পটুয়াখালীর কুয়াকাটা উপজেলার বঙ্গবন্ধু মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষকে গেস্টহাউস বানিয়ে পর্যটকদের কাছে ভাড়া দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই গেস্টহাউসের নাম দেওয়া হয়েছে ‘কুয়াকাটা বি বি গেস্টহাউস’। দীর্ঘদিন যাবৎ এ বাণিজ্য চললেও উপজেলা প্রশাসন কিংবা শিক্ষা বিভাগের জানা নেই।
এছাড়া, বিদ্যালয়ে ৯ শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। এসব শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিভিন্ন খাত দেখিয়ে প্রতি বছর লাখ লাখ টাকা নেওয়া হলেও এর কোনো সঠিক হিসাব নেই স্কুল পরিচালনা কমিটির কাছে। কীভাবে ব্যয় করা হচ্ছে এসব টাকা তাও কেউ জানেন না।
রোববার (৯ জুলাই) রাতে কুয়াকাটা পৌর ছাত্রলীগের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ কাওছার এক ফেসবুক পোস্টে এসব অভিযোগ করেন।
স্থানীয়রা জানান, গত কয়েক বছর ধরে নিয়মনীতি অনুসরণ না করেই বিদ্যালয়ের দুটি ভবনের একটিকে গেস্টহাউস বানিয়ে নিয়মিত পর্যটকদের কাছে ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। আর পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর কুয়াকাটায় পর্যটকদের উপস্থিতি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাড়াও হচ্ছে নিয়মিত। তবে এ গেস্টহাউসের ভাড়া কোথায় যাচ্ছে কিংবা কোন খাতে ব্যয় করছেন এর সঠিক কোনো হিসাব নেই।
সৈয়দ মোহাম্মদ কাওছার তার ফেসবুক পোস্টে লিখেন, রোববার বিদ্যালয় খোলার পর বিকালে খেলতে গিয়ে দেখলাম কিছু পর্যটক ধূমপান করছেন। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তারা জানায়- আমরা ঘুরতে এসেছি, এখানে গেস্টহাউস ভাড়া নিয়ে থাকছি। স্কুলের একজন কর্মচারী ডেকে এনে ভাড়া দিয়েছেন। তাদের রুমের চাবির রিংয়ে কুয়াকাটা বি বি গেস্টহাউস লেখা আছে। অনেক দিন আগে থেকেই বিদ্যালয়ের ভবনকে কর্তৃপক্ষ আবাসিক হোটেল বানিয়েছে। প্রতিদিন ভাড়া দিচ্ছে।
এ ঘটনায় সোমবার সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাহাঙ্গীর হোসেন সরেজমিনে বিদ্যালয় পরিদর্শনে যান। সেখানে গিয়ে এর সত্যতা পান। তাৎক্ষণিক তিনি বিবি গেস্টহাউসের সাইনবোর্ড খুলে ফেলেন এবং রুমে থাকা খাট, ফার্নিচার অপসারণ করে ওই গেস্টহাউস বন্ধ করে দেন।
কুয়াকাটা বঙ্গবন্ধু মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মো. খলিলুর রহমান বলেন, বিভিন্ন সময় শিক্ষা বিভাগ থেকে অনেক কর্মকর্তারা কুয়াকাটায় আসেন, তাদের জন্য অনেক সময় রুম পাওয়া যায় না। তাই গেস্টহাউস হিসেবে কয়েকটি রুম করা হয়েছে। এগুলো কখনো সাধারণ মানুষের কাছে ভাড়া দেওয়া হয় না। বিদ্যালয়টির মোট চারটি কক্ষকে গেস্টহাউস বানানো হয়েছে। যার দুটি কক্ষের একটিতে গণিত শিক্ষক এবং একটিতে ইংরেজি শিক্ষক নিয়মিত থাকছেন এবং দুটি কক্ষ অতিথিরা আসলে থাকেন।
বিদ্যালয়ের সভাপতি ও কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল বারেক মোল্লা বলেন, স্কুলের শ্রেণিকক্ষকে গেস্টহাউস বানিয়ে ভাড়া দেওয়ার বিষয় কিছুই জানি না।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বিষয়টি জানতে পেরেছি। সোমবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে বিবি গেস্টহাউস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতিকে বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
টাইমস ডেস্ক/ ১১ জুলাই ২০২৩