কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ডাম্পিং স্টেশন

কুমিল্লা করেসপন্ডেন্ট :

কুমিল্লা মহানগরীর পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠায় কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ডাম্পিং স্টেশনটি পরিণত হয়েছে জনদুর্ভোগে।

মাত্র ২ একর জমির উপর গড়ে উঠা ডাম্পিং জোনটিতে স্থান সংকুলানের অভাবে আশেপাশের জনবসতির কাছাকাছি ফেলা হচ্ছে দূষিত বর্জ্য। এতে আশেপাশের পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে।

বজ্যের দূর্গন্ধে পরিবেশ দূষিত হয়ে প্রায় ৪০ গ্রামের লোকজন এবং স্থানীয় অধিবাসীরা ভোগছে রোগব্যাধিসহ নানা সমস্যায়। শুধু পরিবেশের দূষণই নয়, সামাজিক সমস্যায় পরিণত হয়েছে এটি।

স্থানীয়রা জানান, অন্য এলাকার লোকজন তাদের সাথে এখন আত্মীয়তাও করতে চায় না। এছাড়া বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানে খাওয়া-দাওয়ায়ও সমস্যায় পড়তে হয় তদের।

ডাম্পিং জোনের মশা-মাছির উপদ্রব আর অসহনীয় দুর্গন্ধে নগরীর সংরাইশ, ঝাঁকুনিপাড়া, জগন্নাথপুর, খামার কৃষ্ণপুর, দৌলতপুর, জালুয়াপাড়া, সুবর্নপুর ও অরণ্যপুর এলাকায় ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। মশা-মাছির উপদ্রব আর অসহনীয় দুর্গন্ধে শ্বাসকষ্ট, চর্ম, ডায়রিয়াসহ নানা রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েই চলেছে।

দেড়’শ বছরের প্রাচীন পৌরশহর কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে উন্নীত হয়েছে প্রায় পৌণে চার বছর হলো। সেই সাথে পৌর করসহ সব ধরনের ব্যয় বাড়লেও, বাড়েনি নাগরিক সুবিধা। যথাযথ উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি এখানে। নগরীতে এখনও পয়ঃনিস্কাশন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অত্যন্ত বেহাল দশায় হতাশ নাগরিকরা।

বছর দু’য়েক আগে ঢাক-ঢোল বাজিয়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার শোভাযাত্রা আনুষ্ঠানিকতায়ই সীমাবদ্ধ রয়েছে এখন পর্যন্ত।

অচিরেই বিজ্ঞানভিত্তিক বর্জ ব্যবস্থাপনা জরুরি বলে মনে করছেন কুমিল্লা বক্ষব্যাধি ক্লিনিকের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. ইমাম উদ্দিন আহম্মদসহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।

এদিকে আবর্জনা সাইক্লিংয়ে এরই মাঝে জাইকা ও স্থানীয় একটি কোম্পানীর সাথে চুক্তি হয়েছে বলে জানান মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। বছরখানেক আগে সিটি মেয়র এমন আশার বাণী শোনালেও বাস্তবতা এখনও দেখতে পায়নি ভুক্তভোগীরা।

এখনও বর্জ্যরে দুর্গন্ধে এবং বর্জ্য পোড়ানো ধোঁয়ার ফলে প্রায় ৪০টি গ্রামের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।

ফলে ডাম্পিং স্টেশনের দূষিত বর্জ্যরে দুর্গন্ধ ও পরিবেশ দূষণ থেকে রক্ষা পেতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে এর আশেপাশের হাজারো মানুষ।

শুক্রবার দুপুরে কুমিল¬ার সদর উপজেলার ঝাঁকুনিপাড়ায় সমবেত হয়ে এ আন্দোলনে অংশ নেয় এখানকার ক্ষতিগ্রস্তরা।

পরে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট গিয়ে বর্জ্যে লাগানো আগুন নিভিয়ে সাময়িকভাবে লোকজনকে ধোঁয়া থেকে নিবৃত করে।

ডাম্পিং জোনটি দুর্গন্ধ ও দূষণমুক্ত এবং স্বাস্থ্য ঝুঁকি থেকে রক্ষায় দ্রুত স্থায়ী পদক্ষেপ নেয়া হবে, এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।

শুক্রবার ০৫ জুন ২০১৫ :  ০৭:৪৭

চাঁদপুর টাইমস : এমআরআর/২০১৫

চাঁদপুর টাইমস’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Share