইমানি করছেন তারা কখনো ভালো থাকতে পারে নাই। তাদেরও স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি।’
জাসদই বঙ্গবন্ধু হত্যার পথ পরিষ্কার করে দিয়েছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যেদিন মারা যায়, সেসময় কর্নেল তাহের জাসদের গণবাহিনীর প্রধান ছিলেন। একটা সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে সে গণবাহিনী গড়েছিল। পরবর্তীতে তাকে বঙ্গবন্ধু সহানুভূতি দেখিয়ে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান বানিয়েছিল। সেও বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত ছিল। এই জাসদই বঙ্গবন্ধুর হত্যার পথ পরিষ্কার করে দিয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘জাসদের কর্মীরা মুজিববাহিনী, মুক্তিবাহিনী, গণবাহিনীতে ছিল। এই গণবাহিনী, জাসদ বঙ্গবন্ধুর বিরোধিতা করে বিভিন্ন জায়গায় ডাকাতি করে, মানুষ হত্যা করে, এমপি মেরে যদি পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। যদি এসব না করতো স্বাধীনতাবিরোধীরা কখনো বঙ্গবন্ধুর ওপর আঘাত হানতে পারত না। অতএব বঙ্গবন্ধুর হত্যার সঙ্গে কারা জড়িত ছিল তার মূল রহস্য বের করতে হবে।’
উল্লেখ্য, এই জাসদের নেতা হাসানুল হক ইনু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের তথ্যমন্ত্রী এবং মঈনউদ্দিন খান বাদল জোট থেকে এমপি নির্বাচিত।
চাঁদপুর টাইমস, ডিএইচ/2015।