‘ওয়াসিআ’ কুরসিই্য়্যুহুস সামাওয়াতি ওয়াল আরদা’ অর্থাৎতাঁর কুসরি এত বড় যে, সাত আসমান ও সাত জমিন পরিবেষ্টিত করে রয়েছে।’ আয়াতুল কুরসির অষ্টম অংশে আল্লাহ তাআলা তাঁর কুদরতি আসন ‘কুরসি’র বর্ণনা সুস্পষ্ট ভাষায় ব্যক্ত করেছেন।
মহান আল্লাহ তাআলা ওঠা-বসা আর স্থান কাল থেকে মুক্ত। এ সব আয়াতকে মানুষের কার্যকলাপের সঙ্গে তুলনা করা উচিত নয়। আল্লাহর গুণগানের বিষদ ব্যাখ্যা মানুষের জ্ঞানের পরিসীমার উর্দ্ধে। তবে হাদিসের বর্ণনার দ্বারা এটুকু বুঝা যায় যে, তা সমগ্র আকাশ ও জমিনকে পরিবেষ্টিত করে রেখেছে। (মারেফুল কুরআন)
আল্লাহ তাআলার ‘কুরসি’র বর্ণনা প্রসঙ্গে বিখ্যাত তাফসির গ্রন্থ ইবনে কাছিরে কয়েকটি মতামত উল্লেখ করা হয়েছে-
>> হজরত আবু যার রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, কুরসি কি? এবং কেমন? উত্তরে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যার হাতে আমার প্রাণ; তাঁর কসম, কুরসির সাথে সাত আসমান ও সাত জমিনের তুলনা হলো একটি বিরাট ময়দানে ফেলে দেয়া ছোট্ট একটি আংটির ন্যায়। অন্য এক বর্ণনায় এসেছে আরশের তুলনায় কুরসিও অনুরূপ।’’
>> হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন যে, আকাশসমূহ ও পৃথিবীকে যদি ছড়িয়ে দেয়া হয় এবং সবগুলোকে মিলিয়ে যদি এক করে দেয়া হয়; তবে তা কুরসির তুলনা ঐরূপ, যেরূপ জনশূন্য মরুপ্রান্তরে একটি বৃত্ত।’
>> ইবনে জারির রহমাতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন হজরত উবাই রাদিয়াল্লাহ আনহু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছেন, ‘সাতটি আসমান কুরসির তুলনায় এরূপই যেরূপ ঢালের মধ্যে সাতটি দিরহাম (রোপ্য মুদ্রা)।’
>> হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত আছে যে, এক স্ত্রীলোক রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে উপস্থিত হয়ে বলে আমার জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করুন, তিনি যেন আমাকে জান্নাতে দান করেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তাঁর কুরসি আসমান ও পৃথিবীকে পরিবেষ্টন করে রেখেছে। কিন্তু যেরূপ (মাল বোঝাই করায়) নতুন গদি চড়চড় করে, সেরূপ কুরসি আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্বের ভারে চড়চড় করছে।’
এ হলো মহান আল্লাহ তাআলার কুরসি বর্ণনাসমূহের মধ্য থেকে কয়েকটি। যে মহান আল্লাহর করসি এত বিশাল; সে মহান আল্লাহর গুণাবলীও তার চেয়ে বিশাল।
আলোচ্য আয়াতাংশটিও আয়াতুল কুরসির ১০টি বক্তব্যের অষ্টম বক্তব্য। যা দুনিয়ার মহামণ্ডিত দাবিকারীদের জ্ঞান-গরিমা ও আত্ম-অহমিকা ও দম্ভকে চুড়মার করে দিয়েছে।
সুতরাং হে মুমিন সাবধান! আল্লাহর সঙ্গে নাফরমানি নয়; আসুনন আল্লাহ প্রতিটি গুণের আনুগত্য করি। আল্লাহ তাআলার সব গুণের সঙ্গে সঙ্গে আয়াতুল কুরসিতে ঘোষিত আল্লাহর স্পেশাল ১০টি গুণের ওপর অগাধ আস্থা ও বিশ্বাস স্থাপন করে হাদিসে ঘোষিত ফজিলত ও মর্যাদা লাভে ধন্য হই। দুনিয়া ও পরকালের কল্যাণ লাভ করি।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে আয়াতুল কুরসিতে ঘোষিত গুণগুলোর উপর বিশ্বাস স্থাপন করে শিরকমুক্ত ঈমান লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।
ইসলাম ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১২ : ০০ পিএম, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৭, বৃহস্পতিবার
এইউ