নিয়মিত খাবার দেয় না। পানির অভাব। ঘুমানোর জায়গা নেই। কপাল খারাপ হলে যা হয়, উট দেখভালের দায়িত্ব আমার ওপর। কোনো কারণে উটের অসুখ-বিসুখ হলে মালিক আমাকে মারধর করে এমনকি দেশে পাঠিয়ে দেয়ার হুঁমকি দেয় বলছিলেন কুয়েতে উটের খামারে কাজ করা বাংলাদেশি মালেক।
মালেকের দেশের বাড়ি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে। পরিবারের দুঃখ ঘোচাতে দুই বছর আগে তিনি পাড়ি জমান মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কুয়েতে। এ প্রতিবেদক মালেকের সঙ্গে আলাপকালে তার কষ্টের কথা তুলে ধরেন। বর্ণনা দেন নিত্যদিনের কাজকর্মের বিষয়ে।
মালেক জানায়, এদেশে এসে কাজ মেলে জাহারা এলাকায় মরুভূমিতে উট ও গাধার খামারে। প্রচণ্ড ঠাণ্ডা আর রোদের ভেতর দেখাশোনা করতে হয় পশুদের। শুধুমাত্র সংসারের কথা চিন্তা করে এত সব কষ্ট সহ্য করছি। ঠিকমতো বেতনও পায় না। তিন বেলা খাবার তো দূরের কথা শুয়ার জায়গা টুকুও পায় না।
বেতন কাঠামোর বিষয়ে জানতে চাইলে মালেক জানায়, তিন মাসে মেলে এক মাসের বেতন। তাও আবার কুয়েতি ৬০ দিনার। অথ্যাৎ বাংলায় ১৬ হাজার টাকা। মরুময় চারদিক। খাবার দোকান হাজার হাজার মাইল দূরে। ফলে অনেক সময় না খেয়ে জীবন-যাপন করতে হয়। আমাদের দেখার মতো এখানে কেউ নেই। মূলত ঠাণ্ডা ও গরমের মধ্যে তাবুতে বসবাস করতে হয়। শীতের মৌসুমে জবুথবু অবস্থা হয় আমাদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উট খামারে কাজ করা এক প্রবাসী জানান, প্রবাস মানেই কষ্ট। প্রবাসীদের কষ্ট দেখার মতো এদেশে কেউ নেই। একটা গাধা বা উটের বাচ্চা মারা গেলে আমাদের মতো যারা বাঙালি তাদের খুব মারধর করে। এছাড়া শাস্তি হিসেবে গাধার সঙ্গেই রাত কাটাতে হয়। বাবা-মা তুলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে মালিক শ্রেণি।
খামারে কাজ করা বাঙালিদের সংখ্যা কেমন আছে জানতে চাইলে মালেক বলেন, কুয়েতে হাজার হাজার উটের খামার আছে। এ সমস্ত খামারে সীমিত টাকায় বাঙালিদের রাখে। মূলত যেসব বাঙালি কাজ না পেয়ে ঘুরে বেড়ায় তাদের খামারে কাজ দেয়া হয়।
মালেক আরও বলেন, আশপাশে অনেক বাংলাদেশি কাজ করে। কারও সঙ্গে খামারিদের মিশতে দেয় না। এমনকি খামার থেকে বের হতেও দেয় না। মানষিকভাবে খুবই কষ্টে আছি। কুয়েত কমিউনিটির নেতাদের কাছে সহযোগিতা কামনা করছি। (জাগো নিউজ)
নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৬:১০ পিএম, ১৮ জানুয়ারি ২০১৮,শুক্রবার
এএস