Home / সারাদেশ / কুমিল্লা সীমান্তে বিএসএফের বন্দুকের আঘাতে যুবকের অবস্থা আশঙ্কাজনক
কুমিল্লা

কুমিল্লা সীমান্তে বিএসএফের বন্দুকের আঘাতে যুবকের অবস্থা আশঙ্কাজনক

কুমিল্লার বুড়িচং সীমান্তে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর বন্দুকের নলের আঘাতে সফিক (২৯) নামে বাংলাদেশি এক যুবক গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে আশঙ্কাজন অবস্থায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত সফিক সিলেট জেলার বাসিন্দা বলে জানা গেছে।

বৃহস্পিবার (১৩ নভেম্বর) সকালে উপজেলার বাকশীমূল ইউনিয়নের খারেরা সীমান্তের ৭০ নম্বর পিলার সংলগ্ন জিরোপয়েন্ট এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন খারেরা বিজিবি ক্যাম্পের সুবেদার আবু বক্কর সিদ্দিক।

স্থানীয় সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার ভোরে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের ওই এলাকায় ৫-৬ জন নারী-পুরুষ মানবপাচারকারীদের সহায়তায় ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেন। এসময় বিএসএফ সদস্যরা তাদের ধাওয়া দিলে সবাই পালিয়ে আসতে সক্ষম হলেও সফিক ভারতীয় জঙ্গলে লুকিয়ে থাকেন। পরে বিএসএফ সদস্যরা তাকে আটক করে বন্দুকের নল দিয়ে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যাপক আঘাত করেন।

গুরুতর আহত অবস্তায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হলে সকাল ৯টার দিকে স্থানীয় মানবপাচারকারী মারুফ ও তার সহযোগীরা সফিককে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

সূত্রমতে, গত ৫ আগস্টের পর থেকে এই সীমান্ত দিয়ে মানবপাচারকারীরা সক্রিয়ভাবে সাধারণ মানুষ ও আওয়ামীলীগের হেভিওয়েট ব্যক্তিকে ভারতে যেতে সহায়তা করেছে। অভিযোগ রয়েছে, টাকার বিনিময়ে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরাও এই কাজে সম্পৃক্ত। এ এলাকায় সক্রিয় মানবপাচারকারীদের মধ্যে রয়েছেন সোসলেমের ছেলে জামাল হোসেন, মতিন কাজীর ছেলে তৌফিক, মাহবুবের ছেলে আকরাম, ওহাবের ছেলে তুহিন, হোসেনের ছেলে মারুফ হোসেনসহ আরও অনেকে।

বিজিবি সূত্র জানায়, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মানবপাচারসহ বিভিন্ন অপরাধে থানায় ও বিজিবির দপ্তরে একাধিক অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে, এক মাস আগে একই সীমান্তের ৭১ নম্বর পিলার সংলগ্ন এলাকা দিয়ে দুই নারী ভারতে অনুপ্রবেশের সময় মানবপাচারকারীদের নির্যাতনের শিকার হন ও তাদের সাথে থাকা স্বর্ণ ও টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয়দের দাবি, ওই সীমান্ত দিয়ে অবৈধ ভারতীয় পণ্যেরও আসা-যাওয়া চলমান রয়েছে।

বাকশীমূল ইউনিয়নের সেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মো. জামসেদ চৌধুরী বলেন, চিহ্নিত মানবপাচারকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হোক।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মানিক মিয়া বলেন, ঘটনাটি আমরা শুনেছি, এলাকায় সবাই জানে। বিস্তারিত জানার জন্য বিজিবির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।

খারেরা বিজিবি ক্যাম্পের সুবেদার আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, এমন একটি ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। সরেজমিনে যাচাই করে এর সত্যতাও পেয়েছি। মানবপাচারকারীদের আইনের আওতায় আনতে তদন্ত চলছে।

প্রতিবেদক: জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল,
১৩ নভেম্বর ২০২৫