কচুয়া

কচুয়ায় সমলয় চাষাবাদে কৃষির নতুন সম্ভবনা

ট্রেতে করে পলিথিন মোড়ানো হাউজে বীজতলা তৈরী এবং পরম যত্নে মাত্র ২৫ দিনেই রোপনের উপযোগী চারা প্রস্তুত থাকায় সেইসব পূর্ণাঙ্গ চারাগুলো এখন রাইস ট্রান্সপ্লান্টারে লাইন লোগো পদ্ধতি ব্যবহার করে রোপন করা হচ্ছে জমিতে। এতে করে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসে বেড়ে ওঠে ধানের চারা ও পরিচর্যার সুবিধা হয়।

পোকা মাকড়ের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে ব্যবহার করা হবে পার্চিং পদ্ধতি, খরচ কমাতে ব্যবহার করা হবে আধুনিক সেচের এ ডাব্লুউ ডি (পর্যায়ক্রমিক শুষ্ক ও ভেজা) পদ্ধতি, সার ব্যবহার যথাযথ ও সীমিত করতে ব্যবহার করা হবে সুষম সার, অনায়াসে আগাছা নিধনে থাকবে উইডার মেশিন আর সর্বোপরি যুগপৎভাবে ধান কর্তন, মাড়াই এবং প্যাকিংয়ের কাজে ব্যবহার করা হবে কম্বাইন হারভেস্টার। যাকে বলে সমলয় পদ্ধতিতে ধান চাষ।

এই পদ্ধতি অনুসরণ করে বোরোর চাষাবাদ করছেন চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার ১২০ জন কৃষক। এজন্য ১৫০ বিঘা জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে সমলয় চাষাবাদ স্কীম। সরকার এজন্য প্রায় ১২ লাখ টাকার প্রণোদনা দিয়েছেন। এই প্রণোদনা কার্যক্রমের মাধ্যমে কৃষকের জমি এবং সেচের খরচ বাদে ধানের বীজতলা তৈরী থেকে শুরু করে সমুদয় ব্যয় বহন করবে সরকার।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের পাইলট প্রোগ্রামের আওতায় কচুয়া উপজেলার আলীয়ারা ব্লকে ৫০ একর জমিতে সমলয় পদ্ধতিতে হাইব্রিড ধান চাষ করা হচ্ছে। কচুয়া উপজেলা কৃষি পূণর্বাসন বাস্তবায়ন কমিটির মাধ্যমে পাইলট এই স্কীমের কার্যক্রম মনিটরিং করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। এই কার্যক্রম সফল হলে চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলা তথা সারাদেশেই কৃষির সম্ভাবনায় যুক্ত হবে নতুন দিগন্ত।

১৯ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিক ভাবে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার মেশিনে বোরো ধানের আগাম চারা রোপন কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।

এসময় চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মোঃ জালাল উদ্দিন, কচুয়া উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপায়ন দাস শুভ, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সোফায়েল হোসেন, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মো. জাহাঙ্গীর আলম লিটনসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। একই সঙ্গে রাইস ট্রান্সপান্টারে ধানের চারা রোপন কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করতে উপস্থিত হয়েছিলেন বিপুল সংখ্যক সাধারণ মানুষও।

স্থানীয় কৃষক দুলাল হোসেন,মেহেদী হাসান ও আবু হানিফসহ একাধিক কৃষক জানান, বোরো ধান চাষাবাদে আগে কখনো ট্রে-তে ধান চারা উৎপাদন করা হয়নি। স্থানীয় কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতায় এই প্রথমে ট্রেতে বীজ বপন করা হচ্ছে। এতে করে আমাদের চাষাবাদের পূর্বের খরচে চেয়ে বর্তমানে আরো অনেক ব্যয় কম হবে।

কচুয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কৃষিবিদ মো: জাহাঙ্গীর আলম লিটন চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, চাষাবাদের মাধ্যমে ধান ফসলের রোপণ ও কর্তনের সময় উৎপাদন খরচ কমানোর লক্ষ্যে যন্ত্রের ব্যবহার যথার্থ ভাবে বাস্তবায়নের জন্য সমলয় চাষাবাদের বিকল্প নেই। একযোগে কৃষকের ফসল উৎপাদন করা লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে এটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

এছাড়া এ কার্যক্রমে সহজে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষকদের অধিক ফলন ঘরে তোলা সম্ভব। এই অঞ্চলে বোরো আবাদে কৃষকের আগ্রহ আরও বেড়ে যাবে।

প্রতিবেদক:জিসান আহমেদ নান্নু,২৬ জানুয়ারি ২০২১

Share