সারাদেশ

কুমিল্লা-নোয়াখালি মহাসড়কে দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল

বছরের পর বছর সংস্কার না করায় দিন দিন যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে কুমিল্লা-নোয়াখালি আঞ্চলিক মহাসড়কটি। বেশিরভাগ স্থান ছোট-বড় গর্তে ভরে গেছে। গর্তের কারণে মাঝেমধ্যেই ঘটছে দুর্ঘটনা এতে করে দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল।

সড়ক বিভাগের এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় ২০১৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ৩ বছরে ১০৫ সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন পথচারীসহ ১০৬ জন যাত্রী। আর এসব দূর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ১৬৭ জন।

খানা-খন্দে পড়ে চরম ভোগান্তিতে চালক ও যাত্রীরা। এ মহাসড়কের অন্তত ১০ জায়গায় সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত ও ভাঙ্গন। বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টির পানি জমে উঠে গেছে সড়কের উপরের স্তর। যে কারনে এসব জায়গায় যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সব মিলিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কে দুর্ভোগ বেড়েছে যাত্রীদের।

কুমিল্লা সড়ক বিভাগের আওয়তায় থাকা ৪৪ কিলোমিটার রাস্তার সাময়িক সংস্কার কাজ শুরু হলেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে মনে করেন এ সড়কে চলাচলকারীরা। গত প্রায় দুই বছর ধরে এ সড়কটির এমন বেহাল দশা চলছে।

পরিবহন সংশ্লিল্ট ও যাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এ মহা সড়কের কুমিল্লা সদর দক্ষিণের জাঙ্গালিয়া কেন্দ্রীয় বাস স্ট্যান্ড এলাকা, পদুয়ার বাজার, বিজয়পুর বাজার, লালমাইয়ের বাগমারা বাজার, হরিশ্চর বাজার, আলীশ্বর বাজার, লাকসাম জংশন, লাকসাম বাইপাস, মনোহরগঞ্জের খিলা বাজার, নাথেরপেটুয়া বাজার, বিপুলাসার বাজার, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী, চৌমুহনী, বেগমগঞ্জ থানা এলাকাসহ বিভিন্ন অংশে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

সামান্য বৃষ্টিতে এসব গর্তে পানি জমে খানা-খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও কোথাও উঠে গেছে সড়কের পিচ, আবার কোথাও ঢেউয়ের মত হয়ে সড়ক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে আছে।

সবচেয়ে খারাপ অবস্থা এ সড়কের বাগমারা বাজার ও লাকসাম জংশনের উত্তরাংশে। অবস্থা নাজুক হওয়ায় নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানো অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে।

কুমিল্লা থেকে নোয়াখালীর মাইজদীগামী উপকূল পরিবহনের বাসের চালক আবুল হোসেন জানান, সড়কটি ভাঙা থাকায় ঘন ঘন গাড়ি বিকল হচ্ছে। মাঝেমধ্যে দায়সারাভাবে কিছু ইট-সুরকি ফেলা হলেও সপ্তাহ না যেতেই সড়ক আগের অবস্থায় ফিরে যায়।

কুমিল্লা জেলা পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি মো. কবির আহমেদ জানান, সড়কের অবস্থা খারাপ হওয়ায় প্রায় সময় বিকল হয়ে যাচ্ছে। এতে একদিকে যানজট লাগছে, অন্যদিকে যাত্রীরাও কষ্ট পাচ্ছে।

সড়ক বিভাগের এক পরিসংখ্যানে দেখাগেছে, এ মহাসড়কটিতে ২০১৫ সালে ৪১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৮ জন নিহত ও ৪৫ জন আহত হয়েছেন। ২০১৬ সালে ২৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ৪০ জন, আহত হয়েছেন ৪৬ জন। ২০১৭ সালে ৩৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ২৮ জন, আহত ৭৬ জন।

কুমিল্লা সড়ক ও জনপথ বিভাগ জানায়, এই সড়কটিতে কিছুদিনের মধ্যে কুমিল্লা থেকে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ পর্যন্ত ফোর লেনের কাজ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর আগে যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

সড়কটির দিকে বিশেষ নজরে রয়েছে বলে জানিয়েছে কুমিল্লা সড়ক ও জনপথ বিভাগে্র উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ রেজা-ই-রাব্বি।

জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল, কুমিল্লা

Share